Print Date & Time : 23 April 2025 Wednesday 1:22 pm

দল নেই, তবুও নির্বাচনে সিলেটে  বিএনপির ৭ নেতা

সিলেট অফিস: উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে সিলেটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৭ নেতা। ফলে এ নিয়ে গোটা সিলেট জুড়ে আলোচনা সমালোচনার শেষ নেই। ইতিমধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে তাঁদের প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা করেছেন বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা।

প্রতিদ্বন্দ্বী ৭ প্রার্থীর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে চারজন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন। অবশ্য বিশ্বনাথ ছাড়া আর কোনো উপজেলায় বিএনপির কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হননি।

আর দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সিলেট জেলা বিএনপি।

বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির যে চার নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাঁরা হলেন- সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি সুহেল আহমদ চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গৌছ খান, তাঁর চাচাতো ভাই যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সেবুল মিয়া ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা সফিক উদ্দিন। তাঁদের মধ্যে গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় সুহেল আহমদ চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কারর করা হয়েছিল। তাঁর বহিষ্কারাদেশ এখন পর্যন্ত প্রত্যাহার করা হয়নি।

এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মো. কাওছার খান ও খাজাঞ্চি ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রব সরকার।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বেগম স্বপ্না শাহিন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।

চেয়ারম্যান প্রার্থী যুক্তরাজ্য বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেবুল মিয়া বলেন, এলাকার মানুষের চাওয়ার কারণে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। অনেক বিএনপি নেতা-কর্মীরাও নির্বাচনে অংশ নিতে বলেছেন। তাদের দাবি-যেহেতু বিএনপি নেতাকর্মীরা নির্বাচনে ভোট দিবে, সেহেতু নিজেদের একজনকে দিতে পারে। সেই দাবি থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। এ ব্যাপারে দল কোনো সিদ্বান্ত নিলে নিতে পারে। আমার কিছু করার থাকবে না।

অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গৌছ খান বলেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দলের সিনিয়র নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এখনও অনেক সময় বাকি আছে। আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্বান্ত হবে।

তবে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে কারো সাথে কোনো আলোচনার সুযোগ নেই বলে জানিয়ে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে। বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্ষদ স্থায়ী কমিটি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটাই চূড়ান্ত। এসব পাতানো নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। এসব নির্বাচনে প্রশাসন প্রভাবিত থাকে। জনগণের মতামতের মূল্য দেওয়া হয় না। যতদিন পর্যন্ত দেশে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ না এসেছে, সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না ততদিন আমরা নির্বাচনে যাবো না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার বিষয়ে দলের সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। তাই দলের নেতাদের সবাই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেবেন। এরপরও কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, সিলেট বিভাগের চার জেলার মধ্যে সিলেটের সদর, দক্ষিণ সুরমা, বিশ্বনাথ ও গোলাপগঞ্জ উপজেলায় প্রথম ধাপে নির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২২ এপ্রিল, ভোট হবে আগামী ৮ মে।

খালিদ সাইফুল // দৈনিক দেশতথ্য // ১৯ এপ্রিল ২০২৪