শেখ সুদীপ্ত শাহীন, লালমনিরহাট:
ঘাটে মাঠে সবখানে ধানের ছড়াছড়ি। প্রথম দেখাতে মনে হবে স্বর্ণের ছোট ছোট টুকরো পথে ঘাটে পড়ে আছে। ধান কাটতে তীব্র শ্রমিক সংকট। তবুও উৎসবমুখোর পরিবেশে জমি হতে গোলায় ধান তুলতে ব্যস্ত গ্রামের প্রতিটি পরিবার। কৃষক পরিবারের কিশোররাও কৃষি শ্রমিকের সংকট নিরসনে পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। এই সপ্তাহটি বৃষ্টিপাতহীন কাটলে ৯০ ভাগ ফসল কৃষকের গোলায় নিরাপদে উঠবে। এ বছর লালমনিরহাট জেলায় ৪৮ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ৪.৩টন চাল উৎপাদন হবে। গত বছরের চেয়ে ধানের ফলন খুব ভাল হয়েছে। ধানের দামও বাজারে ভাল। কৃষকের মুখে হাসি। দেশের কৃষির অগ্রযাত্রায় এখন নারী কৃষি শ্রমিক নতুন ভরসা সৃষ্টি করেছে। আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশে স্মার্ট ও পরিশ্রমি নতুন প্রজন্ম। পরিবারের কোন কাজ ছোট নয়। আধুনিক কৃষির হাল ধরতে তারা প্রস্তুত।
তিস্তা নদীর অববাহিকায় লালমনিরহাট জেলা অবস্থিত। এই জেলার প্রধান ফসল ধান ও ভুট্টা। প্রতিটি গ্রামে উৎসবমুকোর পরিবেশে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। ধান এমন একটি ফসল প্রায় ১০/১২ দিনের ব্যবধানে দোলার সব জমির ধান পেকে যায়। একযোগে ধান পেকে যাওয়ায় তীব্র কৃষি শ্রমিকের সংকট দেখা দেয়। এই মৌসুমে একই সাথে হাওড়রাঞ্চলের ধানও পাকে। হাওড় অঞ্চলের কৃষিশ্রমিকের মুজরি এখানকার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। তাই কৃষি কাজের পেশাদার শ্রমিকরা হাওড়ে ধান কাটতে যায়। হাওড়ে এখনো উত্তরাঞ্চলের শ্রমিক নির্ভর কৃষি কাজ। উত্তরাঞ্চলের শ্রমিক গণ ধান কাটা মৌসুমে একটু বেশী আয়ের আশায় সেখানে কাজে যায়। এর কারনে আবার উত্তরাঞ্চলের ধান কাটার শ্রমিক সংকট সৃষ্টি হয়। এ বছর সেই আকার তীব্র হয়ে দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া কৃষকের অনুকূলে থাকায় এক যোগে ধান কাটা চলছে। ফলে শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষক পরিবার গুলো মহা বিপাকে। বাধ্য হয়ে কৃষক পরিবারের স্কুল কলেজগামী কিশোর যুবক গণ পরিবার কে ধান কাটতে সাহায্য করছে। বর্তমানে প্রতিটি গ্রামেই একই দৃশ্য চোখে পড়বে। জেলা সদরের উপকন্ঠে সারপুকুর ইউনিয়নের সারপুকুর গ্রামে ১টি কৃষক পরিবাওে শ্রমিক সংকটের কারণে পরিবারের স্কুল কলেজ পড়–য়া কিশোরদেও বাবার সাথে কাজ করতে দেখা গেছে। কিশোর যুবকরা খুব আনন্দের সাথে ধানকাটছে। এমন কী জিন্স প্যান্টসার্ট পড়ে বিদেশী শ্রমিকদেও মত ধান কাটছে। সংকটে পরিবার কে যথাসাধ্য সহায়তা করা একমাত্র উদ্দেশ্য।
জেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হামিদ জানান, এক যোগে বোরো ধান কাটার কাজ শুরু হয়েছে। তাই কৃষি কাজের শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। দেশে বর্তমান সরকারের আমলে নানামুখি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তাই ফসলের মাঠে রোদ- বৃষ্টিতে ঝুঁকি ও কষ্টকর কাজে শ্রমিকরা নিরুসাহিত হচ্ছে। বেশ কয়েক বছর ধরে ধানকাটা মৌসুমে কৃষি শ্রমিকের সংকট দেখা দেয়। তাই কৃষির আধুনিকায়নে শ্রম নির্ভশীলতা কমাতে হবে। কৃষিকে যান্ত্রিকরণ করতে হবে। কৃষি যান্ত্রিকরণ হলে ফসল উৎপাদনে ব্যয় হ্রাস পাবে।
নিউজ সেভেন ডটকম//আর//
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//

Discussion about this post