নারায়ণগঞ্জে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শোভাযাত্রা বের করতে গেলে বাধা দিলে এ ঘটনা ঘটনা ঘটে।
এ সময় পুলিশ ও ডিবির সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। বেধে যায় সংঘর্ষ। পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোড়ে। প্রতিউত্তরে পুলিশ মুহুর্মুহু টিয়ারসেল ও শর্টগানের গুলি ছোড়ে।
একপর্যায়ে নগরীর ডিআইটি, মন্ডলপাড়া, দেওভোগ, নিতাইগঞ্জ, ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে পুরো নগরী আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ওইসব এলাকার রাস্তাঘাট সাধারণ মানুষ শূন্য হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে সকল মার্কেট-বিপনী বিতান। থমকে যায় যানবাহন চলাচল। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো নারায়ণগঞ্জ।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টা থেকে বেলা সাড়ে ১২ টা দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শাওন নামে এক যুবদল নেতা নিহত হয়েছেন।
নিহত যুবদল নেতা শাওন ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের গোপাল নগর এলাকার শাহেদ আলীর ছেলে। সে গ্রিল ওয়ার্কশপে কাজ করতো। তার মরদেহ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক নাজমুল হোসেন।
এছাড়াও সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিক, বিএনপি ছাত্রদল যুবদলের শতাধিক গুলিবিদ্ধ ও মারাত্মক আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধসহ আহতরা হলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান,
জেলা যুবদলের আহ্বায়ক খোকন ফারুক খোকন, সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, জেলা যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাউদ্দিন চৌধুরী সালামত, সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সহিদুল ইসলাম স্বপন, যুগ্ম সম্পাদক শাহিন আহমেদ, মহানগর যুবদল নেতা সাহাদুল্লাহ মুকুল, মো. ইব্রাহীম, নাঈম মিরাজ, মো. মোতালিব, সুমন হোসেন, সাগর হোসেন, আবু সুফিয়ান, কায়সার হামিদ, নুরুল ইসলাম, নাসির উদ্দিন,
খোকন মিয়া, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি সুলতান মাহমুদ, যুগ্ম সম্পাদক রাকিব হাসান রাজ, সোনারগাঁ উপজেলা যুগ্ম আহবায়ক মনির হোসেন,পিয়ার হোসেন নয়ন, কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আব্দুল সাত্তার, দুপ্তারা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহত রমজান হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা ওমর ফারুক, মহানগর ছাত্রদল নেতা ইব্রাহিম, তুহিন, প্রিতম, ফারুক, পায়েল, মিনহাল, ইমন, সিমান্ত, মোক্তাদির মো. বাদল ভুল, নাবির হোসেন নবীন, রাসেল প্রধান, জুয়েল আরমান,
ফারুক হোসেন সুজন, মো. আকিব, মো. আলিব, শাহিন, জাহাঙ্গীর, রাজু, শরীফ, ইউনুস, সাগর, আব্দুস সালাম,মো. আখতার, মুন্না, মো. কাদির, শরীফুল ইসলাম, মো. সবুজ, মোমেন, শিহাব , শামসুল হক, মো. ইব্রাহিম, আশরাফুল, গার্মেন্ট শ্রমিক তাজুল ইসলাম,
এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধরা হলেন- শাহিন, জাহাঙ্গীর, রাজু, শরীফ, ইউনুস, সাগর, আব্দুস সালাম,মো. আখতার, মুন্না, মো. কাদির, শরীফুল ইসলাম, মো. সবুজ, মোমেন, শিহাব , শামসুল হক, মো. ইব্রাহিম, আশরাফুল,
দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র্যালীতে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ এডভোকেট সাখাওয়াত গণমাধ্যমকে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এদেশের প্রশাসন এক চোখা নীতিতে চলে।
তবে এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার গোলাম মোহাম্মদ রাসেল বলেন, তারা কোনো ধরনের পূর্বানুমতি ছাড়াই সড়ক অবরোধ করে কর্মসূচি পালন করছিলেন। একটি গণতান্ত্রিক দেশে কোন মিছিল মিটিং সমাবেশ করতে হলে পূর্বানুমতির প্রয়োজন আছে। কিন্তু বিএনপির সমাবেশ মিছিলের পূর্বানুমতি সম্পর্কে আমি জানি না। এছাড়া জেলা প্রশাসকের সাথে কথা হয়েছে, সেও জানে না। এতে বাধা দিলে পুলিশের ওপর চড়াও হয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল ফাটানো হয় জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পুলিশ তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার শেল ছোড়ে। সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশের অন্তত ১৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে পাঁচ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//সেপ্টম্বর ০১,২০২২//

Discussion about this post