Print Date & Time : 10 May 2025 Saturday 11:29 pm

ছয় তরুনের মোমবাতির আগুনে জ্বলছে শ্রিলঙ্কা

বিদ্যুৎ সরবরাহ ফেল করাই ছিল বিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারন

ছোট্ট একটা আলপিন, একটা মশা, এক ফুলকি আগুন, দিয়শলাইয়ের একটি কাঠি কত বড় সর্বনাশ ঘটাতে পারে তা না বুঝলে কাউকেও বুঝানো যাবে না। সবাই শ্রিলঙ্কার দেউলিয়াত্ব নিয়ে প্রতিদিন কত কি যে বলছে তার নেই কোন হিসাব। কে বা কারা কি কারনে শ্রীলঙ্কায় বিদ্রোহের আগুন প্রথম জ্বেলেছে তা অনেকেই জানেন না।

এই আগুন প্রথম জ্বেলেছেন শ্রীলঙ্কার ছয় তরুণ। তারা কোন রাজনৈতিক দলের সমর্থক বা কর্মীও নন। তারা ছিলেন নিছক তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। কেন এবং কিভাবে শ্রীলঙ্কার দুই ভাই ক্ষমতা হারিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হলেন তা জানবেন দৈনিক দেশতথ্যের এই প্রতিবেদনে।

জ্বলছে গোটা শ্রিলঙ্কা। এই জ্বলন কবে কিভাবে শেষ হবে তা জানতে হলে সময়ের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। এই আগুন বড়ই সর্বনেশে। আরব বিশ্বে প্রথম বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়েছিলেন তিউনিসিয়ার সামান্য একজন ফল বিক্রেতা। তার নাম মহম্মদ বোয়াজিজি। এই মুহাম্মদ রোয়াজিজির নাম এখন নাম শ্রীলঙ্কার বিদ্রোহীদের মুখে মুখে উচ্চারিত হচ্ছে।

বলছি শ্রীলঙ্কা নিয়ে এর মধ্যে রোয়াজিজিই বা আসছে কেন, আবার আরব বসন্তের কথাই বা শুনবো কেন? এ প্রশ্ন অপ্রাসঙ্গিক নিশ্চয়ই নয়। কারন শ্রীলঙ্কার প্রতিবাদীদের প্রেরণা এসেছে আরব বসন্তের জনক মুহাম্মদ রোয়াজিজির অনুপ্রেরণা থেকে। তাই আরব বসন্ত ও রোয়াজিজি কোন ভাবেই অপ্রাসঙ্গিক নয়। তাই শ্রীলঙ্কা নিয়ে আলোচনার আগে আরব বসন্ত নিয়ে একটু আলোকপাত করছি।

আরব বিশ্বের তিউনিশিয়ায় তখন চলছিল চরম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার রাজত্ব। এর কষাঘাতে জনজীবনে জেঁকে বসে দারিদ্রতা। দ্রব্য মূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। সেই সময়ে মুহাম্মদ রোয়াজিজি তিউনিসিয়ার একটি প্রদেশের রাজধানীর রাস্তায় ফল বিক্রি করতেন। তাকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে বেধড়কভাবে পিটিয়েছিল কোন একজন অখ্যাত পুলিশ। এর প্রতিবাদে ২০১০-এর ১৮ ডিসেম্বর তিনি তিউনিসিয়ার গভর্নরের বাংলোর সামনে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।

বোয়াজিজির সেই প্রতিবাদে গর্জ ওঠে তিউনিসিয়ার মানুষ। তারা ওই অন্যায়ের প্রতিবাদে শামিল হয়। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে সেই প্রতিবাদ বিদ্রোহ আকারে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটে যায় ক্ষমতার পালা বদল। এরপর সেই বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে আলজেরিয়া, জর্ডান, মিশর, ইয়েমেন সহ গোট আরব বিশ্বে। আমেরিকানরা এর নাম দেয় ‘আরব বসন্ত’।

সেই বিপ্লবের অনুকরণ ঘটিয়েছেন শ্রীলঙ্কার ছয় তরুণ। এই ছয় তরুন পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যেত। দিনে ১০-১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকাটাই নিয়মে পরিনত হয়। এতে তাদের কাজ দারুনভাবে বিঘ্নিত হচ্ছিল। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অহিংস প্রতিবাদ হিসেবে চলতি  বছরের ১লা মার্চের এক সন্ধ্যায় শ্রীলঙ্কার কোহুওয়ালা শহরে তাদের বাড়ির সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়েন।

১ মার্চের সেই প্রতিবাদের প্রধান ছিলেন আঠাশ বছর বয়সী করুণা রত্নে। তিনি এই বিষয়টি  ‘প্রথমে ফেসবুকে পোস্ট করেন। তারপর তিনি আরেকটি পোস্টে বলেন ঘন্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকার প্রতিবাদ করবো। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বহু মানুষ সাড়া দিয়ে বলেন তারাও ওই প্রতিবাদে অংশ নিবেন।

এরপর ‘ঠিক হয় পরের দিন কলম্বোর বিহার মহাদেবী পার্কে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হবে। তাদের ধারনা ছিল ওই সমাবেশে বড়জোর জনা পঞ্চাশ লোক আসতে পারেন। কিন্তু না তাদের ডাকে সেদিন ওই পার্কে হাজির হযেছিলেন চার শতাধিক লোক।

এই খবর ফেসবুক ছাড়া কোন গণমাধ্যম ভয়ে কাভার করেনি। তখন শ্রীলঙ্কার দমন নীতি নীতি এমন যে, সরকারের বিরুদ্ধে কোন খবর প্রকাশ করলেই হতো জেল জুলুম। আর সাংবাদিকদের বড় একটি অংশ কর্তব্য ভূলে গিয়ে নিজের আখের গোছাতে তেলের ব্যারেল নিয়ে আতলামীতে থাকতেন ব্যাস্ত।  

এরপর আর এই ইস্যুতে লোকের অভাব হয়নি। বিরোধী রাজনীতিক ছাত্র সাংবাদিক ক্রিকেটার সহ নানা শ্রেণী ও পেশার লোক আন্দোলনে সামিল হয়েছে।  

সেই যাই হোকনা কেন, শ্রীলঙ্কার সরকারের ধারণা ছিল ছোট ভাই রাষ্ট্রপতি বড় ভাই প্রধান মন্ত্রী। অন্যান্য ভাই ও সন্তানেরা সরকারের মন্ত্রীসহ নানা পদে আসীন। বিরোধী দল নেই বললেই চলে। সেনা বাহিনীও তাদের নিয়ন্ত্রণে। সুতরাং ক্ষমতার মসনদ তাদের পৈত্রিক। তাই তাদের লোকাল প্রশাসনিক ইউনিট ওই সমাবেশে কোন বাঁধা দেয়নি।

এই সুযোগে করুণা রত্নের নেতৃত্বে আরেকদিন একটি বিক্ষোভ মিছিল আহবান করা হয়। নেলাম পকুনা শহর থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলের দৈর্ঘ সমাবেশের চেয়ে বেশি জনসমর্থন পায়। পরদিন মিরিহানা নামের অন্য একটি শহরে বিক্ষোভ-সমাবেশের ডাক দেয় সেখানকার স্থানীয়রা। এরপর বাড়তে থাকে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিলের দৈর্ঘ।

মাত্র চার মাসের মাথায় এসে অহিংস আন্দোলন দাবানলের মতো এমন করে ছড়িয়ে পড়বে সরকার এটা বুঝতে পারেনি। যখন বুঝলো তখন আর কিছুই করার ছিল না। তারপরও তারা সাড়ে চার মাসে চারবার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। দেশের নানা প্রান্তে কার্ফু জারি করা হয়। নিহত হন জনা দশ নাগরিক। তবু ক্ষিপ্ত মানুষকে কিছুতেই তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। তাদের আন্দোলনের তোড়ে প্রেসিডেন্ট ও প্রাইম মিনিস্টার আজ দেশ ছাড়া। তাদের সরকারি ও ব্যক্তিগত ঘরবাড়ি বিক্ষোভকারীদের দখলে।

ছোট ভাই শ্রিলঙ্কার নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বড়ভাই প্রধানমন্ত্রী। তারা আপন দুই ভাই। তারা কেউ কারো চেয়ে কম নয়। তাদের একজন সমর নায়ক অপরজন আইনজীবি ও রাজনীতিক। তাদের হাতে শ্রীলঙ্কার ক্ষমতার নৌকা এভাবে ডুবে যাবে ছয়মাস আগেও কেউ ভাবেনি।

এই দুই ভাইয়ের উৎপত্তি কোন সাধারণ ঘর থেকে নয়। তাদের তাদের দাদা ব্রিটিশ আমলে গভর্ণর ও জমিদার। বাবা ছিলেন তুখোড় রাজনীতিক। ছাত্র হিসেবেও তারা ছিলেন অত্যান্ত মেধাবী। পেশাগত দিক দিয়ে একশ’ তে একশ’ তেমনি দুরদর্শীতায়ও কম ছিলেন না। তাদের প্রজ্ঞা দিয়ে তামিল টাইগারদের কবর দিয়েছেন। বিরোধীদলকে মেকুর বানিয়েছেন। দেশের প্রধান দুটি ক্ষমতার চেয়ার ও সরকারকে পদানত রেখেছেন।   

তাদের জন্ম প্রখ্যাত রাজনৈতিক পরিবারে হলেও তারা রাজার ছেলে থেকে রাজা হয়েছেন এমন নয়। বাবা মা বা চাচার পাগড়ী ধরে শ্রীলঙ্কার মসনদে বসেছেন তাও নয়। তারা চার আনা আট আনা বা দুই আনার অংশীদারিত্ব থেকে এসেছেন সেটাও নয়। তারা সরকারী দলে বসে থাল থাল সন্দেস খেয়ে পেটুক হয়েছেন তাও নয়। তারা বিরোধী দলেও ছিলেন সরকারী দলেও নিরঙ্কুশ ক্ষমতা চর্চা করেছেন। তারা ব্যার্থথতা ও হতাশার সলিলেও অবগাহন করেছেন।

তাহলে তাদের হাতে কেন শ্রীলঙ্কার ক্ষমতার নৌকা কেন এভাবে ডুবে গেল সেটাই এখন সব চেয়ে বড় প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই দৈনিক দেশতথ্য অনলাইনের পক্ষ থেকে উপস্থাপন করছি এই প্রতিবেদন।

দুই ভাইয়ের বংশ পরিচয়: তারা থেরবাদ বৌদ্ধধর্মের অনুসারী। তাদের দাদা ডি.এম. রাজাপক্ষ ১৯৩০-এর দশকে হাম্বানতোতা’র স্টেট কাউন্সিলর ছিলেন জমিদার ছিলেন। তাদের মা দন্দিনা সমরসিংহ দেশনায়ক। বাবা ডন অলবিন রাজপক্ষ (ডি. এ. রাজাপক্ষ)। এই জমিদার পরিবারের সন্তান ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ১৯৪৭ – ১৯৬০ পর্যন্ত বেলিয়াতা আসনের সংসদ সদস্য। ১৯৫৯ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার কৃষি ও ভূমিমন্ত্রী। ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৪ –১২ নভেম্বর ১৯৬৪ শ্রীলঙ্কা সংসদের উপবক্তা। তিনি ১৯৬৭ সালের ৭ নভেম্বর ৬১ বছর বয়সে হৃদরোগে মারা যান। তিনি চমল জয়ন্তী মহিন্দ চন্দ্র গোঠাভয় বাসিল ডুডলি প্রীতি ও গন্দনী রাজপক্ষ নামের নয়টি সন্তানের জনক। এর মধ্যে মহিন্দ তৃতীয় গোঠাভয় রাজ পক্ষ ৫ম। 

গোঠাভয় রাজ পক্ষ যেভাবে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হলেছিলেন: লেফটেন্যান্ট কর্নেল নন্দসেন গোঠাভয় রাজপক্ষ। জন্ম ১৯৪৯ সালের ২০ জুন। কলম্বোর আনন্দ কলেজে লেখাপড়া করে ১৯৭১ সালে এপ্রিলে দিয়াতালাভার সেনাবাহিনী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করে পদাতিক রেজিমেন্টের কমিশনপ্রাপ্ত হন। সেনাবাহিনীতে এসেই বেশকিছু বড় ধরনের যুদ্ধে অংশ নেন। এর মধ্যে ভাদামারাচি অপারেশন, অপারেশন স্ট্রাইক হার্ড ও অপারেশন থ্রিবিদ বালা। ১৯৮৭ থেকে ১৯৮৯ সালে জেভিপি বিদ্রোহ বিরোধী অভিযানে অংশ নেন। চাকরীর বয়স শেষ হওয়ার আগেই তিনি অবসর নিয়ে তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হিসেবে মার্কিন মুলুকে স্থায়ী হন।

২০০৫ সালে ভাই মহিন্দ্র রাজপক্ষের নির্বাচনী প্রচারণার জন্য দেশে আসেন। ভাই বিজয়ী হওয়ার পর সামরিক সচিব হিসেবে নিয়োগ পান। তার সময়ে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনী তামিল বিদ্রোহীদের পরাজিত করে ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণকে হত্যা করে। এর জেরে ২০০৬ সালে তামিল আত্মঘাতীরা তাকে গুপ্ত হত্যার চেষ্টা করে। ২০১৫ সালে ভাই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পরাজিত হলে তিনিও পদ হারান। ২০১৮ সালে রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা শুরু করেন। ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। গণ বিক্ষোভের চাপে  ৯ জুলাই ২০২২ পালিয়ে যান। 

পের্সি মহেন্দ্র রাজপক্ষঃ জন্ম ১৯৪৫ সালের ১৮ নভেম্বর হাম্বানতোতার দক্ষিণাংশের বীরকাটিয়া গ্রামে।   তিনি প্রথমে গলের রিচমন্ড কলেজ পরে কলম্বোর নালন্দা কলেজ এবং থার্স্টটান কলেজে পড়াশোনা করেছেন। তিনি সিংহলি চলচ্চিত্রে অভিনয়সহ বিদ্যোদয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রন্থাগার সহকারী ছিলেন।

১৯৬৭ সালে পিতার মৃত্যুর পর এসএলএফপি দলের প্রার্থী হিসেবে পিতার নির্বাচনী এলাকা বেলিয়াতা থেকে ১৯৭০ সালে ২৪ বছর বয়সে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৭ সালে সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হন। এরপর আইন বিষয়ে পড়াশোনা করে ১৯৭৭ সালে অ্যাটর্নি এট ল হিসেবে শপথ নেন। ১৯৮৯ সালে পুনরায় নির্বাচিত হন ও সংসদে হাম্বানতোতা জেলার প্রতিনিধিত্ব করেন। এ সময় তিনি টাঙ্গালে আইনচর্চা করে কাটিয়েছেন।

১৯৯৪ সালে চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা’র পিপলস অ্যালায়েন্সে শ্রমমন্ত্রী হন। ১৯৯৭ সালে মৎস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রী। ২০০১ সালে পরাজিত হয়ে পদচ্যুত হন। ২০০২ সালে সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা। ২০০৪ সালে বিজয়ী হয়ে শ্রীলঙ্কা’র ত্রয়োদশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। রাজপথ মন্ত্রণালয় তিনি হাতে রাখেন।

বাবার দল শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি থেকে ২০০৫ সালে ১৯০,০০০ ভোটের ব্যবধানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা ও ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির প্রধান রনীল বিক্রমাসিংহকে পরাজিত করে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। প্রতিরক্ষা ও অর্থমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিজ হেফাজতে রাখেন।

জয় ও পরাজয়: ৮ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মৈত্রীপাল সিরিসেনে’র কাছে ৪৭.৬% ভোট পেয়ে পরাজিত হন।  ক্রমবর্ধমান নিয়ন্ত্রণ, অকল্যাণকর সরকার, দূর্নীতির প্রেক্ষিতে তিনি পরাজিত হয়েছেন বলে ধারণা করা হয়। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নির্বাচনের ফলাফল বানচাল ও সেনাবাহিনী প্রধান জগৎ জয়াসুরিয়াকে বশে রাখতে ব্যর্থ হন।

তিনি ২০০৫ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ২০০৪ থেকে ২০০৫, ২০১৮ ও ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী। ২০০২ থেকে ২০০৪ ও ২০১৮ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিরোধী দলের নেতা। ২০০৫ থেকে ২০১৫ ও ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার অর্থমন্ত্রী ছিলেন। ২০১৫ সাল থেকে কুরুন্যাগলের সংসদ সদস্য ছিলেন।

তিনি শ্রীলঙ্কার ৬ষ্ঠ রাষ্ট্রপতি ও শ্রীলঙ্কার সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পেশায় তিনি একজন আইনজীবী। ১৯৭০ সালে প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৬ এপ্রিল, ২০০৪ থেকে ২০০৫ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯ নভেম্বর, ২০৫ তারিখে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ৬ বছরের মেয়াদে ক্ষমতায় আসীন হন। এরপর ২৭ জানুয়ারি, ২০১০ তারিখে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে ২য় মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন।

এতএত যার অভিজ্ঞতা তিনি কেন রাষ্ট্রকে দেউলিয়া করে দেশ থেকে পালিয়ে জীবন বাঁচাতে বাধ্য হলেন। এ বিষয় নিয়ে পড়ুন আগামীকাল।

এবি//দৈনিক দেশতথ্য//জুলাই ১৮,২০২২//