এই ছবিটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রাপ্ত আলোকচিত্রী নীতিশ রায়ের অমর কীর্তি।
১৯৭১সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে এই ছবিটি তিনি ক্যামেরাবন্দী করেছিলেন। জামালপুর-শেরপুর অঞ্চলের আসাম-মেঘালয়ের গারো পাহাড়ের সীমান্তবর্তী এলাকায় হাজং সম্প্রদায়ের বসতি।
হাজং সম্প্রদায়ের এক
‘তৃষ্ণার্ত রমনী নদীর পানি পান করছেন। তার কোলের তৃষ্ণার্ত শিশু মাতৃদুগ্ধ পান পান করছে।’ পানিতে ভাসমান সাদা রাঙের বস্তুগুলো হচ্ছে মানুষের মৃতদেহ।
নীতিশ রায় ১৯৪৪ সালে শেরপুর শহরের নয়আনী বাজার এলাকায় প্রয়াত নন্দহরি রায়ের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি সৌখিন আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ষাট, সত্তর ও আশির দশকে আলোকচিত্র জগতে তিনি ছিলেন একজন নক্ষত্র। ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ভারতে চলে যান। ওই বছরের ১৬ জুন মুজিবনগর থেকে প্রকাশিত ‘জয় বাংলা’ পত্রিকার প্রেস ফটোগ্রাফার হিসেবে যোগদান করেন। সত্তর থেকে আশির দশক পর্যন্ত ইত্তেফাক, সংবাদ ও মাসিক পত্রিকা ফটোগ্রাফিসহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সীমিত সুযোগ-সুবিধার মধ্যেও তার ছবি বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ও বিশ্বের অনেক দেশে প্রদর্শিত হয়েছে এবং পুরস্কার পেয়েছে। ১৯৮২ সনে জাপানে অনুষ্ঠিত সপ্তম এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায় নীতিশ রায়ের ছবি ‘তৃষ্ণা’ ইয়াকুল্ট পুরস্কার লাভ করে। শিল্প-চেতনা সমৃদ্ধ আলোকচিত্রী নীতিশ রায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন কৃষ্টি প্রবাহ ও ত্রিসপ্তক নাট্যগোষ্ঠীর সঙ্গেও জড়িত ছিলেন এবং অভিনয়ে অংশগ্রহণ করতেন। নিঃসন্তান সাংবাদিক নীতিশ রায় এর স্ত্রী কবি সন্ধ্যা রায়। নীতিশ রায় ৭৫ বছর বয়সে ২০১৭ সালের ৮ জুন তিনি পরলোক গমন করেন।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য //আগস্ট ২৫,২০২২//

Discussion about this post