বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, ‘এই নির্বাচন যথা সময়ে সংবিধান অনুযায়ী হবে। কে কোথায় চোরাগোপ্তা লুকিয়ে থেকে হুট করে উঠে এসে ভার্চুয়ালী কি বল্লো না বল্লো ওসব নিয়ে সরকারের কোন মাথা ব্যাথা নেই’। নির্বাচন বানচালের যে তৎপরতা চলছে তা কোনভাবেই সফল হবে না। বিএনপি নেতারা যে দেশী-বিদেশীদের চাপের কথা বলছেন সেসব উপেক্ষা করেই সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে’।
এসময় হানিফ সরকারের গত ১৫ বছরের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘কুষ্টিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো একটা উন্নতক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের। আজ সেটি উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে জেলাবসীর সেই স্বপ্ন পুরণ হয়েছে। দেশকে আজকে উন্নয়নের রোল মডেল করেছেন প্রধানমন্ত্রী সেখ হাসিনা। সারা দেশের উন্নয়নের সারথী দেশের জনগণের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। সব বিবেচনায় দেশবাসী আবারও আওয়ামী লীগ সরকারকে ভোট দিয়ে উন্নয়নের ধারাকে অব্যহত রাখবেন’। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল উদ্বোধনকালে হানিফ এসব কথা বলেন।
দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নির্মাণ প্রতিকুলতার পথ পরিক্রমা শেষ করে অবশেষে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভার্চুয়াল প্রযুক্তিতে ভিডিও কন্ফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষনা করেন। পরে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে হাসপাতাল চত্বরে স্থাপিত উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি।
এসময় সেখানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, দৌলতপুর কুষ্টিয়া-১ এর সংসদ সদস্য সরোয়ার জাহান বাদশা, কুমারখালী-খোকসা কুষ্টিয়া-৪ এর সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ, জেলা প্রশাসক মো: এহতেশাম রেজা, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ নির্মান প্রকল্পের পরিচালক ডা. চৌধুরী সরোয়ার জাহান, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম, কুষ্টিয়া নাগরিক কমিটির সভাপতি ডা. এস এম মুসতানজিদ লোটাস প্রমুখ।
প্রকল্প পরিচালক ডা. চৌধুরী সরোয়ার জাহান বলেন, ‘মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনীর মধ্যদিয়ে ইতোমধ্যে হাসপাতাল ভবনের বর্হিবিভাগ স্বাস্থ্য সেবা চালু, মেডিকেল শিক্ষার্থীদের একাডেমীক ভবন, ছাত্র/ছাত্রীদের পৃথক আবাসিক হোস্টেল, চিকিৎসক নার্সদের পৃথক পৃথক ডরমিটরি ও আবাসিক ভবনর যাত্রা শুরু হলো’। এছাড়া হাসপাতাল ভবনের চলমান অসাপ্ত কাজগুলি খুব শীঘ্রই শেষ করে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল চালুর মধ্যদিয়ে জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বাস্থ্য সেবায় স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়নে কুষ্টিয়াসহ আশপাশের আরও ৪ জেলার মানুষের উন্নত চিকিৎসা সেবার দ্বার খুলে যাবে’।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ৩ মার্চ একনেক সভায় ২৭৫ কোটি টাকা প্রাক্কলন ব্যয় ধরে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রকল্পটি অনুমোদন লাভ করে। প্রকল্পটির নির্ধারিত নির্মাণকাল তিন বছর থাকলেও ইতোমধ্যে ১০ বছর পেরিয়েছে নির্মানকাল সময়। একে এক ৩য় বারের মতো সময় ও ব্যয় সম্প্রসারণ অনুমোদন দেয়া হয়। সর্বশেষ প্রকল্প ব্যয় দাড়িয়েছে প্রায় ৭শ’কোটি টাকা। দীর্ঘ সময় ও ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এবং গণপূর্ত বিভাগ একে অন্যকে দুষছেন। অভিযোগ আছে প্রকল্পের শুরুতেই নির্ধারিত নকশা পরিবর্তনসহ দর বাড়িয়ে কার্যাদেশ আদায়সহ নানা অনিয়মের সত্যতা উঠে আসে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প ‘বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ’ (আইএমইডি) পরিদর্শনের পর তাদের তদন্তে।
কুষ্টিয়া গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মান প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হয়েছে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে এখন ফিনিং ওয়ার্কসহ আনুষঙ্গিক কিছু কাজ চলমান আছে যা খুব শীঘ্রই আমারা শেষ করে ফেলবো’।
খালিদ সাইফুল // দৈনিক দেশতথ্য // ১৪ নভেম্বর ২০২৩