মোঃ রাসেল,বরগুনা: বেল্লালের বয়স যখন ২ বছর তখন মারা যায় তার বাবা। এরপর থেকেই শুরু হয় তার সংগ্রামের জীবন, তার মা তাকে ও তার প্রতিবন্ধী বড় ভাইকে নিয়ে অন্যের বাসায় কাজ করে সংসার চালাত । থাকার মত যায়গা না থাকায় বরগুনার লাকুতলায় ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে থাকতেন বেলাল হোসেন (৩০)। তবে এবার প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের পাকা ঘর পেল বেলাল। এতে খুশি বেলাল ও তার পরিবারে লোকজন।
শারীরিক প্রতিবন্ধী বেলাল হোসেন বরগুনা সদর উপজেলার গোরিচন্নার খান জাহানের ছোট ছেলে। ছোটবেলায় বাবা মারা যাওয়ার পর মা ও বড় ভাইয়ের সাথে বরগুনা বাজারে বিভিন্ন রাস্তার পাশে রাত্রিযাপন করতেন বেল্লাল। এরপর ভিক্ষা করে মাসিক ১ হাজার টাকা ভাড়ায় একটি ঘর নিতে থাকা শুরু করেন তারা। ভিক্ষা করে যে টাকা পেত তা দিয়েই চলত তাদের সংসার।
বেলালের এবিষয়টি কতৃপক্ষের নজরে এলে তার জন্য জমিসহ একটি পাকা (টিনসেড) ঘর বরাদ্দ দেয়া হয় বরগুনা উপজেলা প্রশাসন থেকে। মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) আশ্রয়ন প্রকল্পের বরগুনা জেলায় ৪১১ টি ঘর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় ঘরের চাবি ও দলিল বেলালের কাছে হস্তান্তর করে জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান।
শারীরিক প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক বেলাল বলেন, মুই স্বপ্নেও ভাবি নাই মোর নিজের এউক্কা ঘর হইবে, হেও আবার পাকা ঘর। এহন আর মোগো অন্যের বাসায় থাহা লাগবে না। মোর নাহান আরও অনেকেই এইহানে ঘর পাইছে। মোরা সবাই মিলেমিশে থাকব সবাই।
বেলাল আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঈদ উপহার ঘর তো পাইছি। এবার একটা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হলেই মোর আর ভিক্ষা হরা লাগবে না। ভিক্ষা করতে গেলে মোরে ভিবিন্ন কতা কয় মানষে, যা হুনতে মোর খারাপ লাগে। লোকজন একছের খারাপ ব্যবহার করে। প্রধানমন্ত্রী থাকার জন্য ঘর দিয়েছে, আশা হরি হে কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা কইরা দেবেন।
বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় ঘর পেয়েছে জেলার ভিক্ষুক, ভূমিহীন, গৃহহীন ও তৃতীয় লিঙ্গের মোট ৪১১ জন সুবিধাভোগী। তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতার জন্য বিভিন্ন আয়বর্ধক প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এখানকার কারোরই আর্থিক অবাব অনটনে থাকতে হবে না বলে আমরা আশা করছি।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post