কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
পতিত আ’লীগ সরকারের রাজনৈতিক প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে জ্যেষ্ঠতা ডিঙিয়ে অধ্যক্ষের পদ দখলে রেখে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের দায়ে মামলা করেছে দুদক।
দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান সুমনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত কার্যালয় কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালনক বুলবুল আহমেদ।
রবিবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক কুষ্টিয়ার সমন্বিত কার্যালয় মামলাটি আদালতে দাখিল করেছে।
এ মামলার এজাহার নামীয় বিবাদী সুমনের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনসহ প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আদালত সূত্রে যানা যায়, রাজনৈতিক প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষের পদ দখলে রেখে ২০১০-১১ অর্থ বছর থেকে ২০২২-
২৩ অর্থ বছর সময়কালের মধ্যে ক্ষমতার অব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানের তহবিল হতে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ। দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত কার্যালয় কুষ্টিয়ার ৩০২ নং স্মারক ২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারী অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তের যাত্রা শুরু হয়। এসময় এজাহার নামীয় বিবাদী সাদিকুজ্জামান সুমনের সম্পদ বিবরনীর হিসেবে চেয়ে পত্র প্রেরণ করেন দুদক। জবাবে বিবাদী কর্তৃক দুদক কার্যালয়ে সুমনের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরনী বিশ্লেষন করে দেখা যায় তার দেয়া সম্পদ বিবরনীতে ৮৩ লক্ষ ৫৯ হাজার ৫শ ৫টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করে দুদক আইন- ২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় অপরাধ এবং ২ কোটি ৫০ লক্ষ ১ হাজার ৭৫ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জন করে দুদক আইনের ২৭(১) ধারায় অপরাধ সংগঠিত করেছেন।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, ‘বিগত আওয়ামী সরকারের সময় দৌলতপুর ডিগ্রী কলেজে ইতিহাস বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন সুমন। পরে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সিনিয়র শিক্ষকদের ডিঙিয়ে তিনি প্রথমে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং পরে অধ্যক্ষের পদ বাগিয়ে নেন। এরপর ক্ষমতার অপব্যবহারসহ অনিয়ম দূর্নীতি করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে বিপুল সম্পদের মালিক হন তিনি।
তার বিরুদ্ধে ২০২০ সালে দুদকে একটি অভিযোগ দাখিল হলে দুদক সুমনের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে সুমন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান এবং বর্তমানে তিনি মালয়েশিয়াতে অবস্থান করছেন বলে তার
ঘনিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
মামলার বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করে দুদকের কৌসুলি এ্যাড. আল মুজাহিদ
হোসেন জানান, ‘কলেজ শিক্ষকের পদে থেকে ক্ষমতার অপপ্রয়াগসহ দুর্নীতি করে জ্ঞাত আয় বহির্ভুত ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে দৌলতপুর উপজেলার মাস্টার পাড়া গ্রামের বাসিন্দা মাফিকুজ্জামান ওরফে মাফিক খানের ছেলে দৌলতপুর কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যক্ষ সাদিকুজ্জামান সুমনের বিরুদ্ধে করা মামলাটি জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতে দাখিল করা হয়েছে। পরবর্তীতে আদালত শুনানীসহ
বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করবেন।