দৌলতপুরে বেকার যুবকদের জীবন বদলে দিতে কাজ করছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণ প্রদান, প্রশিক্ষণের পরে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া, যুবকদের ঐক্যবদ্ধ করে যুবক্লাব গঠন, ক্লাবের মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে বিভিন্ন সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম গ্রহণসহ সার্বিকভাবে যুবকদের মাধ্যমে স্বনির্ভর দেশ গড়াই এই সরকারি প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশ্য।
আয়তনে দেশের বৃহত্তম উপজেলা গুলোর মধ্যে অন্যতম কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা। প্রায় ৮ লাখ জনসংখ্যার রয়েছ এই উপজেলায় আর দৌলতপুর উপজেলার হাজার হাজার বেকার যুবকের একমাত্র ভরসার ঠিকানা দৌলতপুর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর।
শিক্ষিত, বেকার যুবকদের বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে হাজার হাজার বেকার যুবকের তাদের নিজ নিজ আত্বকর্মী ও স্বাবলম্বী করতে নিরলস কাজ করে চলেছে উপজেলার মধ্যে কৃষি অফিসের পাশে এই দপ্তরটি ।
যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে ও অষ্টম শ্রেণী পাশ তাদের খুব সহজেই বিনামূল্যেই দিয়ে যাচ্ছেন এই সরকারি সেবা। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সাহায্য নিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে আত্বকর্মী ও স্বাবলম্বী হচ্ছেন অনেকে। বিশেষ করে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালিত যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিয়ে গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি পালন, মৎস্যসহ কৃষি সংশ্লিষ্ঠ বিষয় ৩ মাসের আবাসিক প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকেই এখন সফল উদ্যেক্ত ও আত্বকর্মী হয়েছেন।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত বিভিন্ন ট্রেডে অনাবাসিক প্রশিক্ষণ নিয়েও সহনির্ভর কর্মী হচ্ছেন অনেকে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, আইসিটি, রেফ্রিজেশন, ইলেক্ট্রনিক্স, বিউটিফিকশন ও আউট সোর্সিং।
উপজেলা যুব উন্নয়ন সূত্র জানায়, এখান থেকে এ পযর্ন্ত আবাসিক-অনাবাসিক মিলিয়ে প্রতিষ্ঠার পর থেকে মোট ৫ হাজার ৩৭৮ জন নারীসহ মোট ৯০৯৩ জন আত্বকর্মী বের হয়েছে। তারা এখন সকলেই স্বাবলম্বী।
শুধু তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েই ছেড়ে দেওয়া হয় না তাদের।
প্রশিক্ষণ শেষে নিজের খরচে যে কোন প্রকল্পের ৭০% কাজ করার পর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে সহজশর্তে ঋণ দেয় । দশ ভাগ কম সার্ভিস চার্জে ঋণ পরিশোধ করতে হয় মাসিক কিস্তিতে দুবছরে।
এছাড়া যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ সনদ থাকলে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ঋণ পাওয়া যায় কর্মসংস্থান ব্যাংকসহ অন্যান্য
ব্যাংকেও।
এই দপ্তরটি নিজ নিজ আত্বকর্ম করতে এ পর্যন্ত আত্বকর্মীদের মধ্যে যুব ঋণ বিতরণ করেছে ৮০ লাখ ৭৫ হাজার ৬৫৫ টাকা।
মনিরুজ্জামান নামে একজন আত্বকর্মী ও সফল উদ্যেক্তার খামারে গিয়ে দেখা যায়, যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিয়ে এবং সেখান থেকে ঋণ নিয়ে তিনি সফল খামারি হয়েছেন। তার খামারে ১০ গরু রয়েছে। তিনি তার খামারকে আরও প্রসারিত করতে চাইছেন। এই নাসিরউদ্দীন নামে একজন প্রশিক্ষণ নিয়ে ভার্মীকম্পষ্ট সার উৎপাদন করে সাবলম্বী হয়েছেন।
মনিরুজ্জামান, নাসিরউদ্দীন এর মত অনেকেই রয়েছে উপজেলায় যারা যুব উন্নয়নে প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন সফল আত্বকর্মী হয়েছেন।
দৌলতপুর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর উপপরিচালক শহীদ আল মেহেবুব বলেন, যুবকদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে যুব উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছি আমরা।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের এই দৌলতপুর উপজেলা টি পার্শ্ববর্তী জেলার মেহেরপুরের চেয়েও বড় এখানে যেমন জনসংখ্যা বেশি তেমন বেকার যুবক দের সংখ্যাও বেশি কিন্তু আমাদের আয়তন, জনসংখ্যা জেলার থেকে বেশি হলেও সব উপজেলার সমান আমাদের বরাদ্ধ যা আমাদের সেবা প্রদানের ক্ষেত্রেও অনেক সমস্যায় পরতে হয়। তাই আমরা চাই আমাদের বরাদ্দ টা যদি বেশি হয় আমরা সেবার পরিধি টা আরও প্রসার করতে পারতাম।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//অক্টোবর ৩১,২০২২//

Discussion about this post