নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় খুলনার পাইকগাছা থেকে ফেরৎ যাচ্ছে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) প্রকল্পের ১ কোটি ১৩ লাখ ৫২ হাজার টাকা।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে বিলম্বে প্রাপ্ত বরাদ্দ এ অবস্থার জন্য দায়ী বলেও মনে করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পাইকগাছা উপজেলায় গত ৮ মে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) প্রকল্পের ২য় পর্যায়ের ২ কোটি ২৭লাখ ৪ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে।
উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে যথাক্রমে ১নং হরিঢালীতে ১০৭জন, ২নং কপিলমুনিতে ১৭১জন, ৩নং লতায় ১২১জন, ৪নং দেলুটিতে ১৪৫জন, ৫নং সোলাদানাতে ১৬০জন, ৬নং লস্করে ১৪০জন, ৭নং গদাইপুরে ১০৯ জন, ৮নং রাড়ুলীতে ১২৫ জন, ৯নং চাঁদখালীতে ১৯৩ জন এবং ১০নং গড়ইখালীতে ১৪৮ জন মিলিয়ে সর্বমোট ১৪১৯ জন হতদরিদ্র ব্যক্তি জনপ্রতি দৈনিক চার শত টাকা মজুরিতে গত ১৪ মে থেকে ৮ জুন পর্যন্ত কাজ করেন। সরকারি ছুটি বাদে তারা ২০ দিনের বিল পাবেন। তবে এ মেয়াদে ৮ জুন শেষ হওয়ায় বাকি ২০ দিন কাজ করতে পারছেন না তারা। ফলে তাদের অনুকুলে আসা বরাদ্দের ১ কোটি ১৩ লাখ ৫২ হাজার টাকা ফেরৎ পাঠানো হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ভুক্তভোগী শ্রমিকরা জানান, করোনা পরবর্তী চলতি মৌসুমে এলাকায় কোন কাজ নেই। তার উপর দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান উর্ধগতিতে কোন রকম সংসার চালাতে নাভিশ্বাস উঠেছে তাদের। অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) প্রকল্পের আওতায় ৪০ দিনের কাজকে সামনে রেখে কোন রকম বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছিলেন তারা। কিন্তু মাঝ পথে মেয়াদ জটিলতায় তাদের টাকা ফেরৎ যাওয়ার খবরে হতাশা প্রকাশ করেছেন অতিদরিদ্রদের অনেকেই।
এ বিষয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা জানান, পাইকগাছা উপজেলায় খেটে খাওয়া মানুষের সংখ্যা বেশী। অধিকাংশ মানুষ মৎস্য ও শ্রমজীবি। এর উপর বর্তমানে সুন্দরবন ও সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। সব মিলিয়ে এ অঞ্চলের মানুষের হাতে দৃশ্যত কোন কাজ নেই। এমন পরিস্থিতিতে ৪০ দিনের সম্পূর্ণ কাজ করতে পারলে কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলতো তাদের, এমনটাই মনে করেন তারা।
তাদের দাবি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে এক মাস আগে বরাদ্দ আসলে এই মুহুর্তে তাদের টাকাগুলো ফেরৎ যেতনা।
এব্যাপারে পাইকগাছা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোঃ ইমরুল কায়েস জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) প্রকল্পের আওতায় পাইকগাছায় ৪০ দিনের কাজের জন্য বিলম্বে ২ কোটি ২৭লাখ ৪ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। এছাড়া ৮ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করে বিল না পাঠালে শ্রমিকরা টাকা পাবে না। অন্যদিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মাত্র ২০ দিন কাজ করা সম্ভব হয়েছে। আর সে কারণে বাধ্যতামূলক বাকি ১ কোটি ১৩ লাখ ৫২ হাজার টাকা ফেরৎ পাঠাতে হচ্ছে।
এসময় তিনি আরো জানান, চলতি বছর দেশব্যাপি পাইকগাছাতেও নতুন নিয়মে শ্রমিকদের নিবন্ধনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে বিলম্বে বরাদ্দ আসায় দেরিতে কাজ শুরু হওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে আগামীতে এ সমস্যা থাকবেনা বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আর//দৈনিক দেশতথ্য//১৩ জুন-২০২২//

Discussion about this post