জেলা ও উপজেলা সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ
অব্যাহত পাহাড়ী ঢলে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত রয়েছে। ধীরগতিতে দিনের প্রথম ভাগে পানি কিছুটা কমলেও থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে বাড়ছে অসহনীয় দূর্গতি। বৃহস্পতিবার (১৯ মে) সকাল ১১টার দিকে পাহাড়ি ঢল ও বন্যার তোড়ে নিমিষেই ভেঙে পড়েছে ছাতক-সুনামগঞ্জ সড়কের দোয়ারাবাজার উপজেলাধীন দোহালিয়া ইউনিয়নের পানাইল গ্রামের পশ্চিমাংশের দীর্ঘ ব্রিজটি। একই ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর ব্রিজটিও আংশিক ধসে গেছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে জেলা শহর সুনামগঞ্জের সাথে ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার সড়ক যোগাযোগ। এছাড়াও অধিকাংশ গ্রামিণ রাস্তাঘাটে কোমর ও বুকসমান পানি থাকায় জেলা ও উপজেলা সদরের সাথে ৯ ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পরিবার পরিজন ও গবাদি পশুপক্ষী নিয়ে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন বগুলা, বাংলাবাজার, লক্ষীপুর, সুরমা, দোহালিয়া, নরসিংপুর ও দোয়ারা সদরসহ উপজেলার ৯ ইউনিয়নের কর্মজীবীসহ পানিবন্দি লাখো মানুষ। অথৈ পানির বুকে দাঁড়িয়ে আছে সেবাবঞ্চিত সুরমা ইউনিয়নের বৈঠাখাই কমিউনিটি ক্লিনিকটি। নিজেই সেবা পাচ্ছেনা।
পানিতে পচে গিয়ে বিনষ্ট হয়েছে বন্দেহরি, গোজাউড়া ও নাইন্দার হাওরসহ সবকটি মাঠের অধিকাংশ বোরো ফসল ও শাকসবজি। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উrপাদিত মাঠের পাকা ধান ঘরে তুলতে না পারায় আহাজারি থামছেনা প্রান্তিক বর্গাচাষীসহ ভূক্তভোগী কৃষকদের। ঘরের মেঝেতে হাঁটু ও কোমরসমান পানি থাকায় উঁনুনে হাড়ি বসছেনা অনেক বানভাসি পরিবারের। ভেসে গেছে অর্ধশতাধিক পুকুরের কোটি টাকার মাছ ও মাছের পোনা। ৮০ ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জলমগ্ন থাকায় বন্ধ রয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে দোয়ারাবাজার সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে বন্যাদূর্গত অসহায় ও অসচ্ছল পরিবারের মাঝে শুকনা খাবারসহ প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছেন সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারাবাজার) আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক ও সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। পরে বন্যাদূর্গত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন তারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবাংশু কুমার সিংহ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান আল তানভীর আশরাফী চৌধুরী বাবু, বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ।
এদিকে দোয়ারাবাজার উপজেলাকে অচিরেই দূর্গত এলাকা ঘোষণা করে পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন উপজেলার সচেতন নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবাংশু কুমার সিংহ জানান, বন্যার্তদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও মোকাবলায় প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও সচেষ্ট ভূমিকা পালন করছেন। অপরদিকে কৃষকদের অরক্ষিত ধান গুদামে সংরক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
আল-হেলাল

Discussion about this post