জমে উঠেছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাচন। ব্যানার ফেস্টুন ও বিল বোর্ডে সুশোভিত হয়েছে জাতীয় প্রেসক্লাব অঙ্গন।
এসব আয়োজনকে ম্লান করে দিয়ে আলোচনা সমালোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে ছোট্ট একটি কার্টুন। কার্টুন দিয়ে হ্যান্ডবিল বানিয়ে ভোট চেয়েছেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি কার্টুনিস্ট আব্দুল কুদ্দুস।
এই কার্টুন সাংবাদিক রাজনীতির বাস্তবতা তুলে ধরেছে। কেউ কেউ বলছেন এ দিয়ে যা বুঝানো হয়েছে তা রিপোর্টার ও কলামিস্টদের চিন্তার পরিধি অতিক্রম করেছে।
এই কার্টুন কি বুঝাতে চাচ্ছে তা নিয়ে গতকাল সোমবার প্রায় ২০ জন সাংবাদিকের সাথে কথা বলেছি।
সবার মত একিভূত করে যা পেয়েছি তা আক্ষরিক অর্থে এই যে, সবাই সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এর প্রধান কারন হলো এই যে, ভোট নেওয়া নেতারা সাংবাদিকদের স্বার্থের চেয়ে নিজের আখের গোছাতে নিজেকে নিবেদিত করেছেন।
এই সুযোগে আমলাদের কালো হাত সাংবাদিকদের মর্যাদা ও অধিকারের গাছের প্রায় সব ডালপালা আয়েস করেই ছেঁটে দিয়েছেন। এই কাজে তারা ব্যবহার করেছেন প্রস্তাবিত গণমাধ্যম আইন নামের একটি অস্ত্র। এই অস্ত্র দিয়ে অবশিষ্ট আর মাত্র দু’টি ডাল কাটতে পারলেই কান্ডকে কাঠ বানিয়ে আসবাবপত্র করা যাবে। এই অবশিষ্ট দুই ডালের একটির বেশির ভাগ অংশ তারা কেটে ফেলেছেন।
সাংবাদিকদের জন্য দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের বস্তার গিট কঠিন শর্তের কারণে খোলা যায়নি। তবে বস্তার কয়েকটি জায়গা কেটে ছিঁড়ে যৎকিঞ্চিত টাকা কেউ কেউ বের করে নিতে পেরেছেন।
নবম ওয়েজ বোর্ডের ময়নাপাখি খাঁচায় আটকে রয়েছে। তাকে দিয়ে অধিকর্তারা যা বলাবেন সে তাই বলবে।
সাংবাদিক নেতারা সাংবাদিক স্বার্থের দিকে দৃষ্টি না দিয়ে মাটির নিচে ঠোঁট মেরে আন্ডারগ্রাউন্ড স্বার্থ আদায়ে ব্যাস্ত। একাজে তারা যে শক্তি ব্যয় করেছেন তাতে মাটির কিংয়াদাংশ ফুলে উঠেছে।
এব্যাপারে একজন সমালোচনা করে বললেন কার্টুনিস্ট নিজে তো এসবের দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না। তিনিও তো বর্তমান পরিষদে আছেন।
এব্যাপারে কার্টুনিস্ট কুদ্দুস জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি দায় এড়ান নি। ভালো করে লক্ষ্য করলেই তার দায়িত্বের অবস্থা দেখা যাবে।
দেখা গেল উটপাখির আদলে আঁকা নেতার লেজের একগুচ্ছ নয়, একটা এড়া পালকে নিজেকে চিকন সূতা দিয়ে বেঁধে রেখেছেন। যে পালকে বাঁধা হয়েছে তার অবস্থানও খুব দুর্বল।
সবমিলিয়ে কার্টুনটি খুবই অর্থবহ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে বেশির ভাগ সাংবাদিক অভিমত ব্যাক্ত করেছেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বলেছেন, কিছুই হয়নি তা বলা যায়না। চাকরি হারানো সাংবাদিকদের পাওনা আদায় করেছি। করোনা কালে প্রায় দুই হাজার সাংবাদিককে অনুদান এনে দেওয়া হয়েছে। কল্যাণ ফান্ডের অনুদানের পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনা কালে বড়বড় গন মাধ্যম গুলো সাংবাদিক ছাঁটাইয়ের তালিকা করেছিল সেটা রুখে দেওয়া হয়েছে।
গঠনতন্ত্র আপডেট হয়েছে। ডুয়েল মেম্বারশিপ বাতিল করা হয়েছে। ইউনিয়নে অনুপ্রবেশকারী অসাংবাদিকদের বাদ দেওয়া হয়েছে। অনুপ্রবেশ আটকানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উপসংহারে বলা যায় সাংবাদিকদের এই সংগঠনে পেশাদার সাংবাদিকরা প্রায় সব ক্ষেত্রেই জয়লাভ করছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে সমৃদ্ধ হবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য// মার্চ ২১,২০২২//

Discussion about this post