আবেদ হোসাইন, যশোর: জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতার জন্য নয়, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জনগণের ভালোবাসা ও সমর্থন চাই।জামায়াত সেই রাষ্ট্র দেখতে চায়, যেখানে ধনী-গরিবের ভেদাভেদ থাকবেনা। রাষ্ট্র সবার অধিকার নিশ্চিত করবে। চেতনার বড়ি বিক্রি হবে না এবং কেউ দাসও হবে না।’
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে যশোর ঈদগাহ ময়দানে আয়োজিত এক কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াত আমির ডাঃ শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত এ সম্মেলন সফল করতে সকাল ৮টার মধ্যে সমাবেশস্থল যশোর ঈদগাহ ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। মানুষ মূল মাঠে স্থান না পেয়ে পাশের টাউন ময়দানসহ আশপাশের রাস্তায় অবস্থান নেন।
জামায়াতের আমির উপস্থিত লক্ষাধিক জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘গত ১৬ বছরে এদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে শিক্ষার। শিক্ষার পরিবর্তন দিয়েই এদেশ গড়ে তোলা হবে। তরুণরা সার্টিফিকেটের সঙ্গে চাকরি নিয়ে বের হবেন এবং ওই জেনারেশনের হাতেই তুলে দেয়া হবে দেশ।
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বলেন, ‘তারা দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে উঠিয়েছিল দাবি করলেও দেশে চলেছে হাহাকার। তাদের লুটপাটের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য সব বন্ধ হয়ে গেছে। মানুষ আগুন দিয়ে পেট ভরছে। স্বৈরাচার চলে গেলেও চাঁদাবাজ, দখলদার ও জুলুমমুক্ত হয়নি দেশ ,শহীদদের রক্তের প্রতি বেঈমানি করা যাবে না। চাঁদাবাজ-দখলদার হওয়া যাবে না। এটা যারা করবেন তারা ঘৃণিত হবেন।’
জামায়াত আমির দেশবাসীর কাছে চারটি জিনিস চেয়ে বলেন, আপনাদের মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে দুই একটি জিনিস চাই। আমরা যদি দেশের জন্য, মানুষের জন্য কাজ করি- তাহলে আপনাদের অন্তরের ভালবাসা চাই। আপনারা যেন আমাদের ভালবাসা উপহার দেন। ভালবাসার সঙ্গে যেন সমর্থন ও সহযোগিতা চাই। সমর্থন ও সহযোগিতার পাশাপাশি জাতীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যেন আপনাদের পাশে পাই। এই জাতিকে বদলে দেওয়ার জন্য যেন আপনাদের অন্তরে একটা জায়গা চাই। এই চারটি জিনিস যদি দেশবাসী আমাদের উপহার দেয়, আমরা দেশবাসীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।মানুষ সংস্কারের জন্য যৌক্তিক সময় চায়।
তিনি দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, একদল চাঁদাবাজি করে চলে গেছে। আরেক দল আসুক, আমরা চায় না। দেশে কি চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে? হাতবদল হয়েছে। এজন্য তো এতে মানুষ শহীদ হননি। আমরা যেন শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি না করি। এসব ঘৃণিত কাজ করলে শহীদদের সঙ্গে বেইমানি হবে। আপনারা এই ঘৃণিত কাজ করবেন না। ফুটপাত, হাটঘাট, বালুমহাল, জলমহাল দখল, চাঁদাবাজিতে কোনো নেতাকর্মী পা দেবেন না।
জেলা জামায়াত ইসলামীর আমির অধ্যাপক গোলাম রসুলের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য দেন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন, মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, মাওলানা আজিজুর রহমান, ঝিনাইদহ জেলা আমির অধ্যাপক আলী আযম, সাতক্ষীরা জেলা আমির শহিদুল ইসলাম মুকুল, মাগুরা জেলা আমির এম বি বাকের, নড়াইল জেলা আমির আতাউর রহমান বাচ্চু, শহীদ আবদুল্লাহর পিতা আবদুল জব্বার, যশোর জেলা নায়েবে আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান।

Discussion about this post