সুদীপ্ত শাহীন, লালমনিরহাট: খুনিয়াগাছ তিস্তার গহীন বালু চরে প্রথমবারে মত ৯ একর জমিতে গাজর চাষ করে কৃষক দুলাল মুন্সী (৪৫) গং সাফল্য পেয়েছে। বালুমাটিতে গাজরের বাম্পার ফলন হয়েছে। ৭-৮ লাখ টাকা খরচ করে উৎপাদিত গাজর ১৫ লাখ টাকা বিক্রি করেছে। এসব চরের বালু জমিতে এর আগে কখনো চাষাবাদ করার ঝুঁকি কেউ নেয়নি। বালুতে গাজর চাষ হওয়ায় নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। গাজার সারা বছর সবজি হিসেবে দেশের বাজারে ও বর্হিবিশ্বের বাজারে চাহিদা রয়েছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করে আসতে পারে বৈদেশিক মুদ্রা। ইতিমধ্যে এবছর ২০ কোটি টাকা মূল্যের তিস্তা চরের উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া রফতানি মুরু হয়েছে।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে স্মার্ট কৃষি প্রয়োজন। বাংলাদেশের অর্থ কৃষিনির্ভর অর্থনীতি। শতকরা ৮৫ ভাগ মানুষ গ্রামে বসবাস করে থাকে। এই ৮৫ ভাগ মানুষ কোন না কোন ভাবে কৃষি কে জীবিকা করে বেঁচে আছে। বর্তমান সরকার জেলার প্রতিটি গ্রামে বিদ্যূত পৌচ্ছে দিয়েছে। এই বিদ্যূতায়নের ফলে প্রত্যন্ত গ্রামে এখন কৃষি নির্ভর ক্ষদ্র কলকারখানা গড়ে উঠছে। এমন কী এখন এই জেলায় সারা বছর সবজি ষ্টোরেজ করে রাখার ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। বিশেষায়িত এই ভেজিটেবল ষ্টোরেজে সারা বছর গাজর, তরমুজ, ফলমূল, সাকসবজি সহ প্রায় সকল সবজি জাতীয় ফসল মজুদ কওে রাখা যাবে। এতে করে সারা বছর সবজির ঘাটতি হ্রাস পাবে। অন্য দেশ হতে সবজি আমদানি হ্রাস পাবে। ইতোমধ্যে এবছর তিস্তা চরের উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া বিদেশে রফতানি শুরু কয়েছে। রফতানি কারক ৩/৪ টি প্রতিষ্ঠান ২০ কোটি টাকা মূল্যের মিষ্টি কুমড়া বিদেশে পাঠানোর অর্ডার পেয়ে রফতানি শুরু করেছে।
১২ লাখ মেঃটনঃ ধারণ ক্ষমতার এই ভেজিটেবল ষ্টোরেজের সবজি মজুদ করার সুবিধা কে কাজে লাগিয়ে তিস্তা চরের মানুষ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সবজি চাষাবাদ শুরু করেছে। এ বছর বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গাজর, তরমুজ, মিস্টি কুমড়া, শসা, আলু, মরিচ, পিয়াজ, রসুন, টমেট সহ নানা সবজি জাতীয় ফসল ব্যাপক হাওে চাষাবাদ করেছে। তিস্তার বিশাল বিশাল মরুভুমির মত চরে এ সব আবাদ হচ্ছে। তিস্তা নদীতে এখন ১২ মাসে মাত্র দুই মাস পানি থাকে। তারপর বছরের প্রায় ১০ মাস ধূ ধূ বালু চওে পরিণিত হয়ে যায়। সেই সব বালু জমিতে এখন কৃষক চাষাবাদ শুরু করেছে। দেশ স্মার্ট কৃষির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তিস্তার চরে এবারে চিনা, গম, ভুট্টা, সরিষা, ডেমশি, নানা জাতের শাক, কাউন প্রভূতি চাষ করে লাভবান হয়েছে কৃষক। এবছর অনুকূল আবহাওয়া থাকায় ও আকষিক বন্যা বা উজানের পানির ঢল না আসায় কৃষক স্বস্তিতে তাদের উৎপাদিত ফসল জমি হতে তুলতে পেয়েছে। সবজি চাষে সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থানের। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কৃষক এক সাথে হয়ে যেমন চাষাবাদ করেছে তেমনি ব্যবসায়ীরা সবজি চাষে বিনিয়োগ করে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষাবাদ করেছে।
কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হামিদ জানান, বর্তমান সরকারের ঘরে ঘরে বিদ্যূত পৌচ্ছে দেয়ার সুফল কৃষক পেতে শুরু করেছে। এখন গ্রামের মানুষ বৈদূতিক সেচ সুবিধা ও সৌর বিদ্যূতের সেচ সুবিধা নিয়ে বালুর চরেও চাষাবাদ করছে। জেলায় সবজি চাষে বিপ্লব ঘটেছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//

Discussion about this post