Print Date & Time : 10 May 2025 Saturday 11:01 pm

পৈত্রিক ভিটায় ঘর তোলার জন্য সমাজ পতিদের কাছে ধরণা

পিরোজপুরের নেছারাবাদে পৈত্রিক ভিটায় ঘর তোলার জন্য সমাজ পতিদের ধারে ধারে ঘুরছেন অসহায় চা দোকানি।

ভাঙ্গা চোড়া পুরানো টিনের ছাউনি দেওয়া ঘরটি দেখে হয়তো যে কারো মনে হতে পারে কোন প্রতন্ত্য এলাকার গৃহস্থতালির গোয়াল ঘর। বা পরিত্যক্ত কোন বাড়ি। না আসলে তার কোনটিই নয়। ঘরটিতে বসবাস করেন পাচ সদস্যর একটি পরিবার। এখানে দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর ধরে বসবাস করে আসছেন নেছারাবাদ উপজেলার উত্তর কামারকাঠি গ্রামের চা দোকানি বৃদ্ধ সিদ্দিকুর রহমান। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ঘরটিতে সিদ্দিক মিয়া দীর্ঘ বছর ধরে বসবাস করে আসলেও টাকার অভাবে মেরামতের কথা চিন্তাও করতে পারেননি তিনি। ওই ভাঙ্গা ঘরে গ্রীস্মে চার পাশ দিয়ে বাতাস বওয়ায় শান্তিতে ঘুম আসলেও রাতে থাকেন পরিবার নিয়ে ভয়ে কখন প্রবেশ করবে চোর। তেমনি বর্ষা ও শীতে থাকেন আরো ভয়াবহ পরিস্তিতিতে। তখন ঘরের চারপাশে চট,পলিথিন দিয়ে আটকিয়ে ঘরে থাকতে হয় তাদের। তাই কোন মতে একটু ধার দেনা ঘরটি মেরামতের ব্যবস্থা করেন দোকানি সিদ্দিক মিয়া। কিন্তু তাতেই বেকে বসেন প্রতিবেশিরা। তারা জমির মালিকানা দাবি করে আব্দুল রব ,আব্দুল হাই,আব্দুল ওহাব,আরেফিন গংরা বাধা দেয়। এ নিয়ে সিদ্দিক মিয়া সমাজ পতি সহ আইনের কাছে গেলেও এখনও ভাঙ্গা ঘরটি মেরামতের কোন সুরহা পাচ্ছেননা তিনি।সিদ্দিকুর রহমান ওই গ্রামের মৃত আমির হোসেন সরদার এর বড় ছেলে।

 সর্বশেষ সিদ্দিকুর রহমান এ নিয়ে স্বরূপকাঠি প্রেসক্লাবে লিখিত আকারে একটি অভিযোগ করেন। ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমি নিরুপায় হয়ে থানায়ও একটি অভিযোগ দিয়েছি। নেছারাবাদ থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন উভয়  পক্ষের উপস্থিতিতে  ছিদ্দিকুর রহমানকে ঘর তোলার অনুমতি দিয়েছেন বলে তিনি জানান। 

সিদ্দিক মিয়া বলেন, থানার অনুনতি পেয়ে ঘর তোলার কাজ পূনরায় শুরু করলে অভিযুক্তরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মারমুখী অবস্থায় ঘর তুলতে পুনরায় বাধা দেয়। দুইমাস অতিবাহিত হলেও নিজের ঘরটি মেরামত করতে পারছিনা। এখন বর্ষায় পরিবার নিয়ে ঘরে থাকতে খুব দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাই আসু সমাধানের জন্য পুনরায় স্বরূপকাঠি পৌরসভার মেয়র বরাবর একটি লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল হাই,আরেফিন গংরা জানান,আমারা ওয়ারিশ সুত্রে  এবং ক্রয় সুত্রে জায়গা পাবো। তাই আগে আমাদের জায়গা বুঝিয়ে দিয়ে সিদ্দিক মিয়া ঘর সারতে বাধ্য। এর আগে তিনি ঘরে হাত দিতে পারবেননা।

স্বরূপকাঠ পৌর মেয়র গোলাম কবির জানান, জমি সংক্রান্ত জটিতলা থাকতেই পারে এবং একটা সেখানে শালিসি ব্যবস্থা চলমান। সিদ্দিক মিয়া পৈত্রিক ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া ৫০বছরের একটা পুরানো ঘরে থাকেন। কেহ জমির দাবি নিয়ে ওই ভাঙ্গা ঘর মেরামতে বাধা দিবে এটা খুবই অমানবিকতা। এটার পেছনে যারা বুদ্ধিদাতা ইন্ধনদাতা তারাই সমাজের কুচক্রী মহল। তিনি বলেন, যারা ঘর তুলতে বাধা দিয়েছে কাজটা মোটেই ঠিক করেনি।তারা যদি যায়গা পায় সেটা তাদের অন্য যায়গা থেকে বুঝিয়ে দেয়া হবে। তাই বলে ঘর তুলতে বাধা দেয়াটা অমানবিক কাজ করা হয়েছে।

নেছারাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) সোলায়মান হোসেন জানান, অভিযোগ পেয়ে মিমাংসার জন্য উভয়কেই ডেকেছিলাম। একটি পক্ষ সেটা মানেনা।এখন তারা যদি স্থানীয় ভাবে সমাধান করতে না পারেন, তাহলে মহামান্য আদালতের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।

আর//দৈনিক দেশথ্য//১৬ জুলাই-২০২২//