এনামুল হক কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জুলাই নিয়ে এক পুলিশ সদস্য কর্তৃক কটুক্তি করার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাকে বরখাস্ত করেছেন জেলা পুলিশ প্রশাসন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার তদন্তের গঠিত ৩ সদস্যে তদন্ত রিপোর্টে সত্যতা
পাওয়ায় পুলিশ সদস্য ফারজুল ইসলাম রনিকে সাময়িক বরখাস্ত করে চাকরিচ্যুতির সুপারিশ করা হয়েছে’।
এর আগে গত ০১ জুলাই সকালে পুলিশ সদস্য ফারজুল ইসলাম তার নিজ ফেসবুল আইডিতে ‘জুলাই’ কে নিয়ে কটুক্তি করে ষ্ট্যাটাস পোষ্ট দেয়। তবে সেটি খুব অল্প সময়ের মধ্যে আবার ওই পোষ্টটি ডিলিট করে দেন পোষ্টদাতা পুলিশ সদস্য ফারজুল ইসলাম। এই অল্প সময়ের মধ্যেই ওই পোষ্টের স্ক্রিনসট চলে যায় অসংখ্য মানুষের সংগ্রহে।
এ ঘটনায় গত ০১ মে মঙ্গলবার রাত ৯টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মুখস্থ কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কে বিক্ষোভ করেন। আন্দোলনকারীদের দাবি ছিলো অবিলম্বে কটুক্তিকারী
পুলিশ সদস্য ফারজুল ইসলামকে বরখাস্তসহ গ্রেফতার করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত ওই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় না নেওয়া হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত মহাসড়ক থেকে ছেড়ে উঠবেন না।
আন্দোলনের মুখে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের স্বার্থে গত ২ মে দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয় সম্মেলন কক্ষে আন্দোলনকারীদের সাথে সমঝোতা বৈঠকের সিদ্ধান্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিকদার হোসেন ইমাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) প্রনব কুমার এবং পুলিশ পরিদর্শক দেবাশীষ রায় সমন্বয়ে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে দেয়া হয়। এবং দুই দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের সিদ্ধান্ত হয়। ওই
কমিটির দেয়া তদন্ত রিপোর্টে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতার উল্লেখ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন তদন্ত কমিটি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিকদার হোসেন ইমাম।
‘জুলাই’ কটুক্তির দায়ে পুলিশ সদস্যকে বরখাস্তের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া শাখার সদস্যসচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,“ফ্যাসিবাদি দু:শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত জুলাই’কে নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার কোন সুযোগ নেই। পুলিশ সদস্য ফারজুল
ইসলাম রনির বিরুদ্ধে নেয়া এই উদ্যোগ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে’।
কটুক্তিকারী পুলিশ ফারজুল ইসলাম তার নিজ নামীয় ফেসবুক আইডিতে একটি পোষ্টের মাধ্যমে দাবি করেছিলেন তাঁর ‘ব্যবহৃত ফেসবুক আইডিটি হ্যাক করা হয়েছে’।
বরখাস্ত ফারজুল ইসলাম রনি ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার দহকুলা গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিন মৃধার ছেলে। তিনি ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই থেকে কুষ্টিয়া ট্রাফিক
বিভাগে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি ছুটিতে গিয়ে আত্ম গোপনে রয়েছেন বলে পুলিশ সুত্রে জানা যায়।

Discussion about this post