মোঃ খায়রুল ইসলাম, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতাঃ ভোর থেকেই টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানার সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো লালমাটি ভরা বড় ট্রাক। বেলা বাড়লে খোঁজ নিয়ে জানা যায় টিলা কাটা, বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং গাড়ির কাগজপত্র ঠিক না থাকায় রাতের বিভিন্ন সময় আটটি ট্রাক আটক করেছে পুলিশ।
এ ঘটনা গত দুই দিন আগের। এভাবে উপজেলার টিলার মাটি ভেকু ( মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে কেটে ট্রাকে করে ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। মাঝে মধ্যে পাহাড় কাটা রোধে প্রশাসন কিছু ব্যবস্থা নিলেও থামছে না ভেকু থাবা। মাটি খেকোদের ভেকুর (মাটি কাটার যন্ত্র) থাবায় প্রতিনিয়ত ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে লাল মাটির পাহাড়।
উপজেলার আয়তনের প্রায় অর্ধেকই পাহাড়ী অঞ্চল। প্রতিবছরই মাটি খেকোরা প্রকাশ্যে পাহাড়ের টিলা কেটে ধ্বংস করলেও পাহাড় কাটার সাথে জড়িত প্রভাবশালীরা থাকেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। স্থানীয়দের দাবী এ কাজগুলো হয় প্রভাবশালী অঙ্গুলী হেলনেই। পাহাড়ে বছরের পর বছর এ ধ্বংস করার কারনে বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ, নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র। অপরদিকে গ্রামীণ সড়কে মাটিভর্তি ভারী যান চলাচলের ফলে ভেঙ্গে যাচ্ছে সড়ক। দুর্ভোগে পড়ছে সাধারণ মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নলমা, ছনখোলা, গারোবাজার, কাজলা, সাগরদিঘী টেপুকুশারিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে।
পাহাড়ের লাল মাটি ও ফসলি জমির মাটি পরিবহনের দায়ে গত বৃহস্পতিবার পরিবেশ অধিদপ্তর টাঙ্গাইল ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘাটাইল কলেজ মোড় এলাকা থেকে মাটি ভর্তি ১০ চাকার ৮টি ড্রাম ট্রাক জব্ধ করে। পরে মাটি ভর্তি ট্রাকগুলো থানায় নিয়ে যায়। আটক করা ট্রাকের এক চালক সোলায়মান হোসেনের (২৮) জানান, মালিক গাড়ি চালাতে বলেন তাই চালাই। লালমাটি কাটা অপরাধ কিনা তা জানি না।
ট্রাক আটকের বিষয়ে ঘাটাইল থানার ওসি আজহারুল ইসলাম সরকার বলেন, প্রকাশ্য খোলামেলাভাবেই চলছে পাহাড়ের লালমাটি কাটা। মাটিভরে গাড়িগুলোও চলে বেপরোয়া। গাড়ির নেই কাগজপত্র ঠিক। বিভিন্ন অভিযোগে রাতভর উপজেলার পাহাড়ী এলাকা ও টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে ট্রাকগুলো আটক করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুনিয়া চৌধুরী জানান, মাটি কাটার অভিযোগ পেলে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে এটা বন্ধে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ/