ছবিটি দেখে মনে হচ্ছে এটি বোধ হয় কোন ধানের ক্ষেত যেখানে ধান রোপণ করা হয়েছে আর সেই ধান ক্ষেত হয়ে উঠেছে সুজলা-সুফলা। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এটি কোন ধানের ক্ষেত নয়- এটি একটি খেলার মাঠ।
রাজশাহী হাজী মুহম্মদ মুহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ। আর এ মাঠেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৫০ তম থানা স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ফুটবল খেলা। প্রতিযোগিতায় মোট ১৬ টি স্কুল অংশগ্রহণ করছে।
মাঠের চারিদিকে পানি থৈ থৈ করছে। কিছু অংশে পানি না থাকলেও সেখানে শুধু কাদা আর কাদা। খেলা হচ্ছে পানির মধ্যেই। বল পানিতে ভাসছে। সেই বলে লাথি মেরে পানি থেকে বল সরাতে পারছে না খেলোয়াড়েরা। বলে লাথি মারলে বল না সরে সমস্ত শরীর ভিজে যাচ্ছে খেলোয়াড়দের। কাদা পানির এই মাঠে রেফারিরা বুট পায়ে মাঠে নামতে পারছেন না। তাদেরকে নামতে হচ্ছে খালি পায়ে। রেফারিরা বলছেন, ‘এ মাঠ খেলার অনুপযোগী। এভাবে খেলা হয় না।’
খেলোয়াড়েরা বুট পায়ে মাঠে নামলেও অনেকেই বুট খুলে ফেলে খালি পায়েই খেলা চালিয়ে নিচ্ছেন। নির্ধারিত সময়ে গোল করতে পারছে না কোন পক্ষই। ফলে প্রায় প্রতিটি খেলাই গড়াচ্ছে টাইব্রেকারে। ২/৪ টি ছাড়া প্রতিটি খেলার ফলাফলই নির্ধারিত হচ্ছে টাইব্রেকারে। এতে একদিকে যেমন ক্ষিপ্ত খেলোয়াড়েরা অন্যদিকে তেমনি ক্ষিপ্ত ক্রীড়া শিক্ষকরাও। ক্ষিপ্ত মাঠে উপস্থিত গুটি কয়েক দর্শকও। কিন্তু এ ব্যাপারে মাথা ব্যথা নেই বোয়ালিয়া থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও বোয়ালিয়া থানা স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতির সম্পাদক জাহিদ হাসানের। মাঠ খেলার উপযোগী কিনা জানতে চাইলে তিনি প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলেন,’ আসলে সবার সঙ্গে আলোচনা করেই এই মাঠটি নির্বাচন করা হয়েছে।’ তিনি এর বেশি কিছু বলতে চাননি।
মাঠ প্রসঙ্গে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বিভিন্ন স্কুলের খেলোয়াড়েরা বলেছেন,’ এটি ফুটবল খেলার উপযোগী মাঠ না। এ মাঠে কোন দলই স্বাভাবিক ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শন করতে পারেনি। মাঠ খেলার উপযোগী না হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে খেলা নিষ্পত্তি হয়নি। ফলে টাইব্রেকারে যেতে হয়েছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’ ক্রীড়া শিক্ষকরাও একই ধরনের মত প্রকাশ করেছেন।
ক্রীড়া শিক্ষকরা বলেন, প্রতিযোগিতা উপলক্ষে প্রতিটি স্কুলকে ১৩৫০ টাকা করে দিতে হয়েছে। অথচ সু্যোগ সুবিধা বলতে কিছুই নেই। খেলার জন্য ফুটবল তাদেরকেই নিয়ে যেতে হয়েছে। কয়েকটি চেয়ার ছাড়া বসার কোন ব্যবস্থা নেই। প্রাথমিক চিকিৎসারও কোন ব্যবস্থা নেই। তাঁরা বলেন, এমনকি এক টুকরা বরফও রাখা হয়নি। নেই কোন পানিরও ব্যবস্থা। আর মাঠের তো এই অবস্থা ! বোয়ালিয়া থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস স্কুল ক্যাম্পাসেই অবস্থিত অথচ মাঠের এ দূরাবস্থার দিকে তাদের কোন নজর নেই বলে অভিযোগ ক্রীড়া শিক্ষকদের। বোয়ালিয়া থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জানান, আগামী ১২ সেপ্টেম্বর ফাইনাল খেলাও এ মাঠেই অনুষ্ঠিত হবে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ/

Discussion about this post