কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় ২ নম্বর ওয়ার্ড থানা পাড়া, শশীভূষণ পরামানিক সড়কের পার্শ্ববর্তী বর্তমান আরএস দাগ ১১৬৩ এর . ১৩৫০ শতাংশ বাংলাদেশ সরকারের নামে রেকর্ডিও ১নং খতিয়ানভুক্ত জমি ১৯৭০ সালের ভুয়া দলিল দেখিয়ে আত্মসাতের পাঁয়তারা করছে মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে এমএস মিলন শেখ।
কুষ্টিয়া পৌর এলাকার জমি তৎকালীন যশোর জেলা বর্তমান মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর সাব রেজিস্ট্রার অফিস থেকে ১৯৭০ সালের খোশ কবলা দলিল বলে কুষ্টিয়া সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে ১ নম্বর ও একই এলাকার আ: হান্নান ২ নং, আব্দুল মান্নানকে ৩নং এবং দিপাকে ৪ নং আসামি করে মামলা করে এলাকার চিহ্নিত মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী এমএস মিলন শেখ। যার মামলা নম্বর ৬২৩/২০২২।
তবে সরেজমিনে পর এলাকার ভোটার তালিকা, জেলা নির্বাচন অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এমএস মিলন শেখ পিতা মৃত মির্জা আ:সামাদ যার ভোটার নং ৫০০৫৮৮১০৫৭৩০ এবং জন্ম তারিখ ২রা সেপ্টেম্বর ১৯৭২ এবং বর্তমান ডিজিটাল জাতীয় পরিচয় পত্র যার নম্বর ৯১০২১৪০৬২২ উভয় ক্ষেত্রে জন্ম তারিখ একই হলেও হঠাৎ করে সরকারী খাস জমি আত্মসাতের জন্য জন্মের ২ বছর পূর্বে ১৯৭০ সালে নাবালক সেজে জমির দাবি করে এই মিলন। এ ব্যাপারে মাগুরা রেজিস্ট্রি অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়,স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে মোহাম্মদপুর সাব-রেজিস্ট্রার থাকা সকল প্রকার দলিল দস্তাবেজ পাক হানাদার বাহিনী এবং এর দোসররা পুড়িয়ে বিনষ্ট করে। যার ফলে ১৯৬৯ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সকল প্রকার নথি বিনষ্ট হয়।
তৎকালীন এসব নথি বিনষ্ট হলেও যারা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী খাজনা এবং নাম খারিজসহ রেকর্ড বহাল রাখে তারা এই সকল সম্পদ এখনো বৈধভাবে ভোগ দখল করে। এক্ষেত্রে এমএস মিলন ১৯৭০ সালের দলিল উপস্থাপন করলেও তার নাম এখনো কোনো বৈধ নাম খারিজ ও খাজনা জমা দেয়া হয়নি বলে জানা যায়। জমি রেজিস্ট্রি সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের সাথে কথা বললে তারা বলেন, বর্তমানে একটি কুচক্রী মহল জমির দলিল জাল-জালিয়াতির সাথে জড়িত। এই কুচক্রী মহল মোহাম্মদপুরের উক্ত সালগুলোর নথি না থাকার সুযোগে দেশের বিভিন্ন জেলার জমি রেজিস্ট্রি জাল দলিল তৈরি করে।
মামলার ৩নং বিবাদী আব্দুল মান্নানের স্ত্রী মাবিয়া বেগম সাথে কথা বললে তিনি জানান আমার বিয়ের পর আমি এখানে ৩৫ বছর বসবাস করে আসছি। কখনো দেখিনি মিলন এই জমি ভোগ দখল করেছে। আমার জানি এই জায়গা সরকারি জলাকার। হঠাৎ করে আমার স্বামীর নামে মামলার নোটিশ আসে তখন জানলাম। তবে আমার জানা মতে মিলনের জন্ম ১৯৭২ সালে তাহলে কিভাবে সে ১৯৭০ সালে নাবালক হয়! সে জাল দলিল করে এই হয়রানি করছে আমাদের। আমরা এর বিচার চাই।
মামলার অপর বিবাদী আব্দুল হান্নান জানান, এই জমি সরকারের আমরা এই জমির মালিক না।তারপরও আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে সে। তিনি আরো জানান জন্মের আগে কিভাবে নাবালক সেজে জমির মালিক হয়। আমরা এর সাথে জড়িত সকলের কঠোর শাস্তি কামনা করছি।
পার্শ্ববর্তী জমির মালিক বিবাদী দিপার ভাই রহিম জানান, কয়েক মাস আগে কোন প্রকার জমিজমা মাপামাপি ছাড়াই মিলন তার দলবল নিয়ে এই জায়গা দখল করতে এসে আমার বোনের জায়গায় লাগানো ফলদ গাছগাছালি কেটে ফেলে। আমরা ছোটবেলা থেকেই জানি এই জায়গা সরকারের।
জন্মতারিখের বিভ্রান্তি এবং জাল দলিল প্রসঙ্গে মিলনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি একেক সময় একেক ভাবে জন্মতারিখ উপস্থাপন করেন। জমির নাম জারি ও খাজনা দেয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি নাম জারি করেননি এবং এই জমির কখনো খাজনা দেননি বলে জানান। জাল দলিল প্রসঙ্গে তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি কোনো সদুত্তর না দিয়ে সংবাদ বন্ধ রাখার জন্য অনৈতিকভাবে অর্থ প্রস্তাব করেন। এবং তার ভাই লিটন সংবাদ বন্ধ রাখার জন্য প্রতিবেদক এর অফিসে এসে হুমকি-ধামকি প্রদান করেন।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য ,১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

Discussion about this post