কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স রাখার দায়ে দিনে দুপুরে ভাংচুর করলেন চিকিৎসক সহ তার সঙ্গিরা। এই বিষয়ে ৬অক্টোবর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্সের মালিক আখিতারা বেগম।
এজাহার ও মালিক সূত্রে জানাযায়,গত ৫অক্টোবর দুপুরে ফুলবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে গাছের নিচে দুটি বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স রাখা ছিল। এসময় আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার বায়েজিদ মিয়া বাঁধনসহ তার সঙ্গিরা এসে বাঁশের লাঠি,লোহার রড,ছোরাসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঢাকা মেট্রো-ভ-১১-০৫০৪ এবং ঢাকা মেট্রো-ছ-১৪-০১৮৪ নম্বরের জনতা এ্যাম্বুলেন্স নামে দুটি বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স ভাংচুর করেন।
এতে করে প্রায় ৬লাখ ৭৫হাজার টাকার ক্ষতি সাধন হয় বলে এজাহারে বলা হয়। উপস্থিত বহিস্কৃত সরকারি এ্যাম্বুলেন্সের চালক একাব্বর আলীকে হুমকি-ধামকি দেয়া হয়। ভাংচুরের ঘটনা হাসপাতালের সিসি ক্যামেরাসহ স্থানীয় অনেকের কাছে ভিডিও ধারণ করা রয়েছে।
এই বিষয়ে একাব্বার আলী বলেন,আমার স্ত্রীর নামে দুটি বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। ৯৯৯ ফোন আসলে রোগী বহন করা হয়। ঘটনার দিন আমাকে ঠিকাদার মোজাফফর হোসেন ফোন দিয়ে বলেন বায়েজিদ স্যার আমাকে ডাকছেন। পরে আমি সেখানে গেলে বায়েজিদ স্যার আমাকে গাড়ি হাসপাতালের মধ্যে গাড়ি কেন রেখেছি,কার অনুমতি নিয়ে রেখেছি? এমন কথাবার্তা এক পর্যায় উত্তেজিত হয়ে তিনি আমাকে ধাক্কা মারেন। এ্যাম্বুলেন্সের বাম পাশের গ্লাস ঘুষি মেরে ভেঙ্গে ফেলেন।
এসময় প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে সবাই ছুটোছুটি করে দোকানে গিয়ে আশ্রয় নেই। কিন্তু স্যারের কিছু সঙ্গিরা এসময় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দুটি বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স ভেঙ্গে ফেলেন।
অভিযোগকারী আখিতারা বেগম বলেন,আমার স্বামীকে অন্যায় ভাবে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বহিস্কার করে রাখা হয়েছে।স্বামীর আয়ের উপরই ছেলে-মেয়ের পড়াশোনা খরচসহ ৫জনের সংসার চলতো। কিন্তু দেড় বছর থেকে বেতন বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবন কাটাতে হচ্ছে আমাদের। এরপর জমি বিক্রি এবং লোন করে পুরাতন দুটি গাড়ি কিনে এ্যাম্বুলেন্স হিসেবে ভাড়া খেটে সংসার চলছে।
একজন চিকিৎসক ব্যক্তিগত আক্রোশে গাড়ি দুটি ক্ষতি করার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি এর ক্ষতিপূরণ দাবী করেন তিনি।
এই বিষয়ে ডাক্তার বায়েজিদ মিয়া বাঁধন বলেন, আমি একাব্বর আলীকে ডেকে জিজ্ঞেস করি কার অনুমতিতে সেখানে এখানে গাড়ি রেখেছে? এমন প্রশ্নে সে আমাকে ধাক্কা মারেন। ফলে রাগান্বিত হয়ে আমি তার গাড়ির গ্লাসে ঘুষি মেরে জানালা ভেঙ্গে ফেলি। এসময় আমার হাত কেটে গেলে আমি জরুরি বিভাগে গিয়ে চিকিৎসা নেই। বিষয়টি উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।
পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সুমন কান্তি সাহা বলেন,এই বিষয়টি সিভিল সার্জন স্যার অবগত আছেন। আমি পূঁজার ছুটিতে রয়েছি। এখন অফিস খুললেই তদন্ত করে খতিয়ে দেখা হবে।
ফুলবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফজলুর রহমান বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স ভাংচুরের বিষয়ে থানা একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। বিষয়টি তদন্তাধিন রয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//অক্টোবর ০৭,২০২২//

Discussion about this post