আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জিয়া পরিবার পুরোটাই একটি খুনি পরিবার। তারা মানুষ খুন আর দূর্ভোগ ছাড়া আর কিছুই চায় না।
শুক্রবার সকালে কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, পুলিশকে যেভাবে মাটিতে ফেলে পিটিয়ে মারলো, মারতে মারতে যখন সে বেহুশ হয়ে গেছে তখন তার মাথা থেকে হেলমেট ফেলে দিয়ে মাথায় কুপালো। এরা হচ্ছে বিএনপি নেতা। আমরা কোন দেশে বসবাস করছি! পুলিশ হাসপাতালের মধ্যে ঢুকে হামলা চালিয়ে এম্বুলেন্স পোড়ানো হলো। সেখানে পুলিশদেরও আহত করা হলো। এমনকি সাধারন রোগী বহনকারি অ্যাম্বুলেন্সের উপর হামলা করা হলো। এই হচ্ছে বিএনপি-জামাতের চরিত্র। তাদের উপর জনগণের অস্থা বিশ্বাস থাকবে কিভাবে? এদের আন্দোলন মানেই জ্বাালাও পোড়াও।এদের শিক্ষাটা বোধহয় ইসরাইলের কাছ থেকে নেওয়া। ইসরাইলয়েরা হাসপাতালে বোম্বিং করে নারী শিশু রোগীদের আহত করেছে।সেখানেও কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সের উপর আক্রমণ হয়েছে। ছোট ছোট শিশুসহ যেভাবে মানুষ হত্যা করছে। সেখানে লাশের শারি বয়ে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জামাত-বিএনপি বোধহয় ওদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে চলে। এখন তারা আউট সোর্সিং আন্দোলন শুরু করেছে। কিছু ড্রাগ অ্যাডিকটেড ও সমাজের অবাধ্য লোকজন দিয়ে তাদের হাতে টাকা দিয়ে আগুন সন্ত্রাস চালাচ্ছে। আবার এক যুবদল নেতা সরাসরি বাসে আগুন দিতে গিয়ে ধরা খেয়েছে। অনেকস্থানে জনগণও এসব সন্ত্রাসীদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছে। তারপরও এদের লজ্জা হয়না। গতকাল ও পরশু চাল বোঝাই গাড়ীতে আগুন দিয়েছে। দেশের মানুষ যে খাবার খাচ্ছে তা ওদের পছন্দ হচ্ছে না। ঠিক পাকিস্তানিরা এভাবে ঘোলা ভরা ধান পুড়িয়ে দিয়েছিল। টুঙ্গিপাড়ায় আমাদের বাড়িও আগুন দিয়ে পুড়িয়েছিল। সারা গ্রামকে গ্রাম পুড়িয়েছে। জামাত-বিএনপি’র রাজনৈতিক শিক্ষা ওই সমস্ত জায়গা থেকে হয়েছে। এরা মানুষের জন্য কিছু করতে চায় না।
শেখ হাসিনা বলেন, নিজের শাসনামলের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন,৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা দেশের অনেক উন্নয়ন করেছিলাম। বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় আসার পর আমরা দেশটি যেখানে রেখে গিয়েছিলাম সেখান থেকে আবার পিছিয়ে পড়েছিল। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা কমে গিযেছিল, বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গিয়েছিল। একে একে সবকিছ’ আবার পিছন দিকে চলে গিয়েছিল। আমাদের ছিল ভাতের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। আর সে আন্দোলনে আমরা সফল হয়েছি। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটালীপাড়ার নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেন,আমি মূল শক্তি ও সাহস হচ্ছে টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়াবাসি। আর বাংলাদেশের জনগণতো আছেই। এজন্য আমি সর্বক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছি। আপনাদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। আপনারা আমার নির্বচনী এলাকার দায়িত্ব নিযেছেন বলেই আমি সারাদেশের কথা ভাবতে পারছি। আগামী ৭ জানুয়ারী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আপনারা আমাকে প্রার্থী করেছেন। আগামী ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হবে। এরআগে ভোট চাওয়া যায় না। নির্বাচনী একটি শৃক্সখলা আছে। আমাদের সেই শৃক্সখলা মেনে চলতে হবে। আমরা নির্বাচনকে একটি শৃক্সখলার মধ্যে নিয়ে এসেছি। আমরা আইন পাশ করে এবারই প্রথম নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি। এটাকে স্থায়ীভাবে রূপ দেওয়াটাই আমাদের উদ্দেশ্য।
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহম্মেদ, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি শহীদ উল্লা খন্দকার, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন আয়নাল হোসেন শেখ বক্তব্য রাখেন। এসময় বাগেরহাট -১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, খুলনা -২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তম্ময়,যুব লীগের যুগ্ম সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, জেলা আওযামীলীগ সভাপতি মাহবুব আলী খান, সাধারন সম্পাদক জিএম সাহাব উদ্দিন আজম, প্রধানমন্ত্রীর সহকারি নাজমা আক্তর, সহকারি একান্ত সচিব গাজী হাফিজুর রহমান লিকু সহ কোটালীপাড়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা শুরু’র আগে দু’দিনের সফরের দ্বিতীয় দিন নিজ নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ
হাসিনা নেতাকর্মীদের সাথে এ মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।
এরআগে শেখ হাসিনা সকাল পৌনে ১০টায় টায় টুঙ্গিপাড়ার নিজ বাসভবন থেকে কোটালীপাড়া আওয়ামীলীগ অফিসে এসে পৌছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রুবার বিকেল ৪টায় অবিরাম বর্ষণ ও বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে দু’দিনের ব্যক্তিগত সফরে সড়ক পথে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আসেন। টুঙ্গিপাড়ায় পৌছে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তাবক অর্পণ করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব
এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাযজ্ঞের শিকার অন্যান্য শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহাপাঠ ও মোনাজাতে অংশ নেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি তার নিজ বাসভবনে চলে যান এবং সেখানে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আওয়ামীলীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে
দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন। টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাসভবনে রাত্রিযাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে কোাটালীপাড়ায় কর্মসূচি শেষে আবারও সড়ক পথে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে তিনি রওনা হন । টুঙ্গিপাড়ায় অবস্থানের পর শুক্রবার বিকেলে প্রদানমন্ত্রীর ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post