হাটহাজারীতে মো. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান (৬২) নামের এক সাবেক চেয়ারম্যানকে হামিদুল্লাহ(৫১)নামের আরব আমিরাত ফেরত প্রবাসী ভাতিজাকে গুলি করার দায়ে আটক করেছে মডেল থানা পুলিশ।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হাটহাজারী উপজেলার দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বকুলতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার হওয়া হাবিবুর রহমান উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বকুলতলা এলাকা মৃত দুলা মিয়ার পুত্র। তিনি একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।
চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানকে গ্রেফতারের বিষয়টি সোমবার বিকালে হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমীন সবুজ নিশ্চিত করে জানান, আটকের সময় মডেল থানা পুলিশ চেয়ারম্যানের কাছ থেকে একটি একনলা বন্দুক ও একটি পিস্তলসহ তিন রাউন্ড তাজা কার্তুজ এবং ছয় রাউন্ড কার্তুজের খোসা উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় আটককৃতের বিরুদ্ধে হাটহাজারী মডেল থানায় পৃথক ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ভাতিজাকে গুলি করার অভিযোগ উঠে। রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে ইউনিয়নের মধ্যম মাদার্শা বকুলতলা এলাকায় এ ঘটনার পর রাত পৌনে ১১টা পর্যন্ত হাবিবুর রহমান বাড়ির দোতলা থেকে থেমে থেমে তার লাইসেন্স করা অস্ত্র দিয়ে ৭-৮টি গুলি ছুড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হন তারই আপন ভাতিজা হামিদুল্লাহ জসিম।
পরে স্থানীয়রা গুলিবিদ্ধ হামিদুল্লাহকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে গুলিবিদ্ধ জসিম চমেক হাসপাতালের ওরাল অ্যান্ড ম্যাক্সিলোফেসিলায় সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে গুলিবিদ্ধ হামিদুল্লাহর পরিবার জানায়, এখনো গুলিবিদ্ধ হামিদুল্লাহর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঘটনার পর পর খবর পেয়ে হাটহাজারী থানার ওসি ও মদুনাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তবে ওই সময় পুলিশও ওই বাড়ির কাছে ঘেঁষতে পারেনি। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি আঁচ করতে পেরে ফের নিজের দোতলা বসতঘর থেকে চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান একের পর এক গুলি ছুড়তে থাকেন। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।পরে গুলির করার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর অভিযুক্ত চাচা সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানকে সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মডেল থানা পুলিশ আটক করেন।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হামিদুল্লাহর ছোট ভাই সাহেদ হোসেন বাদী হয়ে হাটহাজারী মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলার বাদী সাহেদ হোসেন জানান, সমাজের একটি মসজিদ নিয়ে প্রতিপক্ষের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলে আসছিল। এতে আমার আপন চাচা এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান তাদের পক্ষ নিয়ে আমাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছিল। এ বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে সমাজের বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষ নিয়ে রোববার সন্ধ্যার দিকে তার বাসায় গেলে তিনি তার ঘরে রক্ষিত অস্ত্র নিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে। এতে আমার বড়ভাই হামিদুল্লাহ জসিম গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুত্বর আহত হন।
জানতে চাইলে হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমীন সবুজ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য// অক্টোবর ২৪,২০২২//

Discussion about this post