এমসি রিপোর্ট পর্যালোচনা ছাড়াই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ির এস আই আব্দুল আলীম আসামীদের পক্ষ নিয়ে আদালতে দূর্বল চার্জশীট প্রদান করেছেন।
খুলনার পাইকগাছায় জমিজমা সংক্রান্তে বিরোধে সৃষ্ট একটি সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার আদালতে দাখিলকৃত চার্জশীট মন:পুত না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
সম্মেলনে ঘটনার শিকার গফুরুন্নেছা বেগম ওরফে খুকুমনি দাবি করেছেন, ঘটনায় এমসি রিপোর্ট পর্যালোচনা ছাড়াই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ির এস আই আব্দুল আলীম আসামীদের পক্ষ নিয়ে আদালতে দূর্বল চার্জশীট প্রদান করেছেন। এসময় গফুরুন্নেছার পক্ষে তার ছেলে ইউনুচ লিখিত বক্তব্যে বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা টাকার বিনিময়ে তার প্রতিপক্ষ আসামীদের গ্রেফতার না করে সতর্কবার্তা, তাদের সাথে অসদাচারণ, প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে আদালতে চার্জশীট প্রদান করেছেন।
এদিকে কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে রবিবার (২২ মে) কপিলমুনি প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের ঘটনায় পক্ষে-বিপক্ষে ঘটনার মুল বিষয় নিয়ে এলাকাময় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বলছেন, মামলার বাদী পক্ষ চার্জশীটে আসামীদের বিরুদ্ধে শক্ত ভীত তৈরী করতে না পেরে মূল ঘটনাকে আড়াল করে তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আব্দুল আলীমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলায় ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বাদী পক্ষ ও স্বাক্ষীদের বক্তব্য, এমসি রিপোর্টে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের মন্তব্যসহ প্রকৃত ঘটনার উল্লেখ পূর্বক অভিযুক্তদের সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি স্পষ্ট করে তিনি আদালতে চার্জশীট দাখিল করেছেন। এরপরও চার্জশীট মন:পুত না হলে আদালতে নারাজী পিটিশনের সুযোগ রয়েছে।
এসময় তিনি আরো বলেন, মামলার রাতেই আসামীদের একজন রায়হানকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তার গ্রেফতারের খবরে বাকীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এরপরও বাদীকে সাথে নিয়ে আসামীদের গ্রেফতারে সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার অভিযান চালানো হয়। এক পর্যায়ে আসামীদের ৪ জন আদালতে আত্নসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে ২ জনের জামিন মঞ্জুর ও ২ জনকে জামিন না মঞ্জুর করে জেল-হাজতে প্রেরন করেন। আসামীদের ১০ জনের মধ্যে ২ জনের সম্পৃক্ততা না থাকায় তাদেরকে বাদ দিয়ে এবং ৩ জনকে পলাতক দেখিয়ে গত ৩০/৪/২০২২ আদালতে চার্জশীট প্রদান করা হয়েছে যার নং-৬৯ বলেও জানান তিনি। ঘটনায় অর্থের বিনিময়ে পক্ষপাতের কোন সুযোগ নেই বলেও দাবি তার।
সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ইউনুচ আরো দাবি করেন, উত্তর সলুয়া মৌজার বি আর এস ৬৪ ও ১৬৪ খতিয়ানের ৬৭ ও ৬৮ দাগের ৮৪ শতক জমির মধ্যে তার প্রাপ্য ৪০ শতক। গত ২ এপ্রিল ঘটনার দিন তার প্রতিপক্ষ অহেদ আলী গং উক্ত জমিতে জবরদখল পূর্বক ঘেরা-বেড়া দেওয়ার সময় তারাসহ জমির অন্যান্য শরীকগণ এতে বাঁধা দেন। এসময় তারা পরিকল্পিতভাবে ঘেরা-বেড়ার কাজে ব্যবহৃত দা, শাবল, কাচি, লাঠি-সোটা নিয়ে তাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। এতে গফুরুন্নেছাসহ অন্যান্যদের উপর হামলা করে গুরুতর রক্তাক্ত যখম করে। এক পর্যায়ে আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। ঘটনায় তাদের গুরুতর আহত দু’জনের মাথায় ও হাতে সেলাই দেয়া হয়। এঘটনায় থানায় মামলা নং-৫৮/২২। এরপর মামলায় টাকার বিনিময়ে তদন্ত কর্মকর্তা ঐ দায়সারা চার্জশীট দাখিল করেন। সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে তারা অহেদ গং কর্তৃক তাদের রেকর্ডীয় সম্পত্তির দখল ঠেকাতে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//মে ২৫, ২০২২//

Discussion about this post