মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল : টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে জমি নিয়ে বিরোধে প্রকাশ্যে চাচা যুবদল নেতা ফজল হক (৫৫) কে পিটিয়ে হত্যা করেছে ভাতিজা পারভেজ হোসেন (৩৫) সহ তার সহযোগিরা। ফজলুল হককে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তার স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৪৫) ও পুত্র মনিরুজ্জামন (২৫) কেও পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে মা ও ছেলেকে উদ্ধার করে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
রোববার (২৭ এপ্রিল) মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের বংশীগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত ফজলুল হক ১৩ নং বাঁশতৈল ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি। দিনে দুপুরে যুবদলের নেতাকে পিটিয়ে হত্যার পর পরিবারে চলছে আহাজারি। স্বজনরা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারসহ ফাঁসির দাবী জানিয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবসি জানায়, বংশীয়নগর মৌজায় ৫৫ শতাংশ জমি নিয়ে ফজলুল হক ও তার ফুফা মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে ভাতিজা পারভেজ হোসেনের সঙ্গে বিরোধ ছিল। এই জমি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ এলাকার মাতাব্বরদের নিয়ে একাধিক শালিস হয়। শালিসে সমস্যা সমাধারন না হওয়ায় ফজলুলক আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে তিনি জমির চারপাশে কাটা তারের বেড়া নির্মান করেন ফজলুল হক।
এদিকে আজ রোববার পারভেজ ও তার সঙ্গে নিয়ে আসা ৩০-৪০ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী হাতে লাঠিসোঠা ও দেশীয় অস্্র নিয়ে জমির কাটা তারের বেড়া ও খুঁটি ভেঙ্গে ফেলে। ফজলুল হক বাঁধা দিতে এলে পারভেজের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তাকে পিটিয়ে ও ধারালো অস্্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। ফজলুল হককে বাঁচাতে তার স্ত্রী মরিয়ম বেগম ও ছেলে মনিরুজ্জামান এগিয়ে এলে তাদেরও পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে মা-ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
এ দিকে যুবদল নেতা ফজলুল হককে পিটিয়ে হত্যার মুল আসামী পারভেজ ও তার স্হযোগিদের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় শিশু বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি মো. আবুর কালাম আজাদ সিদ্দিকী, বাঁশতৈল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আজাহারুল ইসলাম আজাহার, সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ ও যুবদল নেতা মাসুদ পারভেজ পারভেজ।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ওসি মো. মোশারফ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছেন। জমি সংক্রান্ত বিরোধে ভাতিজার হাতে চাচা খুন হয়েছে বলে তারা অভিযোগ পেয়েছেন। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন। তদন্ত সাপেক্ষে আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Discussion about this post