লিফলেট সহ এক যুবক গ্রেপ্তার
নিজস্ব অর্থায়নে প্রমত্তা পদ্মার উপর সেতু তৈরী করে অসাধ্য সাধন করেছে বাংলাদেশ। আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন হবে পদ্মা সেতু। স্বপ্নের এই সেতু উদ্বোধনকে সামনে রেখে আইন-শৃংখলার অবনতি ঘটাতে কিছু লোক মাঠে নেমেছে। এমন সম্ভাবনার কথা অনেক আগ থেকেই শোনা যাচ্ছে।
এব্যাপারে সজাগ রয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গত ১১ জুন রাজধানীর বায়তুল মোকারম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেইট থেকে তারা এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। তার কাছ থেকে তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগ- ডিবি। তাঁকে সাত দিনের রিমাণ্ডে নেওয়া হয়েছে।
ডিবি কর্মকর্তা বলেন, ধরা পড়া ওই যুবকের নাম কৌশিকুর রহমান। সে ১৫-২০ দিন ধরে ঢাকার লালবাগ, ধানমন্ডি ও মতিঝিল এলাকায় ২-৩ হাজার লিফলেট বিতরণ করেছে। তার কাছ থেকে জানা গেছে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে তারা লিফলেট বিতরণ ও বিভিন্ন স্থানে পোস্টারও লাগাচ্ছে।
এই তৎপরতার পেছনে আছেন প্রবাসে থাকা দন্ডপ্রাপ্ত সাবেক সেনা কর্মকর্তা শহীদ উদ্দিন খান। ধরা পড়ার পর তার কাছ থেকে শহীদ উদ্দিনের ছবিসহ ৩৯৫টি লিফলেট উদ্ধার করেছে ডিবি। লিফলেটের বাম পাশে শহীদ উদ্দিনের ছবি, ডান পাশে মুষ্টিবদ্ধ তিনটি হাতের মটিফ রয়েছে। মাঝখানে লেখা রয়েছে ‘হঠাও মাফিয়া, বাঁচাও দেশ, শহীদ স্যারের নির্দেশ’। ১০ দফা দাবি সম্বলিত লিফলেটের নীচে লেখা ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’।
তদন্তকারী সংস্থার সূত্র বলছে, কৌশিকুর রহমান জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, পদ্মাসেতু উদ্বোধনকে সামনে রেখে আইন-শৃংখলার অবনতি ঘটাতে সু-শৃঙ্খল বাহিনীর সদস্যসহ জনগণকে বিভ্রান্ত করতে শহীদ উদ্দীন লিফলেট বিতরণ ও পোস্টার লাগানোর জন্য কিছু লোককে মাঠে নামিয়েছেন।
কৌশিকুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে ডিবি কর্মকর্তা বলেন, তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, শহীদ উদ্দিনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা পেয়ে তার সহযোগী খোকন ও বাবু এই লিফলেট প্রিন্ট করে তাকে বিতরণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তিনিও টাকার বিনিময়ে সেই দায়িত্ব নিয়েছে।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে গত ১২ জুন পল্টন থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে চারজনকে আসামি করে মামলা করেছে। আসামীরা হলেন, শাহীদ উদ্দিন, তার ঘনিষ্ঠ খোকন, বাবু এবং গ্রেপ্তার হওয়া কৌশিকুর রহমান।
ডিবির মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এজাহারভুক্ত অপর তিন আসামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের সব থানাকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। শহীদ উদ্দিন ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা গেলে ঘটনার নেপথ্যে পুরো চক্রের নাম জানা যাবে।
আয়কর ফাঁকির মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত শহীদ উদ্দিন খানের কর্নেল পদবি গত বছর বাতিল করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই বাতিলাদেশ জারি করে। তাতে বলা হয়, কর্নেল মো. শহীদ উদ্দিন খান (অব.)-এর বরখাস্তের পরিবর্তে স্বাভাবিক অবসর সংক্রান্ত আদেশ এবং কর্নেল পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতিসহ অকালীন অবসর সংক্রান্ত আদেশ বাতিল করা হলো।
শহীদ উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে প্রবাসে পলাতক থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তিনি পরিবার নিয়ে লন্ডনে আছেন। ২০২০ সালে আয়কর ফাঁকির মামলায় শহীদ উদ্দিন খানকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//জুন ১৩,২০২২//