শাহনাজ ও সহযোগীরা বিভিন্ন জেলা থেকে বিউটি পার্লার, রেষ্টুরেন্ট, পাঁচ তারকা হোটেলে কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভনে কম বয়সী তরুণীদের বাসায় নিয়ে আসে। এরপর ভারতে পাচার করে দেয়। ভারতে পাচার হওয়া এমন তিন তরুণীর নাম জানা গেছে। তাদের মধ্যে আছেন মরিয়ম, জুমা ও মাহি।
চাকরীর নামে ভারতে পাচারের শিকার হতে চলেছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক নারী। জানতে পেরে পাচারকারী চক্রের বন্দিশা্লা থেকে পালিয়ে বাঁচলো দীপা নামের এক ষৌড়শী। গত মঙ্গলবার (৩১ মে) সকাল নয়টায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ১নং ওয়ার্ডের মিজমিজি পূর্ব পাড়া পাগলাবাড়ী এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।
জানা গেছে বিউটি পার্লারে ভালো বেতনে কাজ পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে দীপা নামের এক ষৌড়শীকে আনা হয়। তাকে রাখা হয় পাচারকারীদলের সদস্য শাহনাজের মিজিমিজির ভাড়া বাসায়। সে ভারতে যেতে অস্বিকার করলে শুরু হয় নির্যাতন। সোমবার সারারাত চলে শারীরিক নির্যাতন।
পর দিন মঙ্গলবার দীপা নির্যাতন সইতে না পেরে সকাল বেলা বিবস্ত্র অবস্থায় ওই বাসা থেকে দৌড়ে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেন। এসময় দীপা বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
অভিযুক্ত নারী পাচারকারী দলের সদস্য শাহনাজ সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পূর্ব পাড়া পাগলা বাড়ি এলাকার ফরিদ মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া। সে দীর্ঘদিন ধরে এ বাসা ভাড়া নিয়ে ভারতে নারী পাচার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিজমিজি পাগলা বাড়ি এলাকার ফরিদ মিয়ার বাড়িতে প্রায় আট মাস ধরে রুম ভাড়া নিয়ে শাহনাজ (৩৮) তার স্বামী মাঈনুল ও আরো দু’জন সহযোগী মহিলা থাকেন। অভিযুক্ত শাহনাজের স্বামী মঈনুল পেশায় একজন ট্রাক চালক। বিভিন্ন জেলায় পণ্য পরিবহন করার কারনে রাতে মঈনুল বাসার বাহিরেই থাকেন।
সেই সুযোগ কাজে লাগান তার স্ত্রী অভিযুক্ত শাহনাজ। তবে শাহনাজ ও তার আরো কয়েকজন মহিলা সহযোগী মিলে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কখনো বিউটি পার্লার, কখনো রেষ্টুরেন্ট, কখনো নামী দামি পাঁচ তারকা হোটেলে কাজ করার প্রলোভন দেখিয়ে কম বয়সী তরুণীদের তার বাসায় নিয়ে এসে ভারতে পাচার করে দেন। ভারতে পাচার হওয়া এমন তিন তরুণীর নাম হাতে এসেছে এই প্রতিবেদকের হাতে। তার হলেন, মরিয়ম, জুমা ও মাহি।
এদিকে ভুক্তভোগী তরুণী বিবস্ত্র অবস্থায় বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে করতে দৌড়ে পালিয়েছে শুনে খবর পেয়ে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে অভিযুক্ত শাহনাজ বলেন, আমি নারী পাচার করি না। আমি মেয়েদের ভারতে চাকরির জন্য পাঠাই। এ পর্যন্ত তিনজন মেয়েকে পাঠিয়েছি। তারা সবাই সেখানে (ভারতে) কাজ করে আমাকে টাকা পাঠায়। কথা বলা অবস্থায় একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয়দের সামনেই সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয়ে শাহনাজ বলেন, থানা পুলিশ আমার হাতে। আমি থানায় ওর (ভুক্তভোগী তরুণী) নামে অভিযোগও করে আসছি।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য// জুন ০১,২০২২//

Discussion about this post