মোঃ খায়রুল ইসলাম, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: ঘাটাইলে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে বোর ধানখেত।
এই ব্লাস্ট রোগ মহামারি আকার ধারণ করেছে সারাদেশে। বিশেষ করে বিআর-২৮ জাতের ধানে এ রোগের প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এই রোগে অনেক ধানখেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে ২১৪৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। উপজেলার ধলাপাড়া, রসুলপুর, গারোবাজার, সাগরদিঘী, রতন বরিষ, দেউলাবাড়ী এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু নেক ব্লাস্ট রোগ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ায় কৃষকের মুখের হাসি ম্লান হয়ে যাচ্ছে। বড়চালা গ্রামের আফসার আলী জানায়, আমি বিআর ২৮ রোপন করেছি কিন্তু নেক ব্লাস্টার রোগে সব ধান চিটা হয়ে গেছে। প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে সাড়ে তিন বিঘা জমিতে বোরো ধান করেছি। ধান গাছ ভালো হয়েছিল কিন্তু হঠাৎ ব্লাস্ট রোগ লাগায় আমার ২ বিঘা জমির ধান একদম নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি এক বিঘার অবস্থাও খুব একটা ভালো না। এখন খরচের টাকা তোলা নিয়ে খুব চিন্তায় আছি।’ শুক্রবার নিজ বোরোধান খেতে দাঁড়িয়ে এভাবেই মানবকণ্ঠ প্রতিনিধির সঙ্গে ক্ষোভের কথা বলছিলেন ঘাটাইল উপজেলার মুসুল্লিপাড়া গ্রামের কৃষক আ. মজিদ মিয়া।
এ সময় কৃষক মজিদ মিয়া আরও বলেন, ধানে প্রথমবার সার দেওয়ার ২৫ দিন পর থেকে পাতা ফ্যাকাশে হতে শুরু করে। এ সময় আমি বুঝে উঠতে না পেরে শুধু বিষ প্রয়োগ করি। তাতে কোনো কাজ না হওয়ায় অফিসের লোকের সহযোগিতা না পাওয়ায় খেত দেখাতে কোম্পানির লোক ডেকে আনি। কোম্পানির লোক এলে জানতে পারি ধানে ব্লাস্ট রোগ লেগেছে। শুধু মজিদ মিয়া নন ওই গ্রামের কৃষক সঙ্কর চন্দ্র জানান, এ বছর প্রথম বোরো ধান রোপণ করি। পূর্বের কোনো অভিজ্ঞতা না থাকায় ব্লাস্টের আক্রমণে আমার অধিকাংশ ধানখেত নষ্ট হয়ে গেছে। এরকম অবস্থা ঘাটাইলের অধিকাংশ কৃষকের। এ অবস্থায় বোরো রোপণের খরচ তোলা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন চাষিরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান বলেন, এবছর বোরো ধানের উৎপাদন অনেক ভালো হয়েছে। তবে কিছু কৃষকের ধান অনাবৃষ্টির কারণে নষ্ট হয়েছে। তাছাড়া পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়া বিআর ২৮ জাতের ধান কৃষকদের না করার পরামর্শও দিয়েছি। এর পরিবর্তে বিআর ৭৪, ৮৮, ৫৮,৯২ বা বিআর ৮৯ জাতের ধান রোপনের পরামর্শ দিয়েছি।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//

Discussion about this post