ইরফান উল্লাহ, ইবি প্রতিনিধি:
লেখক, দার্শনিক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, আমাদের দেশে এখনও প্রাথমিক স্তরে নিরক্ষরতা দূর হয়নি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করার জন্য লড়াই করি। অনেকের রক্তের বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হয়। কিন্তু প্রাইমারি স্কুল প্রতিষ্ঠা হয়নি সরকারের হাতে। এখনও সরকারি হিসেবেই আমাদের দেশের শতকরা ২৬ জন লোক নাম স্বাক্ষর করতে পারে না। এদেশে প্রাইমারি শিক্ষা এবং সেকেন্ডারি শিক্ষা বিস্তার হয়নি কিন্তু আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিযোগিতায় নেমেছি।
রোববার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে দুইদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ও কলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের বরণ করা হয়।
তিনি আরো বলেন, আমরা বাংলায় কথা বলছি কিন্তু বাংলা ভাষাকে নতুন করে প্রাণ দেওয়ার জন্য কিছু বলছি না। পৃথিবীর সব দেশের ভাষায় শিক্ষা এবং জ্ঞান বিস্তারের মাধ্যম হয়ে গেলে সব মানুষের শিক্ষিত হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আমাদের অর্থ জ্ঞানের অভাব ও বিদ্যা শিক্ষার জন্য বইপত্রের অভাবের কারণে দেশে এখনও শত শত মানুষ শিক্ষিত হতে পারেনি। তাদের জ্ঞানের আলো আমরা মানুষের কাছে নিয়ে যেতে পারিনি লিখিত রূপে।
ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের রক্তদান ও আত্মত্যাগ পূর্বের শাসনে স্বীকৃত হয়নি। যার অনিবার্য পরিণতি শুভকর হয়নি। যারা দেশত্যাগ করেছে বা আত্মগোপনে রয়েছে, তারা যখন প্রকাশ্যে ফিরে আসবে তখন নতুন ও আরও তীব্র অসহিষ্ণুতার রূপ নিতে পারে। শাসনব্যবস্থার পতন বা অবক্ষয়ের মূল কারণ হলো শাসকশ্রেণীর আত্মভ্রম। যখন তারা মনে করে তাদের প্রতিটি কর্মকাণ্ডই নিঃসন্দেহে সঠিক এবং অন্য মত ও চর্চা সবই ভুল তখন তার অবক্ষয় ঘটে।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন লেখক, গবেষক ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়াও বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এসময় সর্বোচ্চ নম্বরধারীদের পুরস্কার প্রদান, নবীনদের ফুল দিয়ে বরণ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। আলোচনা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।