নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারী নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দিখিয়ে একটি প্রভাবশালী মহল ইজারা বাদেই জোর পুর্বক বাজার বেদখলে নিয়ে ১৮ বছর ধরে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করে আসছে। যার ফলে সরকার মোটা অংকের রাজস্ব থেকে বন্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে বাজার দখলকে কেন্দ্র করে দুটি সশ¯্র গ্রুপ এখন মুখোমুখি। ইতোমধ্যে দু’গ্রুপের মধ্যে হামলা মামলার ঘটনাও ঘটেছে।
আলোচিত এ বাজারটি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের পাককোলা গ্রামের ব্রীজ সংলগ্ন। এই বাজার দখলকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় দু’গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এবং হতাহতের আশংকা করছে এলাকাবাসী।
জানা যায়, পাককোলা এলাকার প্রভাবশালী হাট মালিক ময়েজ ও হারেজ গং এর ছেলেরা ২০০৪ সালের দিকে মৌখিক ভাবে হাটের নামে জমি দিয়ে পাককোলা ব্রিজের সামনে বাজার বসায়। হাটের নামে তারা আজও জমি রেজিষ্ট্রি করে দেয়নি। বাজারের উন্নয়নে সরকারী ভাবে ৩টি টিউবয়েল, ২টি বাথরুম, ওয়াক্তিয়া মসজিদ ও পানি নিষ্কাশনের জন্য পাকা ড্রেন, ২টি কালভার্ট, হেরিং রাস্তার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতি বছর বিভিন্ন খাতে সরকারী বরাদ্দ তুলে খাচ্ছে কথিত হাট মালিকরা।
সরকারী রাজস্ব ফাকি দিয়ে মুরাদ ও ইউসুফ মন্ডলের নেতৃত্বে বিন্নুছ, ইরফান, ইউনুস, মিন্নাল, লিটন ও শিপন গংরা বাজারটি ১৮ বছর ধরে তদ্যবদি তারা পেশি শক্তির বলে একক ভাবে বাজার নিয়ন্ত্রনে রেখে ভোগ দখল করে খাচ্ছে। এই গংরা পেশি শক্তির বলে মাহাতাব উদ্দিন লাদেন এর পাককোলা বাজারের ব্যক্তি মালিকানা কয়েকটি দোকান এবং গোডাউনও দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ এবং বাজারে ঢুকলেই তাকে মারপিট করবে বলে হুমকি দিয়ে আসছে। তাকে মারার জন্য কয়েক দফা তাড়াও করেছে বলে অভিযোগ।
এলাকাবাসী জানায়, প্রতি রবিবার ও বৃহস্পতিবার হাট বসিয়ে, হাটের কথিত দখলকারীরা নিজেদের ইচ্ছা খেয়াল খুশিমত অতিরিক্ত খাজনা আদায় করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলেই তাদের গুন্ড বাহিনী মারপিট শুরু করে দেয়।
এ ঘটনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরজ মালিথা, আলাম ও মেহেরসহ গত ১৮ বছরে এলাকার অনেককে পিটিয়ে রক্তাত্ব আহত করা হয়েছে। থানায় এবং কোটে মামলার ঘটনার ঘটেছে।
জানা যায়, ২০০৩ সালের দিকে ওই এলাকার বিশিষ্ট সমাজ সেবক, কাজী আরেফসহ ৫ জাসদ নেতা হত্যা মামলার প্রধান ও গুলিবিদ্ধ সাক্ষি মাহাতাব উদ্দিন লাদেন এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে সকলের মতামতের ভিত্তিতে সর্ব প্রথম জিসিটিপি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ঈদগা মাঠে সরকারী নিয়ম নীতি মেনে একটি বাজার বসায়। লাদেন বাজার নামে পরিচিত ওই বাজারটি এক বছরের মধ্যে ব্যাপক জমজমাট হয়ে উঠে। সপ্তাহে দুইদিন রবিবার ও বৃহস্পতিবার বসতো এই বাজার। পাককোলা ছাড়াও গাছের দাইড়, ছাতার পাড়া, হিদয়পুর, বিল আমলা, লক্ষিপুর, তালবাড়িয়া, ওমরপুর, লালনগর ও ইউসুফপুরসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ এই হাটে সদায় কেনা-বেচা করতে আসতো। সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক হাট বসিয়ে যে টাকা লভ্যাংশ হতো তা স্কুল ও ইদগার উন্নয়নে ব্যয় করা হতো বলে হাট ও স্কুল কমিটির সভাপতি জানিয়েছেন।
হাটের এই সফলতা দেখে পাককোলা এলাকার একটি প্রভাবশালী কুচক্রী মহল গোপনে গোপনে হাট কমিটির বিরোধিতা শুরু করে এবং হাট ভেঙে দেওয়ায় চক্রান্ত করতে থাকে।
প্রভাবশালী ওই মহল হাটে ক্রয় বিক্রয় করতে আসা মানুষদের রাস্তার মধ্যে বিভিন্ন অযুহাতে আটকিয়ে মারপিটসহ তাদের মালামাল চুরি ছিনতাই করা শুরু করে দেয়। এসব কারনে আস্তে আস্তে হাটের সুনাম নষ্টসহ লোক সমাগম কমতে থাকলে হাট কমিটি চরম বেকায়দায় পড়ে যায়। অবশেষে বাজারটি বন্ধ হয়ে যায়।
পরবর্তীতে ২০০৪ সালের দিকে পাককোলা ব্রিজের সামনে আবার বাজার বসানো হয়। তদ্যবদি ১৮ বছর ধরে একক ভাবে বাজার নিয়ন্ত্রনে রেখে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছে একটি প্রভাবশালী মহল। এই হাটের দখল নিয়ে দুই গ্রুপ এখন মুখোমুখি অবস্থানে। যে কোন সময় বড় ধরনের রক্তক্ষয়ি সংসর্ষের আশংকা করছে এলাকাবাসী।
হাটটি বেদখল মুক্ত করে সুন্দর সুষ্ঠু ও শান্তিপুর্ন পরিবেশে ফিরিয়ে সরকারী করন করতে জেলা প্রশাসক-উপজেলা নির্বাহি অফিসারের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী ।