টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানা পুলিশের মানবিকতায় নয় বছর পর হারিয়ে যাওয়া আফরোজা আক্তার (৫৫) ফিরে পেয়েছেন তার আপন ঠিকানা। তার স্বামীর নাম লুৎফর রহমান। গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার কলন্দপুর। আজ সোমবার মির্জাপুর থানায় আফরোজা বেগমকে তার স্বামী ও পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। নয় বছর পুর্বেহারিয়ে যাওয়া স্ত্রীকে ফিরে পেয়ে আবেগ-আপ্লুত লুৎফর রহমান। এই নয় বছরে তাদের জীবন থেকে অনেক কিছুই হারিয়ে গেছে।
আজ সোমবার লুৎফর রহমান জানান, প্রায় নয় বছর আগে আফরোজা বেগম (৫৫) মানসিক রোগী হওয়ায় তার চিকিৎসা করানো হয়। চিকিৎসা করানোর পর সে হারিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাকে না পেয়ে ধরে নিয়েছিলাম তাকে আর ফিরে পাবো না।
গতকাল রবিবার (১৪ নভেম্বর) ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের (পুরাতন সড়কের পাশে) মির্জাপুর পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় আফরোজা বেগমকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। অসহায় আফরোজা বেগমকে দেখে মানবতায় আমরা বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। ছবিটি দেখে মির্জাপুর উপজেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাফিজুর রহমানের পরামর্শে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. খায়রুল ইসলাম মির্জাপুর থানা পুলিশকে অবগত করেন। মির্জাপুর থানা পুলিশ স্থানীয় সামাজিক সংগঠন মানবতায় আমরা ও উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের সমন্বয়ে পাচঁবিবি থানা পুলিশকে অবহিত করার পর স্বামী- লুৎফর রহমান ও পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হয়।
সোমবার সকালে তারা আফরোজা বেগমকে নেওয়ার জন্য মির্জাপুর থানায় আসেন। পরিবারের ঠিকানা পাওয়ার পর কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে এক হস্তান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রিজাউল হক শেখ দিপু, ওসি (তদন্ত) মো. গিয়াস উদ্দিন, সেকেন্ড অফিসার মো. রুবেল হোসেন, এসআই মো. মজিবুর রহমানসহ মানবতায় আমরা বেসরবারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যগন উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনর্চাজ মোহাম্মদ রিজাউল হক শেখ দিপু বলেন, গতকাল রবিবার খবর পেয়ে আফরোজা বেগমকে থানায় এনে গোসন করিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। তিনি আনেক অসুস্থ ছিলেন। আমি তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। ঠিক মত কথা বলতে পারেনি, অনেক কষ্টে তার ঠিকানা সংগ্রহ করি এবং পরে পাচঁবিবি থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার পরিবারের সন্ধান পাই। সোমবার আফরোজা আফরোজা বেগমকে তার পরিবারের কাছে তুলে দেওয়া হয়।