মোঃ খায়রুল ইসলাম, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতাঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পৌরসভা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ই্উনিয়নের ফসলি মাঠ-ঘাট ছেয়ে গেছে সরিষার হলুদ ফুলে। দূর থেকে ভেসে আসছে হলুদ ফুলের মৌ মৌ গন্ধ। ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়াচ্ছে মৌ মাছির দল। তাদের পাখা ঝাপটানোর শব্দে মুখরিত সরিষা ফুলের মাঠ। মৌ মাছির গুন গুন শব্দ ছাড়া সম্পূর্ণ মাঠ নিরব। মাঝে মাঝে দূর থেকে ভেসে আসছে কৃষকের হাঁক ডাক। যতদূর চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। মুহূর্তেই হারিয়ে যেতে ইচ্ছে হবে অজানা এক দিগন্তের। ভোরের মিষ্টি রোদে ঝলমল করা সরিষা ফুলের সৌন্দর্য এখন বাতাসে দোল খাচ্ছে ঘাটাইলের ফসলি মাঠে।
উপজেলার যে কোনো এলাকায় প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে সোনাঝরা ফুলের সীমাহীন বাগান। আঁকাবাঁকা মেঠো পথ- দু’পাশে দিগন্ত হারানো হলুদের সমারোহ। গাড় হলুদে সোনালি রোদ মিলেমিশে এক অনিন্দ্য সৌন্দর্য। শুধু সৌন্দর্য নয় পাশাপাশি প্রান্তিক কৃষকদের অর্থনৈতিক মুক্তিও ঘটবে এই সরিষা থেকে।কেননা বর্তমানে বৈশ্বিক কারনে ভোজ্য তেলের দাম সাধারন মানুষের নাগালের বাইওে থাকার দরুন সবাই সরিষা চাষে মনোযোগ দিয়েছে। জানা গেছে, সরিষা চাষে খরচ অনেক কম কিন্তু লাভটা বেশি হওয়ায় অনেকেই সরিষা চাষে আগ্রহী।
এ মৌসুমে অনেক কৃষক সরিষা শাক ব্যবসায় উৎপাদন করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে। সরিষার ক্ষেত হলুদ ফুলে যেন দিক দিগন্ত রাঙিয়ে দিয়েছে। হলুদ হাসিতে একাকার ভরে গেছে মাঠ। প্রতিবছর সরিষার ফলন ভাল হওয়ায় বাড়ছে সরিষার চাষাবাদ। তাই চলতি মৌসুমে পাল্টে গেছে উপজেলার দিগন্ত জোড়ো মাঠের চিত্র। প্রকৃতি যেন নতুন রূপে হলদে শাড়ি পরা তরুনীর সাজে সজ্জিত হয়ে আছে। মাঠের পর মাঠ শুধু সর্ষে ফুলের হলুদ হাসিতে রাঙিয়ে দিয়েছে এ উপজেলার বাস্তব চিত্র।ঘাটাইলের পৌরসভা,দিগলকান্দি ইউনিয়ন,জামুরিয়া ইউনিয়ন, ২নং ঘাটাইল ইউনিয়ন বেশী সরিষা চাষ হেেয় থাকে ।তবে কমবেশী ঘাটাইল উপজেলা ও সর্বত্রই সরিষা আবাদ হয়ে থাকে।
সরেজমিনে উপজেলার জামুরিয়া ইউনিয়নের কৃষক হাবিব মিয়ার সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথেই তারা সরিষার বীজ বুনে থাকে। কম সময়ে এ ফসল কৃষক ঘরে তুলতে পারে দ্রত। সরিষাসহ বিভিন্ন কৃষি পণ্যের ক্ষেত্রে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত থাকলে এখানকার কৃষকরা আরো বেশি উপকৃত হতো।
উপজেলার রতন বরিষ গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম জানান, এবার চার বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। প্রাকৃতিক দুযোর্গ না হলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন। এতে খরচ বাদে প্রতি বিঘায় ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা আয় হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার দিলশাদ জাহান বলেন, উপজেলায় ২ হাজার ২ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। কম খরচে অধিক মুনাফা হওয়ায় প্রতি বছরই সরিষা চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর আমাদের ৫৫৭ হেক্টর জমিতে আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে । সরকারী ভাবে ও বিভিন্ন প্রকল্পের সহায়তায় উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষার আবাদ ভবিষ্যতে আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সিএনএসডটকম//এসএল//

Discussion about this post