জে. জাহেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জ্যারটেকস্থ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) উপকেন্দ্রের উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. আবু সালেহ এর বিরুদ্ধে শত শত গ্রাহক ক্ষোভে ফুঁসে উঠছেন। তাঁকে কর্ণফুলীর উপজেলার যে ফিডারেই দায়িত্ব দেওয়া হয় না কেন ঘুষ-বাণিজ্য, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন অভিযোগ তোলেন গ্রাহকরা।
এ কর্মকর্তার নানা অনৈতিক দাবিতে হাঁপিয়ে উঠেছে কর্ণফুলী উপজেলার তিন ইউনিয়ন চরপাথরঘাটা, শিকলবাহা ও চরলক্ষ্যার প্রায় ২২ হাজার মতো গ্রাহক। কেনোনা তিনি ফিডার বদলিয়ে বদলিয়ে বিভিন্ন এলাকার মানুষকে হয়রানি করে চলেছেন। বিষয়টি স্থানীয় গ্রাহক ও জনপ্রতিনিধিরা বার বার অভিযোগ আকারে জানালেও অদৃশ্য কারণে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি পটিয়া বিদ্যুৎ বিপণন ও বিক্রয় বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইসমাইল হোসেনকেও। বরং এক ফিডার থেকে অন্য ফিডারে তাকে পদায়িত করে নতুন সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন।
আর এ সুযোগে নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ থাকার পরও গ্রাহকদের মিটারে নানা সমস্যা দেখিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ নানা হররানির অভিযোগ এই উপ-সহকারি প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। এই পিডিবি উপকেন্দ্রে ৭-৮ জন মতো আরও উপ-সহকারি প্রকৌশলী রয়েছেন। কিন্তু তাদের বিষয়ে গ্রাহকের তেমন কোন অভিযোগ পাওয়া যায় না। শুধুমাত্র সকল গ্রাহকের মুখে পিডিবির এই আবু সালেহ এর নানা কাহিনী শোনা যায়। এ অবস্থায় তাকে যত দ্রুত সম্ভব অপসারণের দাবি জানিয়েছেন কর্ণফুলীর বিদ্যুৎ গ্রাহকেরা।
জানা যায়, কর্ণফুলীর মইজ্জ্যারটেক এলাকার গ্রাহক মোহাম্মদ আব্দুল মন্নান, মিটার নম্বর-১০৬৬৬১৫৩, হিসাব নম্বর-এ/৮০৩৯। বিল নম্বর-২৫৫ ও বই নম্বর-৯২০।
চরপাথরঘাটার গ্রাহক জাহেদা বেগম, গ্রাহক বজল আহমেদ। মিটার নম্বর-৩৩৪২২। শিকলবাহা এলাকার গ্রাহক আবু তাহের, খোয়াজনগর এলাকার গ্রাহক মোহাম্মদ ফরিদের ছেলে রাজিব, চরপাথরঘাটা এলাকার গ্রাহক শেখ আহম্মেদ ও নছির আহমেদ (মিটার নম্বর-৮৩৫২৮৪৪৮) তাঁরা সকলেই এই বিদ্যুৎ কর্মকর্তার আবু সালেহ এর হয়রানির শিকার।
সর্বশেষ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিকলবাহা এলাকার এক নারী গ্রাহক জানান, ‘তাঁর মিটার বিল ৪ লক্ষ টাকা। নানা সমস্যায় মিটার পরিবর্তন করা জরুরী। ২ লক্ষ টাকা প্রকৌশলী আবু সালেহ নগদ করে মিটার পরিবর্তন করে দিয়েছেন। কিন্তু সরকারি খাতে কোন টাকা জমা দেয়নি। গ্রাহক কোন ধরনের টাকার রশিদও পাননি। তবে টাকা নেওয়ার একটি শর্ট ভিডিও তিনি কৌশলে গ্রাহক করে রেখেছেন বলে প্রতিবেদককে জানান।’
এসব অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. আবু সালেহ এর মুঠোফোন শেষে ০৫ ডিজিট নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। কিন্তু অন্য সাংবাদিক ফোন করায় ফোন রিসিভ করে বলেন, ‘এসব ভিডিও ও অভিযোগ কতটা সত্য জানি না। সরাসরি এসে দেখা করার কথা জানান তিনি।
পটিয়া বিদ্যুৎ বিপণন ও বিক্রয় বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইসমাইল হোসেন জানান, ‘উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. আবু সালেহ কে নতুন জায়গা নতুন ফিডারে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অপসারণ আর বদলির বিষয়টি পিডিবি বোর্ডের উপর ডিপেন্ট করে।’
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘উপ-সহকারি প্রকৌশলী আবু সালেহ এর বিরুদ্ধে গ্রাহকের সুনির্দিষ্ট নানা অভিযোগ আমাদের কাছেও আসতেছে। পিডিবি যেহেতু সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। সুতরাং খুব অল্প সময়ের মধ্যে তিনি বদলি হচ্ছেন।’
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//