এবছরের শেষে অথবা আগামী বছরের শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থীদের তৎপরতা শুরু হয়েছে আরো আগেই । দিন দিন তৎপরতা বাড়ছে। ৭৫কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনে ভোটের মাঠে এবার সবার আগেই মাঠে নামে আওয়ামী লীগ।বর্তমান উজ্জীবিত এই উপজেলার ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। তবে দলের নেতাদের মধ্যকার অন্তদ্বর্ন্দ্ব এখনও কাটেনি। বিএনপি নির্বাচনে আসবে কিনা তা এখনো পরিষ্কার না হলেও বসে নেই সম্ভাব্য প্রার্থীরা, তবে দলের সিদ্ধান্তহীনতায় কিছুটা হতাশ তারা।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, দৌলতপুরে মোট ভোটার ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯০ হাজার ৩৭০ জন ও নারী ভোটার হচ্ছে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৪৭৫ জন।
জেলার ৪ আসনের মধ্যে দৌলতপুর একটি অন্যতম বড় আসন। তাই আওয়ামী লীগ-বিএনপি বা জোট-মহাজোটের সম্ভাব্য প্রার্থীর ছড়াছড়ি এ উপজেলায়। অসংখ্য মনোনয়ন প্রত্যাশী আলোচনায় থাকায় চাপে পড়তে পারে ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগ ও বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। শেষ পর্যন্ত দলীয় মনোনয়ন কে পাবেন, তা নিয়ে উদ্বেগে আছে সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধান করে ও নেতাদের সাথে কথা বলে আলোচনায় থাকা মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ভিড় থেকে বাছাইয়ে উঠে এসেছে কুষ্টিয়া-১ আসন দৌলতপুরের সম্ভাব্য প্রাথীদের তালিকা।
এই তালিকায় আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও দৌলতপুর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড. আ.কা.ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ্। সাবেক সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরী। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আফাজ উদ্দিন আহমেদকে হারিয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। একই পরিবার থেকে মনোয়ন প্রত্যাশী হিসেবে নাম উঠে এসেছে বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরীর, তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ দৌলতপুর উপজেলা শাখার সভাপতি। এছাড়াও এই তালিকায় রয়েছেন দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাড. শরিফ উদ্দিন রিমন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত আফাজ উদ্দিন আহমেদ এঁর ছেলে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. এজাজ আহম্মেদ মামুন ও একই পরিবারে আরিফ বিশ্বাস বড় ভাই নাজমুল হুদা পটল বিশ্বাসের জন্য মনোনয়ন চাচ্ছেন এমনটিও শোনা যাচ্ছে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের তথ্য গবেষনা উপ-কমিটির সদস্য ও দৌলতপুর আওয়ামীলীগের সদস্য ড. মো. মোফাজ্জেল হক। তিনিও কুষ্টিয়া ১ দৌলতপুর আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় আছেন।
এদিকে একসময়ে বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই আসনটি পুনরুদ্ধার করতে মাঠ পর্যায়ে আছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সাবেক রাজনীতিবিদ ডাক ও টেলি যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ও কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত আহসানুল হক পচা মোল্লার ছেলে সাবেক সংসদ সদস্য রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা। আছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রবীন নেতা আলতাফ হোসেন ও বর্তমান উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক শহিদ সরকার মঙ্গল । তবে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকারও দৌলতপুরের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় আছেন ।এদিকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে মাঠে থাকবেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও কুষ্টিয়া জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক সাবেক খাদ্য প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য প্রয়াত কোরবান আলীর ছেলে শাহারিয়ার জামিল জুয়েল। তিনি বলেন গতবারে জাতীয় নির্বাচন থেকে ছিটকে পড়লেও এবার দলীয় মনোনয়ন নিয়ে মাঠে থাকবেন। নির্বাচন সামনে রেখে প্রতিদিন গণসংযোগও চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।থাকতে পারেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির জনসংযোগ বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয় যুবজোটের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল কবির স্বপন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এবার আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জাসদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা সবাই হেভিওয়েট। জাতীয় পার্টি ও জাসদের একক প্রার্থী থাকায় স্বস্তিতে রয়েছে এই দুই দলের নেতারা। তারা দুজনই নিয়মিত গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আলোচনায় থাকা মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
খালিদ সাইফুল,দৈনিক দেশতথ্য ,১৩ মার্চ ২০২৩