মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা: মির্জাপুর উপজেলায় সিন্ডিকেট চক্রের কারসাজিতে পানির দামেও কোরবানী পশুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে না। বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পরে আছে কোরবানী পশুর চামড়া। কোরবানীর ঈদে সিন্ডিকেট চক্রের কারনে কারসাজিতে ৩-৪ হাজার টাকা মুল্যের পশুর চামড়া পানির দরে ২০০শ টাকায় বিক্রি হয়েছে। লোকসানের মুখে পরেছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।
আজ মঙ্গলবার (১২ জুলাই) মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।
মির্জাপুর উপজেলার পৌরসভা এবং ১৪ ইউনিয়নে কমপক্ষে ১৪ হাজার ৫শ গরু ও খাঁসি ও মহিষ কোরবানী করেছেন ধর্মপ্রান মুসুল্লিগন। এই পশু কোরবানীর চামড়া বিক্রি নিয়ে হয়েছে পুকুর চুরির মত ঘটনা। বিভিন্ন এলাকার মৌসুমী চামড়ার বেপারীগন গ্রামে গ্রামে ঘুরে সরকারী দেওয়া রেটে চামড়া কিনে মির্জাপুর উপজেলা সদর, পাকুল্যা, জামুর্কি, কুরনী, দেওহাটা, গোড়াই, হাটুভাঙ্গা, বাঁশতৈল, তক্তারচালা এবং আজগানা এলাকায় এনে মহাজন এবং ট্যানারী মালিকদের নিকট বিক্রি করে থাকেন। আগধল্যা গ্রামের সিদ্দিক হোসেন ও রাজন মিয়া অভিযোগ কলেন, দেড় লাখ টাকায় কোরবানীর গরু কিনে চামড়া বিক্রি হয়েছে ৩০০শ টাকায়। অথচ তিন চার বছর পুর্বেও এই একই দামের গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায়। এ বছর খাঁসির চামড়া বিক্রিই হচ্ছে না। এখনো বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পরে আছে পশুর চামড়া। এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন কওমী মাদ্রাসা ও এতিম খানার শিক্ষার্থী এবং আলেম ওলামাগন কিছু টাকার আশায় বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে ব্যান ও রিকসায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পশুর চামড়া সংগ্রহ করছেন।
মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী শুভ (৪৫), মীর হোসেন (৫৫) ও সুজন (৪৩) বলেন, সরকারের অব্যবস্থাপনা, একটি সিন্ডিকেট চক্রের কারসাজি এবং ট্যানারী মালিকদের কারনে চামড়ার বাজারে ধস নামে। এ বছর বড় সাইজের একটি গরুর চামড়া ৩০০শ থেকে ৪০০শ টাকা, মাজারি ও ছোট সাইজের একটি গরুর চামড়া ১৫০ টাকা থেকে ২০০শ টাকা এবং খাঁসির চামড়া ১০-১৫ টাকায় কিনেছেন। গ্রাম থেকে চামড়া কিনে শহরে নিয়ে আসতে চামড়া প্রতি যাতায়াত খরচ আরও ৬০-৭০ টাকা বেশী পরেছে। একটি সিন্ডিকেট চক্রের কারনে তারা কেনা দামেও চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না। যে চামড়ার খরচ পরেছে ৪৭০ টাকা, মহাজন ও ট্যানারী মালিকরা এসে সেই চামড়ার দাম করছেন ১৫০-২০০শ টাকা। লাভের আশায় বিভিন্ন জনের নিকট থেকে ধার দেনা এবং চড়া সুদে টাকা এনে চামড়া কিনে ছিলেন। কিন্ত লাভ তো দুরের কথা তাদের চালান দামও বলছেন না সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা। ফলে লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। সিন্ডিকেট চক্রের কারসাজিতে মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পরেছেন বলে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টির দিকে সু নজর দেওয়ার জন্য অসহায় চামড়া ব্যবসায়ীরা সরকারের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন।
উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাইফুদ্দিন আহমেদ সুজন বলেন, সরকার পশুর চামড়ার দাম নির্ধারন করে দিয়েছেন। ব্যবসায়রা সেই নির্ধারিত দামে চামড়া কিনেও নানা কারনে তারা লোকসানের মুখে পরেছেন।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post