শেখ নাদীর শাহ্,পাইকগাছা(খুলনা): খুলনার পাইকগাছায় চিংড়ি ঘেরের সুষ্ঠু পানি সরবরাহে খাল খননেও পানি পাচ্ছেনা সরকারের মৎস্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধিন আধুনিক পদ্ধতির
প্রকল্পভূক্ত অন্তত ২৫টি ঘের মালিকরা।
সরকারি খালের কৃত্রিম স্লুইচ গেট’রনিয়ন্ত্রণ পাশের সাড়ে ৩শ’বিঘার ঘের মালিকের হাতে থাকায় তার চরম অসহযোগীতায় সুষ্ঠু পানি সরবরাহে প্রতিবন্ধকতার জন্য দায়ী বলে অভিযোগ এসবআধুনিক প্রযুক্তির চিংড়ী চাষীদের।
অভিযোগে জানানো হয় যে, উপজেলার লতা ইউনিয়নের শামুকপোতা এলাকায় হরিঢালী
ইউনিয়নের প্রয়াত সরদার রফিকুল ইসলাম ডিড বুনিয়াদে ইজারা নিয়ে প্রায় সাড়ে
৪ শ’বিঘা জমিতে চিংড়ি চাষ করতেন। তার মৃত্যুর আগে তিনি তার ঘেরের ডিড বিক্রি করেন, কপিলমুনির কাশিমনগর গ্রামের মোস্তফা গাজীর কাছে। সেই থেকে মোস্তফা ঘেরটি পরিচালনা করছিলেন। গত প্রায় বছর দু’য়েক আগে মোস্তফার কাছ
থেকে জমি ফিরিয়ে নিতে জমি মালিকদের একাংশ ধান-মাছ চাষের লক্ষ্যে লবণ পানি বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলেন। এনিয়ে বিভিন্ন সময় হামলা-মামলার একপর্যায়ে জমি
মালিকদের অনুকুলে প্রায় ১ শ’বিঘা জমি আলাদাভাবে বেড়িবাঁধ দিয়ে নেন জমি মালিকরা।
এরআগে বিস্তীর্ণ ঘেরের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে এসব জমির অস্তিত্ব থাকায় শালিসীতে এওয়াজ মোতাবেক জমি মালিকরা এক পাশ থেকে ঐ জমি বের করে নেন।
এদিকে মূল ঘের থেকে বের করে নেওয়া প্রায় ১শ’ বিঘা জমিতে এর মালিকরা
সরকারের মৎস্য অধিদপ্তরের অধিনে ২৫ টি পুকুর খনন করে আধুনিক পদ্ধতির
চিংড়ী চাষ শুরু করেন। তবে সেখানকার পানি সরবরাহের মাধ্যম সরকারী খাস
খালের স্লুইচ গেট-কল মোস্তফার নিয়ন্ত্রণে থাকায় প্রকল্পগুলোতে সুষ্ঠু
পানি সরবরাহে চরম প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। এতে পানি সংকটে রীতিমত দূর্ভোগে
পড়েন সেখানকার সাধারণ চিংড়ী চাষীরা।
সমস্যা সমাধানে চলতি মৌসুমে মোস্তফার নিয়ন্ত্রনাধীন ঘেরের ভেতরে সরকারি ও বন্দোবস্তকৃত জমির উপর দিয়ে খাল খনন করলে পানি উত্তোলননিয়ে ঘের মালিক ও প্রকল্পভূক্ত চাষীদের মধ্যে দেখা দেয় নতুন করে বিরোধ।পরষ্পর অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ শুরু করেন তারা। একপর্যায়ে প্রকল্প চাষীরা
পানি সরবরাহের মূল খালের মুখে বাঁধ দিয়ে সকলের পানি সরবরাহের খালের মুখআটকে দেন।
উভয়পক্ষ পানি সংকটের স্থায়ী সমাধানে স্থানীয় খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা)
সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবুর নালিশ দেন। তিনি উভয় পক্ষের বক্তব্য
শুনে সকলের ব্যবসায়ীক স্বার্থ সুরক্ষায় খননকৃত খালে পৃথক-পৃথক পাইপ
স্থাপন করে পানি সরবরাহের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে স্থানীয় লতা ইউপি
চেয়ারম্যান কাজল কান্তি বিশ্বাসকে দায়িত্ব দেন।
ঘের মালিক মোস্তফা গাজী অভিযোগ, স্থানীয় গুরুপদ সরকারের ছেলে জয়ন্তসরকারের নের্তৃত্বে মিলন, অযোদ্ধাসহ কয়েকজন ভরা মৌসুমে তার ঘেরের পানি
সরবরাহের মুখে বাঁধ দেয়ায় দু’দিন তিনি কোন মাছ ধরতে পারেননি। এতে বড়ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলেও অভিযোগ তার।
এ ব্যাপারে জয়ন্ত সরকার বলেন, তাদের চিংড়ি চাষের নতুন প্রকল্পগুলোতে শুরু থেকইে পানি সংকটে দূর্ভোগে রয়েছেন। সংকট উত্তরণে সরকারি ভাবে খাল খনন হলেও পানি পাননি বলে অভিযোগ তার। তবে অবশেষে তারা এমপি’র নির্দেশনা মেনে
নিলেও প্রভাবশালী ঘের মালিকের চরম অসহযোগিতায় ঝুলে রয়েছে বিষয়টি। এমনকি
সমস্যা সমাধানে ঘের মালিককে এগিয়ে আসতে তারা খালের মুখ বেঁধে দিয়েছিলেনবলেও স্বীকার করেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সুষ্ঠু পানি বন্টন সমস্যা সমাধানের সমন্বয়কারী কাজল কান্তি বিশ্বাসের বক্তব্য, সংকট নিরসনে এমপি সাহেব পরিকল্পিত পরামর্শ দিলেও এখন পর্যন্ত কোন পক্ষ এগিয়ে না আসায় বিষয়টি ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//