Print Date & Time : 22 April 2025 Tuesday 10:41 am

ডুবতে বসেছে কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দিরের সুনাম

ঐতিহ্যবাহী কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দির। রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু কর্তৃক ১৯২৬ সালে খুলনার পাইকগাছার ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ কপিলমুনিতে এ বিদ্যাপিঠ প্রতিষ্ঠিত হলেও দুঃখজনক হলেও সত্য যে বর্তমানে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে ১৯৬২ সালে স্থাপিত লেখা সম্বলিত বেতন রশীদে। এছাড়াও শিক্ষকদের মতানৈক্য অাভ্যন্তরীণ বিরোধ, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা সহ নানা সংকটে ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দির স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অনুসন্ধানে জানাযায়, নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে এর আগেও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার খবরের শিরোনাম হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যাপিঠ। 

সম্প্রতি কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দির স্কুল এ্যান্ড কলেজ, ডাকঘর-কপিলমুনি, খুলনা, স্থাপিত ১৯৬২ সাল লেখা বেতন রশীদে বিভিন্ন শ্রেণির বেতন ও পরীক্ষা ফি বাবদ অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকার অভিভাবক সহ সুশীল মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এমনকি ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ত্রুটিপূর্ণ বেতন রশীদকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভুল হিসেবে দাবি করলেও স্থানীয়রা সহ সচেতন মহল বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা এবং শিক্ষক কর্মচারীদের মতানৈক্যকে দায়ী করেছেন।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মোঃ করিব আহমেদ রশিদের বিষয়ে সত্যতা ও দায় স্বীকার করে বলেন, অনাকাঙ্কিত ঘটনাটি প্রিন্টিং মিস্টেক বলে দাবি করেছেন।

এদিকে ২০১৯ সালে ২৮ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের (নিরীক্ষা অসিঃ) যুগ্ম পরিচালক টুটুল কুমার নাগ বিদ্যালয় পরিদর্শন ও নিরীক্ষা সংক্রান্ত কর্মশালা পরিচালনার সময় তৎকালীন শিক্ষক প্রতিনিধি কার্ত্তিক চন্দ্র সরকারের অডিটের ব্যাপারে সাংবাদিকদের দেওয়া বক্তব্যকে ঘিরে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের একটি সূত্র আলোচিত ঐ শিক্ষক জনৈক কার্ত্তিক চন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে (ইনডেক্স নং-২৮৫২৬১) সহ-শিক্ষক বাংলা এর ব্যক্তিগত ত্রুটিপূর্ণ কাগজপত্র ও নিয়োগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

অনুসন্ধানে জানাযায়, ১৯৯৪ সালের জানুয়ারি মাসের ৮ তারিখে পত্রিকায় প্রকাশিত ১ম বিজ্ঞপ্তি ও ২০/০৯/১৯৯৪ তারিখ স্মাতক পাশ শিক্ষকের চাকুরী বৈধকরন বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে ২৭/০৯/১৯৯৪ সালে কার্ত্তিক চন্দ্র সরকারের নিয়োগ পদ্ধতি, ত্রুটিপূর্ণ সাক্ষাতকার বোর্ড, রেজাল্টসীটে সভাপতি ও ডিজি নমিনির স্বাক্ষর না থাকাসহ বৈধ করনের বিষয়টিও ত্রুটিপূর্ন। 

সংশ্লিষ্ঠ বিদ্যালয় সূত্রটির দাবি, এর আগে বিভিন্ন সময়ের অডিটে বিষয়টি আমলে আসলেও অদৃশ্য ক্ষমতাবলে বহাল তবিয়তে রয়েছেন প্রভাবশালী ওই শিক্ষক। তবে সম্প্রতি শিক্ষকদের ব্যক্তিগত কাগজপত্র শিক্ষা অধিদপ্তরের বিশেষ শাখায় পাঠানোর নির্দেশনা আসায় বিষয়টি পুনরায় নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

এব্যাপারে জানতে কার্ত্তিক চন্দ্র সরকারের ব্যবহৃত ব্যক্তিগত ০১৭১৪-৩০৪৪৯১ নম্বরে ফোন দিলে তার স্ত্রী জানান, তিনি (কার্ত্তিক চন্দ্র সরকার) বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। সে কারনেই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

সর্বশেষ দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বিদ্যাপিঠ কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দিরের সকল সংকট নিরসনের মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠানের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে সংশ্লিষ্টদের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অভিভাবকবৃন্দ সহ স্থানীয়  সচেতন মহল।

বা//দৈনিক দেশতথ্য// ১০ নভেম্বর ২০২২//