ভুয়া মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রদান করায় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের এক মেডিকেল অফিসারের ৬ মাসের জন্য রেজিস্ট্রেশন বাতিল করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল। এই ৬ মাসের জন্য তিনি কোন রোগির চিকিৎসা করতে পারবেন না ও এমনকি নিজেকে ডাক্তার পরিচয় ও দিতে পারবেন না।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল। এই মেডিকেল অফিসারের নাম ডাক্তার নিহার রঞ্জন বৈদ্য। তিনি বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন।
জানা যায়, ডাক্তার নিহার রঞ্জন বৈদ্য দেড় বছর আগে বরিশালের গৌরনদী হাসপাতালে থাকাকালীন সময় লক্ষন বৈদ্য নামের এক রোগীর গুরুতর জখম না থাকা সত্ত্বেও তিনি মিথ্যা মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রদান করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের তদন্তে প্রমানিত হয়।
মঙ্গলবার(২৩ আগস্ট) বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে- ডাক্তার নীহার রঞ্জন বৈদ্য, (কোড নং : ১২০৩৬০), ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার, ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতাল, বরগুনায় কর্মরত। তিনি লক্ষন বৈদ্য নামের একজন রোগীকে গুরুতর জখম না থাকা সত্ত্বেও মিথ্যা ডাক্তারী সনদ প্রদান করেন। বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল এর তদন্তে প্রতীয়মান হয় তাঁর প্রদত্ত ডাক্তারী সনদ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত ছিল। বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০ (৬১ নং আইন) এর ২৩ (১) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বিএমএন্ডডিসি হতে প্রদত্ত তাঁর রেজিষ্ট্রেশন (A-45464, Date of Registration : 3rd June, 2007) ২৩ আগস্ট হতে ০৬ (ছয়) মাসের জন্য তার লাইসেন্স স্থগিত করা হল। উল্লেখিত সময়ে বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০ (৬১ নং আইন) এর ধারা ২২ (১) অনুযায়ী তিনি ( ডাক্তার নিহার রঞ্জন বৈদ্য) কোথাও কোনরূপ কোন রোগীকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে পারবেন না । এমনকি উক্ত সময়ে তিনি নিজেকে চিকিৎসক হিসেবেও পরিচয় দিতে পারবেন না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডাক্তার নিহার রঞ্জন বৈদ্যর বক্তব্য নেয়ার জন্য তাকে একাধিক বার মুঠো ফোনে ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি তিনি মুঠো ফোন তোলেনি।
এ বিষয়ে বরগুনা সদর হাসপাতালের তত্তাবধায়ক ডাক্তার সোহরাব হোসেন বলেন, আমি যত টুকু জানতে পেরেছিলাম ডাক্তার নিহার রঞ্জন বৈদ্যকে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় মাফ করে দিয়েছে। এখন পর্যন্ত আমার নিকট কোন নির্দেশনা আসে নাই। তবে আজকে নাইট ডিউটি করার পরে তাঁকে বাদ দিয়ে দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, নিহার রঞ্জন বৈদ্য আগে নাইট ডিউটির সময় নেশা করতেন। চেইন স্মকার ছিলেন তিনি। রোগীদের সামনে সব সময় সিগারেট খেতেন, সে
আগে খারাপ ছিল। এখন এতটা খারাপ নেই। অনেকটা ভাল হয়ে গেছেন।
প্রসঙ্গত, বরগুনা সদর হাসপাতালে যোগদান করে এখানেও ভুয়া সার্টিফিকেট দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ডাক্তার নিহার রঞ্জন বৈদ্যর বিরুদ্ধে। টাকা দিলেই সাধারণ জখম হলে মারাত্মক জখমের সার্টিফিকেট দেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//আগস্ট ২৩,২০২২//