দেশতথ্য ডেস্ক: “আইলারে নয়া দামান আসমানেরও তেরা—বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এই গানটি শুনেননি এমন লোক নেই বললেই চলে।
এই গানটি সিলেটর আঞ্চলিক ভাষায় রচিত। যার ফলে এই গানে ব্যবহৃত বেশিরভাগ শব্দের অর্থ অনেকেই জানেন না। জনপ্রিয় এই গানটি সিলেট অঞ্চলে প্রচলিত বিয়ের একটি গান।
গানটির সঠিক রচয়িতা নিয়ে বিতর্ক আছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনে এই গানটি গেয়েছেন। তারা তাদের মত করে বিভিন্ন শব্দ সংযোজন ও বিয়োজন করেছেন। তাই এর আসল শব্দ পরিবর্তিত হয়ে গেছে।
এখন যেভাবে গানটি গাওয়া হয় তা হলো এমন—-
“আইলারে নয়া দামান, আসমানেরও তেরা
বিছানা বিছাইয়া দিলাম শাইল ধানের নেরা
ও দামান বও, দামান বও।
.
বও দামান, কওরে কথা, খাওরে বাটার পান,
যাইবার কথা কও যদি কাইট্যা রাখমু কান ।
ও দামান বও, দামান বও ।
.
আইলারে দামান্দর ভাই, হিজলেরও মোড়া
ঠুনকি দিলে মাটিত পড়ইন, ষাইট-সত্তইরের বুড়া । ও দামান বও, দামান বও ।
.
আইলারে দামান্দর বইন, কইতা একখান কথা
কইনার ভাইর ছেরা দেইখা, হইয়া গেলা বোবা ।
ও দামান বও, দামান বও।
.
আইলারে দামান্দর ভাইর বউ, দেখতে বটর গাইল, উঠতে বইতে সময় লাগে, করইন আইল-জাইল । ও দামান বও, দামান বও।
এই গানে ব্যবহৃত, আইলা অর্থ হলো এলো। দামান অর্থ— বর, আসমান অর্থ— আকাশ।
তেরা অর্থ— আকাশের তারা। শাইল ধানের অর্থ — সিলেট অঞ্চলে উৎপাদিত শালি ধান।
নেরা অর্থ— ধানের নাড়া। বও অর্থ— বসো।
দামান্দর অর্থ— বরের।
হিজলেরও মোড়া অর্থ— হিজলগাছের গুঁড়ি, এই বাক্য দিয়ে মোটা ও কদাকার বুঝনো হয়েছে।
ঠুনকি দিলে মাটিত পড়ইন অর্থ— আঙুলের টোকা লাগলে মাটিতে পড়ে যান। এদিয়ে তালপাতার সেপাই বুঝানো হয়েছে।
কইনার অর্থ- কনের, ভাইর অর্থ-ভাই, ছেরা দেইখা অর্থ— চেহারা দেখে।
বটর গাইল অর্থ— বটগাছের কাঠ দিয়ে তৈরি গাইল, মোটা ভারী, বিশ্রী ও কুৎসিত।
গাইল অর্থ—ধান ভাঙিয়ে চাল করার জন্য ব্যবহৃত কাঠের তৈরি সরঞ্জাম।
আইল-জাইল অর্থ— আউলা ঝাউলা করা, হাস্যকর আচরণ, উলটা-পালটা করা, আচরণে স্বাভাবিক নয় এমন (উপহাস অর্থে)।
করণা পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট প্রায় সকলেই। তাদের উজ্জীবিত করার জন্য বেঙ্গালুরুর একটি হাসপাতালে নাচ গান করেছিলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
এই ঘটনা ভাইরাল হয়েছিল। এর অনুকরন করেছিলেন ঢাকা মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা: শাশ্বত চন্দন, ডা: আনিকা ইবনাত শামা ও অনারারি মেডিকেল অফিসার ডা: কৃপা বিশ্বাস। তারা নেচে-গেয়ে আইলারে নয়া দামান গানটি পরিবেশন করেছিলেন।
এরপর গানটি নতুন রূপে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। এখন পথে-ঘাটে চলার সময় এই গানটির সুর কানে ভেসে আসে।
গানটি শ্রুতিমধুর হলেও এর অর্থ অনেকেই জানেন না।

Discussion about this post