সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও মহামারী আকারে ডেঙ্গু–চিকুনগুনিয়ার দাপট বেড়েই চলেছে। এডিস মশার কামড় থেকে এ রোগের বিস্তার বলে বিশেজ্ঞরা বলছেন।
প্রতিদিন গণমাধ্যমে ডেঙ্গু ও চিকগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংবাদ বাড়ছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে চট্টগ্রামে এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব বিগত এক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে, আর এর কারণে ডেঙ্গুর চেয়েও চিকুনগুনিয়া ঘরে ঘরে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। তাই মশক নিধনে কার্যকর ও সমন্বিত উদ্যোগে চট্টগ্রামে ভেঙেপড়া জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার দাবি জানিয়েছেন দেশের ক্রেতা ভোক্তাদের জাতীয় প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ক্যাব) চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, মশক নিধন কার্যক্রম ও ময়লা আবর্জনা পরিস্কারে সিটি করপোরেশন সেভাবে পরিবর্তন দেখাতে পারে নি। আগের মতোই ঢিলেডালা ভাবে এসমস্ত কার্যক্রম পরিচালিত হবার কারণে নগরবাসীকে আজকে ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়ার মতো কঠিন রোগে আক্রান্ত হতে হচ্ছে। মেয়র ডাঃ শাহাদত হোসেন দায়িত্ব নেবার পর পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে গতি আনার চেষ্টা করা হলেও সে গতি পায়নি। অধিকন্তু সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বরতারা মেয়রের সে উদ্যোগকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমকে আগের জায়গায় নিয়ে গেছে। যার ফলে ক্লিন ও গ্রিন সিটির শ্লোগান কার্যত বিলবোর্ডে থেকে গেছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) এর গবেষণায় জানা গেছে ২০২৪ সালে চট্টগ্রামে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব (ব্রুটো ইনডেক্স) ছিল ৩৬ শতাংশ, যা এবার ৭৫ দশমিক ২৯ শতাংশে পৌঁছেছে । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান যেখানে ২০ শতাংশ থাকার কথা সেখানে চট্টগ্রামের এ চিত্র রীতিমতো ভয়াবহ। বাসাবাড়িতেও লার্ভার উপস্থিতি গত বছর ৩৭ শতাংশ পাওয়া গেলেও এবার তা প্রায় ৪৮ শতাংশে পৌঁছেছে। যা খুবই উদ্বেগজনক।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার কোনো বিকল্প নেই। আর এ কাজটি পুরোটাই সিটি করপোরেশনের। নগরীর নালা-নর্দমা, খাল ও বাসাবাড়ির নানা জায়গায় জমে থাকা স্বচ্ছ পানিও এডিস মশার প্রজননের উৎস স্থল ধ্বংস করার বিকল্প নাই। অথচ নালা-নর্দমা থেকে ময়লাগুলে তুলে রাস্তায় রাখার দীর্ঘদিনের চর্চাটি অব্যাহত থাকায় নালার ময়লা পুনরায় নালাতেই যাচ্ছে। আর বিপুল পরিমান পরিচ্ছন্ন কর্মীর অস্থিত্বও পুরোপুরি দৃশ্যমান নয়। চট্টগ্রাম শহরকে মশাবাহিত রোগের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে হলে নগর কর্তৃপক্ষকে স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ নগরবাসীকে সম্পৃক্ত করে জরুরি ক্রাস প্রোগ্রামে ঝাপিয়ে পড়তে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারি পর্যায়ে চট্টগ্রামে চিকুনগুনিয়া পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় বেসরকারী ক্লিনিক ও ল্যাবগুলিও এসুযোগে মানুষের পকেট কাটার জন্য উৎপেতে আছে। করোনাকালীন সময়ে বা যে কোন মহামারীতে ল্যাব টেস্ট, ওষুধ এমনকি ডাব নিয়েও কৃত্রিম সংকট তৈরী করে মানুষের পকেট কাটার উৎসব বন্ধে প্রশাসনের কার্যত কোন উদ্যোগ দৃশ্যমান হয়নি। যা খুবই হতাশাজনক ও অমানবিক। তাই এ পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে সরকারকে স্বাস্থ্য খাতে নজরদারি বাড়ানো, দ্রুত বিনামূল্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানান।
৩১ জুলাই ২০২৫ইং গণমাধ্যমে প্রেরিত বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক মোঃ সেলিম জাহাঙ্গীর, দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, যুব ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমান, পলিসি ইনফ্লেুয়েন্স গ্রুপ চট্টগ্রামের সভাপতি কলামিস্ট মুসা খান, সদস্য সচিব আবু মোশারফ রাসেল, ও যুগ্ন সদস্য সচিব সাঈদুর রহমান মিন্টু প্রমুখ। – সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

Discussion about this post