শেখ নাদীর শাহ্, পাইকগাছা(খুলনা): খুলনার পাইকগাছার কপিলমুনির বহুলালোচিত নাছিরপুর খাস খাল উন্মুক্ত করতে স্থানীয় প্রশাসনের নিয়োগ করা শ্রমিককে তার বাড়ি সীমান্ত গ্রাম তালার ঘোষনগরে সশস্ত্র হানা দিয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাঁটিয়ে দিয়েছে।
এসময় হামলাকারীরা তার কাছে থাকা স্বর্ণালংকার ছিনতাই করে। এসময় তার মা ও আশপাশের লোকের আত্নচিৎকারে গ্রামবাসীরা এগিয়ে হামলাকারীরা একটি মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়।
গুরুতর আহত শ্রমিক মুন্না সানা (২৩) কে উদ্ধার করে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এরপর হামলাকারীরা দ্বিতীয় দফায় তালা হাসপাতালে ঢুকে মুন্না ও তার স্বজনদের উপর হামলা করে। এসময় অন্যান্য রোগীদের স্বজনসহ অন্যান্যরা তাদের প্রতিরোধ করলে সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে ঘটনাস্থল ঘোষ নগর মুন্নার বাড়ি থেকে তাদের ফেলে যাওয়া মোটরসাইকেলটি নিয়ে যায়। আহত মুন্না ঘোষনগর গ্রামের মাওলা সানার ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৩ জুলাই (বৃহস্পতিবার) দপর পৌনে ২ টার দিকে। এঘটনায় থানায় মামলার প্রস্ততি চলছে।
অভিযোগে জানানো হয়, ভূমি মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে বুধবার (২ জলাই) পাইকগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইফতেখারুল আলম শামীমের নেতৃত্বে সেনা তত্ত্বাবধায়নে কপিলমুনির নাছিরপুর খাস খালের বিভিন্নস্থানে বসানো নেট-পাটা অপসারণপূর্বক উন্মুক্ত কার্যক্রম শুরু করে। পরের দিন ৩ জুলাই সকাল থেকে দ্বিতীয় দিনের ন্যায় উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে স্থানীয় ইউএলএও কৃষ্ণপদ দাশের নের্তৃত্বে শ্রমিকসহ এলাকাবাসী খালের হাউলী ব্রিজের কাছে নেট-পাটা অপসারণ কার্যক্রম শেষ করে খালের গোড়ার অংশ তালতলা এলাকায় যায়। শ্রমিকরা সেখানে পৌছে কাজ শুরু করার আগেই খালের দখলদারের পক্ষে নিযুক্ত সশস্ত্র রাসেল, রাতুল, হারুন, রায়হান, ইয়ামিন, নাজমুল গংদের প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। এরপর তারা সেখানে কোন প্রকার কাজ না করেই বাড়িতে ফিরে যায়।
পরে ঐ দিন দুপুর পৌনে ২ টার দিকে কাশিমনগর গ্রামের আজহারুল ইসলাম আজর গাজীর ছেলে রাসেল গাজীর নেতৃত্বে তার ভগ্নিপতি শামছুর গাজীর ছেলে হারুন গাজী ও তার ছেলে রাতুল গাজী, আব্বাস মোড়লের ছেলে ইয়ামিন মোড়ল, আব্দুল মজিদ গাজীর ছেলে ফরহাদ গাজী, মজিদ সানার ছেলে রায়হান সানাসহ ৭/৮ জন যুবক মোটর সাইকেল ও প্রাইভেট কারযোগে শ্রমিক মুন্না সানার বাড়িতে হানা দিয়ে লোহার রড, চাপাতি ও হাতুড়িসহ মুন্নার উপর ঝাপিয়ে পড়ে তাকে এলাপাতাড়ি মারপিট শুরু করে। এসময় মুন্নার মা সুজাতা বেগম ছাড়া বাড়িতে কোন লোক না থাকায় তাদের আত্নচিৎকারে গ্রামবাসীরা এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এরপর মুন্নাকে তালা হাসপাতালে নিলে সশস্ত্র দূবৃত্তরা সেখানে গিয়ে তার ও তার স্বজনদের উপর হামলা করে।
এ ঘটনায় মুন্না চিকিৎসাধীন থাকায় প্রাথমিকভাবে ঘটনার দিন তালা থানায় একটি অভিযো দেওয়া হলেও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এব্যাপারে কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক আজগর হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি ঐদিন খুলনায় ছিলেন। প্রথমত খাল এলাকায় হাতাহাতি ও পরে তালা সীমানায় সংঘর্ষের খবর শুনেছেন। তবে বিষয়টি তালা থানা এলাকার বিধায় পাইকগাছা থানায় এনিয়ে কোন মামলা বা অভিযোগের বিষয় তার জানা নেই। তবে শনিবার (৫ জুলাই) দুপুরে তিনি এএসপি (সার্কেল) পাইকগাছাসহ খাল এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন এবং বর্তমানে সেখানে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে বলেও জানান তিনি।

Discussion about this post