শেখ দীন মাহমুদ,খুলনা প্রতিনিধি: আজ শুক্রবারও (৩ মার্চ) কর্মবিরতি পালন করছেন চিকিৎসকরা। ফলে নগরীর বিভিন্ন ক্লিনিক ও ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখার জন্য চিকিৎসকদের নেওয়া সাক্ষাৎ (অ্যাপয়েনমেন্ট) বাতিল করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার (১ মার্চ) ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ফলে জেলার সকল সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। ফলে প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীরা
চিকিৎসা না পেরে ক্ষুব্ধ হয়েই ফিরছেন বাড়িতে। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীরাও বঞ্চিত হচ্ছেন প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা থেকে।
এদিকে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনা করতে আজ শুক্রবার খুলনা এসেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। দুপুর ২টায় বিএমএ ভবনে চিকিৎসক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তারা। সেখানে বিএমএ, ক্লিনিক মালিকসহ চিকিৎসক সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠনের প্রতিনিধিরা
উপস্থিত থাকবেন।
বিএমএ সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল খুলনায় আসছে। দুপুর ২টায় তারা আমাদের সঙ্গে বসবে। এরপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানাযায়, শুক্রবার ঢাকার বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা খুলনার বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগী দেখেন। বৃহস্পতিবার রাতে কর্মবিরতিতে একাত্মতা পোষণ করে তারাও তাদের পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েনমেন্ট বাতিল করেছেন। এছাড়া বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি প্রত্যাহার হবে এমন ধারণা থেকে অনেক
চিকিৎসক শুক্রবার ব্যক্তিগত চেম্বারের রোগীদের সিরিয়াল নিয়েছিলেন। তবে সেগুলোও বাতিল করা হয়েছে।
জানাযায় , প্রতি শুক্রবার নগরীর ডক্টরস পয়েন্ট হাসপাতালে রোগী দেখেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ আবদুল্লাহ মামুন। নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ হিসেবে খ্যাতি রয়েছে তার। কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই রোগীরা তার অ্যাপয়েনমেন্ট নেন। বৃহস্পতিবার রাতে তিনিও সকল অ্যাপয়েনমেন্ট বাতিল করেছেন।
একইভাবে খ্যাতনামা স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রুহুল কুদ্দুসসহ আরও অনেকেই শুক্রবারের অ্যাপয়েনমেন্ট বাতিল করেছেন। প্রতি শুক্রবার তাদের পরামর্শ নিতে শতাধিক রোগী আবেদন করেন।
চিকিৎসকরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো.
জিল্লুর রহমান চৌধুরী বিএমএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তিনি রোগীদের
দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের নির্দেশনা দেন।
এছাড়া বিএমএ’র কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন খুলনা বিএমএ নেতাদেরকে কল করে একই নির্দেশনা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) বেলা ১১টায় শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল চত্বরে যেবিক্ষোভ সমাবেশ করার কর্মসূচি ছিল তা বাতিল করা হয়। পরে বেলা ১১টায় খুলনা বিএমএ কার্যালয়ে জরুরি সভা করেন চিকিৎসকরা।তবে ঊর্ধ্বতনদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারে নির্দেশ থাকলেও প্রায় ৪ ঘণ্টার
সভায় কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
জরুরি সভা শেষে খুলনার বিএমএ সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম জানিয়েছিলেন,
খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের ডা. নিশাত আব্দুল্লাহর
ওপর হামলাকারী পুলিশের এএসআই নাঈমকে গ্রেপ্তার এবং দুই চিকিৎসকের
বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসকদের কর্মবিরতি
অব্যাহত থাকবে।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//

Discussion about this post