শেখ দীন মাহমুদ,পাইকগাছা(খুলনা) প্রতিনিধি॥ পাইকগাছার মেয়ে সুমাইয়ার যশোরের ভাড়া বাসায় রহস্যজনক মৃত্যু। থানায় আতœহত্যার প্ররোচনা মামলায় স্বামী মিঠ জেল-হাজতে থাকলেও তার মা আনোয়ারা বেগম জামিনে বেরিয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে বলে সুমাইয়ার পিত্রালয় থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগে আরো বলা হয়, তার মেয়ে সুমাইয়াকে যৌতুকের দাবিতে তার স্বামী ও শ্বাশুড়ী মিলে মারপিট ও শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে মরদেহ টানিয়ে দিয়ে আতœহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করতে গেলে যশোর কতোয়ালী থানা পুলিশ হত্যা মামলা না নিয়ে আতœহত্যা প্ররোচনা মামলা রেকর্ড করে। মামলায় নিহতের স্বামী মিঠু জেলে থাকলেও তার মা আনোয়ারা জামিনে বেরিয়ে মামলা তুলে নিতে অব্যাহত হুমকি দিচ্ছে বলে দাবি করে তারা নিরাপত্তাহীনতা ভীতসন্ত্রস্থ রয়েছেন বলে জানানো হয়।
মামলার বিবরণ ও পারিবারিক সুত্র জানায়, খুলনার পাইকগাছা উপজেলার উত্তর গড়ের আবাদ গ্রামের মোলায়েম সানার মেয়ে সুমাইয়ার সাথে পার্শ্ববর্তী পূর্ব গজালিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান ঢালীর ছেলে মিঠু ঢালীর প্রায় ৩ মাস আগে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর বেশ সুখে-শান্তিতেই তাদেও দাম্পত্য জীবন চলছিল। কিন্তু মিঠুর কর্মস্থল যশোরে হওয়ায় স্ত্রী সুমাইয়াকে নিয়ে যশোরের খড়কী ধোপা পাড়ায় এ/পি নুর কামালের মালিকানাধীন ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়।
এ দিকে মিঠুর মা আনোয়ারা বেগম নব পুত্রবধুকে পিত্রালয় থেকে যৌতুকের জন্য বিভিন্নভাবে মানষিক চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে মায়ের কথামত মিঠু গত ৪ অক্টোবর বিকেলে বাসায় ফিরে তার মায়ের সাথে যোগসাজসে সুমাইয়াকে তার পিত্রালয় থেকে যৌতুকের টাকা আনতে প্রথমে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। সুমাইয়া এতে রাজি নাহওয়ায় তারা মা-ছেলে মিলে তাকে টানা-হেঁচড়া করে কাসা থেকে বের করে দেওয়ার অপচেষ্টা করে। তবে সে বাসা থেকে বের না হওয়ায় মিন্ঠু সন্ধ্যায় তাকে বেদম মারপিট করে বলে সুমাইয়ার পিতা মোলায়েম অভিযোগ করেন।
তিনি আরো জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তার মেয়েকে শ্বারুদ্ধ করে হত্যার পর জামাতা মিঠু তাকে মোবাইলে ফোন করে জানায় তার মেয়ে যশোরের খড়কী ধোপা পাড়া এ/পি মীর নুর কামালের বাড়ীর ভাড়া বাসায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এ ঘটনায় তিনি যশোর কতোয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে গেলে থানা পুলিশ হত্যা মামলা না নিয়ে একটি আত্ম হত্যা প্ররোচনা মামলা রেকর্ড করেন। এসময় মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়ার পর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনেরও আশ্বাস প্রদান করে থানা পুলিশ বলে জানায়। তবে ঐ মামলার এক মাস অতিবাহিত হলেও ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে পায়নি বলে পুলিশের পক্ষে জানানো হচ্ছে।
এদিকে অন্যতম হন্তারক মিঠুর মা আনোয়ারা বেগম অঅদালত থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে মামলা প্রত্যাহারের জন্য সুমাইয়ার পরিবারকে অব্যাহত হুমকি দিচ্ছে। সর্বশেষ হুমকির ঘটনায় তারা রীতিমত নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যশোর কতোয়ালী থানার এস আই শরিফুল ইসলাম বলেন, মামলায় প্রধান আসামী মিঠু জেল হাজতে রয়েছে এবং অপর আসামী জামিনে আছে। তবে ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Discussion about this post