গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থা অন্যতম প্রধান দুই আ লিক সড়ক।
কয়েকদিনের টানা বর্ষণে মাত্র ১ কিলোমিটার চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আরো চরম আকার ধারণ করেছে সড়কের দুটো। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনাও। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিল্প-কারখানার শ্রমিক, ব্যবসায়ী, পরিবহন শ্রমিকসহ লাখ লাখ মানুষ।
এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার ধামরাই-কালিয়াকৈর, কালিয়াকৈর-ফুলবাড়িয়া-মাওনা, সফিপুর-বড়ইবাড়ী, মৌচাক-ফুলবাড়িয়াসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আ লিক সড়ক রয়েছে।
এর মধ্যে উপজেলা এলজিইডি অফিসের আওতায় অন্যতম দুটি প্রধান সড়ক হচ্ছে সফিপুর-বড়ইবাড়ী ও মৌচাক-ফুলবাড়িয়া সড়ক। প্রতিদিন এপথে স্থানীয় ছাড়াও পার্শবতী উপজেলাসহ ময়মনসিংহ জেলার হাজার হাজার ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করে। চলতি বছর সফিপুর-বড়ইবাড়ী সড়কের সংস্কার করা হলেও অল্পকিছু অংশ বাকী থাকে সংস্কার কাজ। প্রায় ৮ কোটির বেশি টাকা ব্যয়ে বাকী ৬২৩ মিটার সড়কের সংস্কার শুরু করে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কাজ শুরু হতে না হতেই ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ ফেলে চলে যায়। আর সংস্কারের অভাবে কার্পেটিং উঠে সড়কের ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। ওই সড়কের সফিপুর থেকে বোর্ডবিল পর্যন্ত মাত্র আধা কিলোমিটার নাজুক অবস্থা। অপরদিকে প্রায় ২১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য মৌচাক-ফুলবাড়িয়া সড়ক। এর মধ্যে সংস্কার কাজ বাকী ছিল ২ কিলোমিটার সড়ক। সে সড়কেও সংস্কারের অভাবে কার্পেটিং উঠে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। ওই সড়কের মৌচাক থেকে ময়দার ঢাল পর্যন্ত মাত্র আধা কিলোমিটার নাজুক অবস্থা। কয়েকদিনের টানা বর্ষণে দুটি সড়কের মাত্র ১ কিলোমিটার খানাখন্দ ও ছোট-বড় গর্তে হয়ে আরো চরম আকার ধারণ করেছে। এতে একদিকে যেমন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে, অপরদিকে প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনাও। তবে রাঁতের আধাঁরে দুর্ঘটনা ঘটছে বেশি। এছাড়াও দুটো সড়কেই চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে পথচলা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্কুল-কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিল্প-কারখানার শ্রমিক, ব্যবসায়ী, পরিবহন শ্রমিকসহ লাখ লাখ মানুষ।
অটোরিকশা চালক নুরু মিয়া বলেন, সড়কের এমন খারাপ অবস্থার কারণে ঘন ঘন নষ্ট হচ্ছে গাড়ি। অপর টেম্পু চালক আব্দুল খালেক বলেন, মাত্র একটু অংশ খারাপের জন্য পায়ে হেঁটেই চলাচল কষ্ট হলেও লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সবুজ মিয়া জানান, সড়কের নাজুক অবস্থার কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। এছাড়াও ব্যবসাসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ ক্ষতির স্মুখিন হচ্ছেন। শিক্ষার্থী মাহফুজ মিয়া, আলামিন হোসেন, রেদওয়ান হোসেন, জোসনা আক্তার, মনি আক্তারসহ অনেকেই জানান, সড়ক দুটো খুবই নাজুক অবস্থা। ফলে সময় মতো গন্তব্যস্থানে পৌছাতে পারছেন না শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষ। তবে অতিদ্রুত দুটি সড়কের প্রবেশ মুখ মেরামত করে জনদুর্ভোগ লাঘবসহ দুর্ঘটনা নিরসনের দাবী এলাকাবাসীর।
উপজেলা প্রকৌশলী বিপ্লব পাল জানান, সফিপুর-বড়ইবাড়ী সড়কের ৮ কোটির বেশি টাকার টেন্ডার ছিল। কিন্তু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ করেনি। ফলে ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও আগের টেন্ডার বাতিল করা হয়। বর্তমানে নতুন টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও মৌচাক-ফুলবাড়ীয়া সড়কের কিছু অংশ সংস্কার কাজ বাকী ছিল। যেহেতু সেখানে খারাপ হয়েছে, সেহেতু ওই অংশ টেন্ডারের আওতায় আনা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, বৃষ্টির কারণে ওই দুটিসহ যে সড়কগুলো সমস্যা হচ্ছে, সেগুলো দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও যে সড়কগুলোতে ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই, সেগুলো চিহ্নিত করা হচ্ছে। পরবর্তীতে সেসব সড়কে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হবে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//