কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে জমির পাটক্ষেত খাওয়া ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষে বজলু মালিথা (৪৫) ও শরিফুল মালিথা (৪২) নামের দুইজন নিহত এবং ১০জন আহত হন।
আহতদের দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ভেড়ামারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে জালাল মালিথা (৪০) ও মন্টু মালিথা (৩৫) দু’জনকে সংকাটপন্ন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হতাহতদের বাড়ি দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলাপাড়া গ্রামে।
এই ঘটনার পর দৌলতপুর পুলিশ ১০জনকে আটক করেছে। উজ্বল সর্দারের বাড়ি থেকে একটি ওয়ান শুটারগান, একটি তরবারী ও ৬টি রামদা উদ্ধার করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনার অতিরিক্ত ডিআইজি নিজামুল হক মোল্লা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম, ভেড়ামারা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহসিন আল মুরাদ, দৌলতপুর থানার ওসি মজিবুর রহমান, দৌলতপুর থানার ওসি (তদন্ত) রাকিবুল হাসানসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
দৌলতপুর থানার ওসি মজিবুর রহমান জানান, গরুতে পাট খাওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় উজ্জল সর্দ্দার ও বজলু মালিথার মধ্যে মঙ্গলবার বাক বিতন্ডা হয়। এরই জের ধরে বুধবার বিকেলে পুনরায় তাদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে দু’জন নিহত হয়েছেন। ১০জনকে আটক করে জিঞ্জাবাদ করা হচ্ছে। ভেড়ামারা সার্কেলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহসিন আল মুরাদ জানান, উজ্জলের বাড়ি থেকে একটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। উজ্জলের গ্রুপের শীর্ষ ক্যাডার নয়নকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল বাদ আছর নিহতদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে উজ্জল সর্দারের ভাগ্নি ফরিদের পাটক্ষেতে যায় বজলু মালিথার পক্ষের লোক শ্যামলের গরু। এনিয়ে উজ্জল ও বজলুর মধ্যে বাক বিতন্ডা হয়।
বুধবার বিকেল ৫টার দিকে মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলাপাড়া জামে মসজিদের সামনে দু’পক্ষের আবারও বাক বিতন্ডা হয়। এর এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাঁধে।
সংঘর্ষ চলাকালে উজ্বল সর্দারের নেতৃত্বে ২০-২৫জন লোক আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বজলু মালিথা পক্ষের লোকজনের ওপর হামলা করে। প্রায় ঘন্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে গুলিবর্ষণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ধারাল অস্ত্র দিয়ে একে অপরকে আঘাতের ঘটনা ঘটে। এতে বজলু মালিথা গ্রুপের বজলু মালিথা ও শরিফুল মালিথা ঘটনাস্থলেই নিহত হন। উভয়পক্ষের পক্ষের ১০জন আহত হয়। এরমধ্যে জালাল মালিথা ও মন্টু মালিথার অবস্থা শঙ্কটাপন্ন।
এছাড়াও আহত হাসান মালিথা, আসাদ সর্দার, সাহাজুদ্দিন সর্দার, ওয়ারিশ সর্দার, ফরিদ খামারু, সাগর সর্দার, মুজা সর্দারকে দৌলতপুরসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা ও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//জুন ১৫,২০২৩//