Print Date & Time : 15 May 2025 Thursday 3:59 am

গুটিতে শুরু রাজশাহীর আম বাণিজ্য

স্টাফ রিপোর্টার:
রাজশাহীতে গুটি জাতের আম দিয়ে শুরু হয়েছে এই মৌসুমের আম বাণিজ্য। এই মৌসুমে অন্তত হাজার কোটি টাকার আম বাণিজ্যের আশা করছেন এই অঞ্চলের চাষি, বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা অনুযায়ী শুক্রবার (১৩ মে) থেকে গুটি জাতের নামের বাজারজাত শুরু হয়েছে।

রাজশাহীর অন্যতম আমের হাট বানেশ্বরে প্রথম দিনে গুটি আমের আমদানি ছিল খুবই কম। যারা আম এনেছেন তারা ভালো দাম পেয়েছেন। শুক্রবার বানেশ্বরে প্রতিমণ গুটি আম বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১৪০০ টাকায়।

বানেশ্বরের আম ব্যবসায়ী সুরুজ আলী জানিয়েছেন, প্রথম দিনে হাটে অল্প-বিস্তর আম উঠেছে। বাইরের ক্রেতারা এখনো আসেননি। তবে স্থানীয় ফড়িয়ারা আম কিনে বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছেন।

প্রথম দিনে প্রতিমণ গুটি আম রকমভেদে এক হাজার থেকে ১৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজারে আমদানি বাড়লে দাম কিছুটা কমবে। তবে আমের হাটে আম নামলেও রাজশাহী নগরীর ফলের দোকানগুলোতে এখনো সেইভাবে দেখা যাচ্ছে না ফলের রাজাকে।

জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা অনুযায়ী, শুক্রবার থেকেই বাজারজাত শুরু হয়েছে গুটি জাতের আমের। সকাল থেকেই এই অঞ্চলের আমচাষি ও বাগান মালিকদের গাছ থেকে আম নামাতে দেখা গেছে। তবে সুমিষ্ট জাতের আমের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও ৭ দিন। আগামী ২০ মে থেকে নামবে গোপালভোগ আম। ২৫ মে থেকে লক্ষণভোগ, লখনা এবং রাণীপছন্দ নামবে। হিমসাগর ও ক্ষিরসাপাত নামবে ২৮ মে থেকে।

এ ছাড়া আগামী ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে আম্রপালি ও ফজলি, ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা ও বারি আম-৪, ১৫ জুলাই থেকে গৌরমতি এবং ২০ আগস্ট থেকে ইলামতি জাতের নাম নামানো হবে।

রাজশাহী জেলা কৃষি দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহীতে চলতি মৌসুমে ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৭৬ টন। সেই হিসাবে চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে ৯০০ কোটি টাকার বেশি আম বেচাকেনা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন।

তিনি বলেন, বিষমুক্ত ও নিরাপদ আম নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যদি বেঁধে দেওয়া সময়ের আগে আম পেকে যায় তবে স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও নামানো যাবে। কিন্তু অপরিপক্ক আম নামানোর সুযোগ নেই। কেউ অপরিপক্ক আমে কেমিক্যাল মিশিয়ে বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শরিফুল হক জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্টদের নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, পরিবহন এবং ভোক্তা পর্যায়ে বিপণনে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আমবাগান থেকে শুরু করে বাজার পর্যন্ত পুরোটাই নজরদারিতে রাখবে জেলা প্রশাসন। প্রত্যেক উপজেলায় আলাদা কমিটি করে বিষয়গুলো দেখভাল করা হবে। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমও চলবে।



দৈনিক দেশতথ্য//এল//