রুকুনুজ্জামান পার্বতীপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির টেন্ডারকৃত সেনাকল্যাণ সংস্থার স্ক্র্যাপবাহি ট্রাক আটকে চাঁদাবাজির সময় সেনা ও যৌথ বাহিনীর হাতে এনসিপি নেতা তারিকুল ইসলাম আটক হয়।
জানা গেছে, কিছুদিন আগে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির পরিত্যক্ত মালামাল (স্ক্র্যাপ) টেন্ডারের মাধ্যমে সংগ্রহ করে সেনাবাহিনীর প্রতিষ্ঠান সেনা কল্যাণ সংস্থা। ২৯ মে/২৫ ইং বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর টেন্ডারপ্রাপ্ত মালভর্তি (স্ক্র্যাপ) দুটি ট্রাক বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। রাত পৌনে ৭টার দিকে ট্রাক দুটি কয়লাখনি-মধ্যপাড়া সড়কের রসুলপুর এলাকায় পৌঁছালে তারিকুলসহ তার অনুসারী ৫০ থেকে ৬০ জন ট্রাক দুটির গতি পথরোধ করে অনুসারীরা চাঁদা দাবী করে। খবর পেয়ে পার্বতীপুরে দায়িত্বরত সেনা ক্যাম্পের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তারিকুলকে আটক করতে সক্ষম হন। তবে তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।
সেনাকল্যাণ সংস্থার প্রতিনিধি ও লেবার ফোরম্যান মো. আরিফুল ইসলম জানান, সেনাকল্যাণ সংস্থা টেন্ডারের মাধ্যমে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কিছু স্ক্র্যাপ মালামাল ক্রয় করে। গোপনে জানতে পারি স্ক্র্যাপ ভর্তি ট্রাকগুলো রাস্তায় আটক হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই বিষয়টি আমি ঘটনার পূর্বেই সেনাকল্যাণ সংস্থাকে জানিয়ে রাখি। যাত্রাপথে সেনাকল্যাণ সংস্থার লোগো লাগানো ট্রাকগুলো রাস্তায় আটকে চাঁদা দাবি করে ৫০-৬০ জনের একটি দল। বৈধ মালামালে চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তারা ট্রাক চালকদের জিম্মি করে অন্য রাস্তায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সেনাবাহিনী ও র্যাব ঘটনাস্থলে পৌঁছে ট্রাক উদ্ধারসহ তারিকুল ইসলামকে আটক করে।
এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ভবানীপুর এলাকার সুরুজ আহম্মেদ বলেন, কয়লা খনি থেকে অবৈধভাবে স্ক্র্যাপ বাইরে যাচ্ছে তথ্যে আমরা ছাত্র-জনতা ও সমন্বয়করা ট্রাক দুটি আটক করি। এতে পতিত সরকারের কিছু লোকজন আমাদের ধাওয়া দেয়। পরে আমরা উপজেলা সংগঠক তারিকুল ইসলামকে ডেকে আনি। সেনাবাহিনী আমাদের কথা না শুনে সংগঠক তারিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। তাকে মুক্তি না দিলে আমরা আন্দোলনের ডাক দিব।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন) মো. জাফর সাদিক বলেন, বৈধ টেন্ডার ছাড়া কোনো ধরনের স্ক্র্যাপ মালামাল খনি থেকে বের হওয়ার সুযোগ নেই। টেন্ডারের মাধ্যমেই সেনাকল্যাণ সংস্থা স্ক্র্যাপ মালামাল কিনেছে, যা খনি সংশ্লিষ্ট প্রতিটি দপ্তর অবগত আছে।
বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে দায়িত্বে থাকা সেনা কল্যাণ সংস্থার প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৬জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০ জনকে আসামি করে ৩৪১/৩৮৪/৩৮৫/১০৯/৩৪,ধারায় পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, মামলা নং- ১৯ তাং ৩০/০৫/২০২৫ ইং।আটককৃত তারিকুলকে আসামি করে দিনাজপুর জেল হাজতে প্ররন।
আটককৃত ব্যক্তি জাতীয় নাগরিক পাটি এনসিপি’র পরিচয় দানকারী পার্বতীপুরের আঞ্চলিক নাগরিক কমিটির মুখ্য-সংগঠক শিক্ষানবিশ আইনজীবী, মোঃ তারিকুল ইসলাম (৩৯), পিতা-মৃত মাহমুদুল সরকার,পশ্চিম রাজাবাসর পার্বতীপুর, জেলা-দিনাজপুর এর স্থায়ী বাসিন্দা।
পার্বতীপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Discussion about this post