মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা:
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসায়ী মিজানুর ও আরিফ হোসেন নামে দুই ভাইকে অপহরণের পর পৌনে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্যরা।
ডাকাত দলের সদস্যরা দুই ভাইকে হাত পা বেঁধে বেদম মারপিট করে নগদ টাকা ও ০৫টি মোবাইল ফোন নিয়ে মহাসড়কের পাশে ফেলে রেখে যায়। থানায় মামলার পর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি হাইয়েচসহ আন্তজেলা ডাকাত দলের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। এরা হলো সিরজগঞ্জ সদর উপজেলার গজারিয়া গ্রামের ইনসাব আলীর ছেলে সুমন মিয়া (৩২) এবং একই গ্রামের সোলাইমানের ছেলে শরীফুল হক )৩০)। পেশায় তারা গেরেজে থেকে যানবাহন মেরামতের শ্রমিক হলেও মুল পেশা তাদের ডাকাতি। আজ বৃহস্পতিবার মির্জাপুর থানা পুলিশ দুই ডাকাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন।
মির্জাপুর থানা পুলিশ সুত্র জানায়, গত মঙ্গলবার রাত দশটার দিকে দেওহাটা বাজারে মোবাইল ব্যাংকি ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ও তার ভাই আরিফ হোসেন দোকান বন্ধ করে সারা দিনের ব্যবসার এক লাখ ৭৬ হাজার টাকা নিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশ দিয়ে কুমারজানি আসতেছিলেন। এ সময় পিছন ধেকে একটি হায়েচ এসে তাদরে গতিরোধ করে ৭-৮ জনের ডাকাত দল ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের ইয়াবা ব্যবসায়ী বলে জোরপুর্বক হায়েচে উঠান। পরে তাদের হাত পা বেঁধে পৌনে দুই লাখ টাকা নিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের জামুর্কি এলাকায় ফেলে চম্পট দেয়।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বাদী হয়ে গতকাল বুধবার মির্জাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডাকাতির হাইয়েচসহ দুই ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে। জিঞ্জাসাবাদে তারা ডাকাতির ঘটনা স্বীকার করেছে বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবুল খায়ের বাশার জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে দেওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. গিয়াস উদ্দিন এবং মির্জাপুর থানার এসআই মো. জহিরুল ইসলাম জহির বলেন, ডাকাতির মামলার পর টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সানতু পিপিএম, সহকারী পুলিশ সুপার (মির্জাপুর নাগরপুর সার্কেল) এইচ এম মাহবুব রেজওয়ান সিদ্দিকী এবং মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোশারফ হোসেনের দিক নির্দেশনায় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে র্অপ সময়ের মধ্যে দুই ডাকাতকে গ্রেফতার এবং ডাকাতির কাজে ব্যব্হৃত একটি হাইয়েচসহ ৫টি মোবাইল ফোনসহ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তাদরে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে ম্যজিষ্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার জামুর্কি এবং পুষ্টকামুরি এলাকায় পুলিশ চেকপোষ্ট বসিয়ে আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্যরা হচ্ছে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার আনসার সিকদারের ছেলে রুবেল মিয়া (২৯), পটুয়াখালি জেলার গলাচিপা উপজেলার মোতালেব মৃধার ছেলে আলআমিন মৃধা (৩৮), একই জেলার পটুয়াখালি সদর কতোয়ালি থানার ইসমাইল হাওলাদারের ছেলে হাসানুজ্জামন হাওলাদার(৫৪), বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার আব্দুল হাকিমের ছেলে আবুল আলাম আজাদ (৪৪), টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলা সদরের পৌরসভার পুষ্টকামুরী সওদাগর পাড়া গ্রামের সাত্তার সওদাগরের চেলে নাইম হোসেন (২৭), মফিজ উদ্দিনের ছেলে শাহজাদা (২৬) এবং আসান আলীর ছেলে স্বপন (২৯)।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ডাকাত দলের সক্রীয় সদস্য সুমন ও শরীফুল ব্যবসায়ী দুই ভাইকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বলে অপহরণ করে এক লাখ ৭৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়। এ বিষয়ে মামলার পর দুই ডাকাত গ্রেফতারের পর মুল্য রহন্য উধঘাটন হয়েছে। এর আগে মহাসড়কে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় জামুর্কি থেকে আন্তজেলা ডাকাত দলের চার জন এবং পুষ্টকামুরি এলাকা থেকে তিন ডাকাতসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Discussion about this post