শীতের শুরুতে জাওরানী সীমান্তে দেদারচ্ছে পাচার হয়ে আসছে ভারতীয় গরু।
আজ রবিবার ভোর রাতে সীমান্তে একজন গরুর রাখাল গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
এঘটনা ছড়িয়ে পড়লে সীমান্তে আতস্ক দেখা দেয়। তার মাথায় ছড়া গুলি লেগেছে। গুলি মাথার খুলি ভেদ করে আটকে আছে। অতিগোপনে রংপুরেএই যুবকের নাম পবিত্র (৩২)। চিকিৎসা চলছে। লালমনিরহাট ১৫ বিজিবির জাওরানি ছাতুর দিঘী বিজিবি ক্যাম্পের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগ চোরাকারবারিদের সহায়তা করছে।
জেলা হাতীবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের ছাতুরদিঘী সীমান্তে চোরাকারবারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রতিরাতে শতশত ভারতীয় গরু কাঁটারাতের ওপর দিয়ে পাড় হয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে। এসব গরুর চালানের সাথে ক্ষুদ্র আগ্নিয়াস্ত্র ও মাদক প্রবেশ করার অভিযোগ উঠেছে। জাওরানীতে মাথায় গুলিবিদ্ধ যুবকের পরিচয় মিলেছে। সে পূর্বকদমা গ্রামের বাসিন্ধা। গোপনে রংপুর চিকিৎসা নিচ্ছে। তারা মাথার খুলিতে গুলির স্প্রীলিন্টার একইঞ্চি গভীরে আটকে আছে। বিজিবি ও পুলিশ বিষয়টি স্বীকার না করায় পরিচয় প্রকাশ করা হলো না। তবে গোয়েন্দা সংস্থা গুলির কাছে নাম ও পরিচয় রয়েছে।
জাওরানী গ্রামবাসীদের কৃষক মহরউদ্দিনের অভিযোগ গরু পাচারকারীদের কারণে সীমান্তের পাঁকাধানের ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ভোর রাতে শতশত গরু কাঁটাতারের বেড়ার উপর দিয়ে বিশেষ ধরনের বাঁশের চরক্কা দিয়ে এপারে আনছে গরু। শতশত গরু সীমান্তে আনায় গরুর পায়ের খুড়ের আঘাতে পাঁকা ধানের গাছ মাটিতে পিষে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উঠতি ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় নিরীহ কৃষক পড়েছে মহা বিপাকে। চোরাচালানীদের হয়রানির ভয়ে কেউ মুখখুলতে বা অভিযোগ করার সাহস পায় না।
সীমান্ত গ্রামের গরুর কোটার সদস্য খায়রুল জানান, প্রতিরাতে একশত গরু পাচার হলে জাওয়াানী ছাতুর দিঘী বিওপি ক্যাম্পের কথিত সোর্স (লাইনম্যান) কে দুইট গরু উপঢৌকন (ঘুষ) দিতে হয়। আধা ঘন্টা সীমান্ত ছেড়ে দিলে ৫০ হাজার টাকা, এক ঘন্টা সীমান্ত ছেড়ে দিলে এক লাখ টাকা দিতে হয়। উপঢৌকন দেয়া গরু গুলো ২/৩ দিন মিলিয়ে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি’র হেড কোয়াটার কে জানিয়ে কাষ্টমসে জমা দেয়া হয়। প্রচার করা হয় সীমান্ত হতে গরু উদ্ধার করা হয়েছে। এসব গরু উদ্ধারের মামলা হয় না। পরিত্যাক্ত দেখানো হয়।
স্কুল শিক্ষক মিজু জানান, প্রতিরাতে শতশত গরু জাওরানী সীমান্ত দিয়ে দেশে ঢুকছে। এই গরু গুলো চাপারহাট বাজারে উঠে হাটের চালানের মাধ্যমে দেশের নানা স্থানে চলে যায়। প্রকাশ্য ট্রাক বোঝাই হয়ে চলে যায়। কেউ কোন কথা বলে না। সকলে মোটা অর্থের বিনিময়ে চোখ-মুখ বন্ধ রাখে। তবে ভয়াবহ তথ্য গরুর সাথে মাদক ও ক্ষুদ্র অগ্নি এবং বিষ্ফোরক দেদারছে আসছে।
লালমনিরহাট ১৫ বিজিবির জাওরানী ছাতুর দিঘী বিওপি ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার মোমেন জানান, সীমান্তে তার জানামতে কোন গুলিবিদ্ধের ঘটনা ঘটেনি। গরু উপঢৌকন নিয়ে কাষ্টমসে জমা দেয়ার ঘটনা সত্য নয়। এই সব ভুয়া তথ্য। বিজিবি তাদের সাধ্যমত সীমান্তে পাচাররোধে দিনরাত্রি কাজ করছে। চাপারহাট বাজারে ভারতীয় গরু উঠা প্রসঙ্গে বলেন, জাওরানীর পিছনে এই হাট। এখানে অন্য সব সীমান্ত দিয়ে গরু আসতে পারে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//