জেলায় প্রধান ডাকঘরসহ ১১০টি রয়েছে। অধিকাংশ ডাকঘরের পাকা বিল্ডিং, সোলার প্যানেল স্থাপন ও আসবাবপত্র নতুন করে তৈরি করা হলেও এসব ডাকঘরের দাপ্তরিক কোনো কাজকর্ম নেই বললেই চলে। প্রতিটি ডাকঘরে একজন ডাক বিলিকারী ও একজন পোস্ট মাস্টার রয়েছে। তবে ডাকঘর গুলোতে রানার বা ডাক বিলিকারীরা সামান্যতম সন্মানী পায় যা দিয়ে তারা চলতে পারেনা। এরূপ করুণ অবস্থার কারণে ডাক বিভাগের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছেন মানুষ।
কোনো এক সময়ে যোগাযোগের প্রধানতম মাধ্যম ছিল পায়রা। ১৬৫৪ খ্রিস্টীয় সালের আগে ডাক যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। এরও আগে যখন ডাকেরই প্রচলন হয়নি, তখন পোষা পায়রার পায়ে বেঁধে প্রিয়জনের কাছে বার্তা পাঠাতো মানুষ। এরপর এলো ডাক যুগ। চিঠি দিও প্রতিদিন, চিঠি দিও, চিঠি নিয়ে এক সময়কার এমন কত গান বাজতো বেতার-টিভিতে এখন তা শুধুই স্মৃতি।
আর সেই সময়ে প্রিয়জনের চিঠি পাবার আশায় ডাকপিওনের পথ চেয়ে থাকার দিন হলো শুরু। সে যুগ আর নেই। ডিজিটাল যুগে সব যোগাযোগই হয় এখন এক নিমেষে। মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে ই-মেইলসহ (সামাজিক মাধ্যম) প্রযুক্তির কত সুবিধা এখন সবার জন্য।
শহরের চেয়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই গ্রাম অঞ্চল গুলোও। প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছেও এখন আধুনিক সুবিধা পৌঁছে গেছে। যখন ইচ্ছে প্রিয়জনের সাথে যোগাযোগের সুযোগটা তারাও উপভোগ করছে। বার্তা আদান-প্রদানে চিঠির বদলে সবার ভরসা এখন নতুন নতুন প্রযুক্তি এখন শহর থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যান্ত অজপাড়াগাঁয় পৌঁছে গেছে ইন্টারনেট ও ই-মেইল সেবা। তাই ডাক ঘরের মাধ্যমে মান্ধাতা যুগের চিঠি, টেলিগ্রাম সেবার প্রয়োজনও ফুরিয়েছে।
সেই কারনেই ডাক বিভাগ বেহালদশায় পরিণত হয়েছে। ডাকবাক্স গুলিতে চিঠির পরিবর্তে ময়লা-আবর্জনার ভাগার। জেলা এবং উপজেলার ডাকঘর ব্যতীত সবগুলোর নাজুক অবস্থা। একসময় ডাকঘর গুলো সব সময় মুখরিত থাকতো রানার কিংবা ডাক পিয়নের পদচারনায়। মানুষ ডাকঘরের সামনে অপেক্ষা করতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা, কারণ কখন যেন আসবে তাদের প্রেরিত চিঠি। কিন্তু ডাক বিভাগের সেই ঐতিহ্য এখন ফিকে হতে বসেছে।
এ অবস্থায় ডাক বিভাগের পুরাতন ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে আধুনিকীকরণের দাবি সাধারন মানুষের। তবে জেলা ও উপজেলা ডাকঘর গুলো চালিয়ে যাচ্ছে তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম। এখানে কিছুটা আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে।
জেলা-উপজেলার ডাকঘর গুলো বেশ ভালো চলছে। কাজের পরিধিও বেড়েছে। প্রধান ডাকঘর থেকে গড়ে প্রতিদিন ৪ থেকে৫শত চিঠি এবং অনলাইনের মাধ্যমে টাকা-পয়সা আদান-প্রদান হয়। আগে ডাকবাক্স গুলিতে ৫০থেকে ১শ টি চিঠি পাওয়া যেতো আর এখন ৫-১০টি চিঠি পাওয়াযায় আবার কোনো কোনো সময় থাকেনা। কারন এখন ডিজিটাল যুগ সরকার এর সহযোগীতায় সবকিছুই ডিজিটাল হয়েছে দেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে মানুষ হাতের কাছে অনেক সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে সরকারি ডাক বিভাগের পাশাপাশি বেসরকারি কুরিয়ার সার্ভিসে চিঠিপত্র ও টাকা-পয়সা আদান-প্রদানের মাধ্যম চালু হয়েছে তা ব্যাপক জনপ্রিয়তাও অর্জন করেছে।
এসব কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে অতি তাড়াতাড়ি ও সঠিক সময়ে সেবা পাওয়ায় মানুষের কাছে তা গ্রহন যোগ্যতাও পেয়েছে। তবে মানুষ আগের মতো তথ্য আদান প্রদানের জন্য চিঠি আদান প্রদান না করলেও সরকারী ও বেসরকারী অফিসিয়াল ডকুমেন্ট ডাকের মাধ্যমে পাঠাতে বেশি ভরসা পায়।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//সেপ্টম্বর ১৩,২০২২//

Discussion about this post