গৌরাঙ্গ লাল দাস,কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি :
তখন সবেমাত্র সন্ধ্যা নেমেছে। চারিদিকে নিস্তব্ধতা। হঠাৎ একটি শিশুর কান্নার শব্দ। পাশের বাড়ি থেকে ছুটে এলেন এক নারী। দেখলেন একটি ঝুপড়ি ঘরে সদ্য ভূমিষ্ট এক পুত্র সন্তান কাঁদছে। দ্রুত নিয়ে যাওয়া হলো উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। খবর পেয়ে ছুটে এলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। শিশুটির চিকিৎসাসহ সকল ব্যবস্থা করলেন মানবিক এই সরকারি কর্মকর্তা। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে।
জানাগেছে, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় কোটালীপাড়া শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজের উত্তর পাশের একটি ঝুপড়ি ঘরে একটি পাগলি শিশু সন্তানের জন্ম দেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জন্ম নেওয়া ওই শিশুর কান্না শুনে সেখানে যান মেহেরুন নামের এক গৃহিনী। তিনি সদ্য ভূমিষ্ট ওই নবজাতককে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করেন।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিম উদ্দিন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ছুটে গিয়ে শিশুটির চিকিৎসাসহ সকল ব্যবস্থা করেন। এ খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন ভাবে এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শিশুটির দায়িত্ব নিতে কোটালীপাড়া ও এর আশপাশের কয়েকটি এলাকার ১০ দম্পতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে এসে নবজাতকটিকে নেওয়ার জন্য আবেদন করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিম উদ্দিন বলেন, শিশুটির নাম রেখেছি মোঃ লাকিত হোসেন (কুড়িয়ে পাওয়া উত্তম সন্তান)। শিশু মোঃ লাকিত হোসেনের খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে ১০ দম্পতি তার দায়িত্ব নেওয়ার জন্য আমার কাছে আসে। বুধবার এই ১০ দম্পতির মধ্যে থেকে যাচাই বাচাই করে আইনী প্রক্রিয়া শেষে ফরিদপুরের এক ব্যবসায়ী নিঃসন্তান দম্পতিকে শিশুটিকে লালন পালনের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ ইব্রাহিম, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার রাকিবুল হাসান শুভ, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শ্রীময়ী বাগচীসহ বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ওই নিঃসন্তান দম্পতি বলেন, আমাদের কোন সন্তান নেই। আর কোন দিন আমরা মা বাবা হতে পারবো না। আমরা শিশু মোঃ লাকিত হোসেনকে পেয়ে খুবই আনন্দিত।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//ফেব্রুয়ারী ২৮,২০২৪//